আন্তর্জাতিক

১৯৭১ এ পরাজয় ‘রাজনৈতিক ব্যর্থতা’ আখ্যায় দ্বিমত বিলওয়াল ভুট্টোর

১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় ‘সামরিক ব্যর্থতা’ ছিল বলে পাল্টা দাবি করেছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সভাপতি।

পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) হাতছাড়া হওয়ার কারণ সামরিক নয় বরং তা ‘রাজনৈতিক ব্যর্থতা’ ছিল বলে উল্লেখ করার ঠিক এক সপ্তাহ পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলওয়াল ভুট্টো-জারদারি ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় ‘সামরিক ব্যর্থতা’ ছিল বলে পাল্টা দাবি করেছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) এ সভাপতি।

দেশব্যাপী পিপিপির ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে বুধবার করাচির নিশতার পার্কে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিলওয়াল তার এ মতামত তুলে ধরেন, খবর পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন ডটকমের।

১৯৭১ সালের পরাজয় ওই সময় জুলফিকার আলী ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন পিপিপির জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছিল এবং ভুট্টো ‘সফলভাবে’ সেগুলোর মোকাবেলা করেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।

সমাবেশে দেওয়া ভাষণে পিপিপির সভাপতি তার দলের ইতিহাস ও এর প্রতিষ্ঠাতা ভুট্টোর কৃতিত্ব তুলে ধরেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পরাজয়ের কথা উল্লেখ করে ওই বিপর্যয়ের পর তার দাদা ভুট্টো নেতৃত্ব গ্রহণ করে ‘সংহতি নষ্ট হওয়া’ পাকিস্তানকে ঐক্যবদ্ধ করে ‘হারানো গৌরব’ ফিরিয়ে আনেন বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, “যখন জুলফিকার আলী ভুট্টো সরকারের দায়িত্ব নেন ওই সময় জনগণ সব আশা হারিয়ে ভেঙ্গে পড়েছিল, কিন্তু তিনি জাতিকে পুনর্গঠিত করেন এবং জনগণের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনেন। শেষ পর্যন্ত আমাদের ৯০ হাজার সেনা দেশে ফিরে আসে যারা ‘সামরিক ব্যর্থতার’ কারণে যুদ্ধবন্দি হয়েছিল।

“ওই ৯০ হাজার সেনা তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত হয়। আর এর সবই সম্ভব হয় আশার রাজনীতি, ঐক্যের রাজনীতি ও অর্ন্তভুক্তিমূলক রাজনীতির কারণে।”

গত ২৩ নভেম্বর জেনারেল (অব.) বাজওয়া পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সদরদপ্তরে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে বলেছিলেন, “আমি রেকর্ড সংশোধন করতে চাই। প্রথম কথা হচ্ছে, পূর্ব পাকিস্তানের পতন কোনো সামরিক না, রাজনৈতিক ব্যর্থতা ছিল। সেখানে যুদ্ধরত সেনার সংখ্যা ৯২ হাজার ছিল না বরং মাত্র ৩৪ হাজার ছিল, বাকিরা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মী ছিলেন।

“এই ৩৪ হাজার সেনা ভারতের আড়াই লাখ সেনা এবং মুক্তি বাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দুই লাখ যোদ্ধার সঙ্গে লড়াই করেছে। এত বেশি প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমাদের সেনারা সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছে এবং দৃষ্টান্তমূলক ত্যাগ স্বীকার করেছে।”

বিলওয়াল নিজের ঘণ্টাব্যাপী ভাষণে পিপিপির ইতিহাস টেনে এনে বলেন, তার দলের দুই জন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নিজেদের ‘প্রাণোৎসর্গ’ করেছেন।

পাকিস্তানের গণতন্ত্রণকে দুর্বল করার ও ‘পুতুল নেতৃত্ব’ শক্তিশালী করার চেষ্টায় এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদেরও রেহাই দেওয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *