আন্তর্জাতিক

গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো দেওয়াকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাভানি। একই সঙ্গে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে ইসরাইলের তাবেদারি বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের এক বৈঠকে বক্তব্য দেওয়ার সময় ইরাভানি বলেন, ইসরাইলের অপরাধের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অটল’ সমর্থন এবং নিরাপত্তা পরিষদের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ই মূল কারণ।

কী ছিল প্রস্তাবে

বুধবার (২০ নভেম্বর) জাতিসংঘে গৃহীত প্রস্তাবে ‘তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ দাবি করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো এই প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেয়।

ইরাভানি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ মানবিক প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করেছে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তির জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।

ইরাভানি এ সময় সতর্ক করে বলেন, ইসরাইলের চলমান অপরাধগুলো ‘গভীরতর যুদ্ধের শঙ্কা তৈরি করছে, যা বৈশ্বিক প্রভাব ফেলতে পারে’।

তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ‘ইসরাইলের দায়মুক্তি বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার’ আহ্বান জানান।

ইসরাইলের অব্যাহত হামলা ও মানবিক সংকট

এদিকে অবরুদ্ধ গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে অব্যাহত ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৪,০৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ১,০৪,২৬৮-এরও বেশি।

অন্যদিকে লেবাননেও আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। সেখানেও সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি লেবানিজ নিহত এবং ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

ইরাভানি এ সময় সিরিয়ার অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘ইসরাইলি শাসন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে সিরিয়ার অবকাঠামো ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে একটি পরিকল্পিত নীতি অনুসরণ করছে’।

তিনি সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব বজায় রেখে একটি রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানান।

বিশ্ব রাজনীতি ও সমাধানের পথে বাধা

ইরানের মতে, ইসরাইলের অপরাধে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির মদদ মানবিক প্রচেষ্টা ও আঞ্চলিক শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা। সূত্র: মেহের নিউজ এজেন্সি

গাজায় যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাবে ফের ভেটো যুক্তরাষ্ট্রের

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।প্রস্তাবটি পরিষদের ১০টি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র দ্বারা প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং এতে অবিলম্বে, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪টি সদস্য রাষ্ট্র এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও, বুধবার যুক্তরাষ্ট্র এটি আটকে দেয়।

গত বছরের ৭ অক্টোবর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর থেকে এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অবরুদ্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র।

খসড়া প্রস্তাবে ৯টি ধারা ছিল। যার প্রথমটি সব পক্ষের দ্বারা অবিলম্বে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়। প্রস্তাবে গাজায় সব বন্দিদের মুক্তি, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা এবং বেসামরিক জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা প্রদানের কথা বলা হয়।

এতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, প্রস্তাব গ্রহণের পর তিন সপ্তাহের মধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিবকে এর বাস্তবায়ন নিয়ে একটি লিখিত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস গাজা থেকে ইসরাইলে আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে ইসরাইলি সেনাসহ প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫০ জনের বেশি মানুষকে বন্দি করে।

হামাস তাদের এই আক্রমণকে জেরুজালেমের পুরোনো শহরের আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের আগ্রাসী কার্যক্রমের প্রতিশোধ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

এর জবাবে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় পূর্ণ অবরোধ ঘোষণা করে এবং বিমান হামলা চালানো শুরু করে, যা লেবানন এবং সিরিয়ার কিছু অংশেও বিস্তৃত হয়। পরবর্তীতে গাজার ভেতরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,০৪,০০০ আহত হয়েছে। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। সূত্র: তাস

আন্তর্জাতিক

গাজা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টারের ওপর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি)। আইসিসির এমন রায়ের পর নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে নিজেদের সম্মতি জানিয়েছে ইতালি, নেদারল্যান্ড ও কানাডা।

গাজা যুদ্ধের দায়ে আইসিসির কাছে থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করবে কি-না ইতালি; এ বিষয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইডো ক্রসেটো বলেন, নেতানিয়াহু সফর করলে তার দেশ তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য থাকবে।

রাজনৈতিকভাবে আইসিসির এই সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলেও আদালত ওয়ারেন্ট জারি করায় ইতালি সেটি মানতে বাধ্য সেটাই একরকম জানালেন ক্রসেটো। তার মতে, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টকে হামাসের মতো একই স্তরে রাখা আইসিসি ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ ছিল। তবে যেহেতু গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে কাজেই নেতানিয়াহু বা গ্যালান্টার যদি ইতালিতে আসেন তবে তাদের গ্রেফতার করা হবে।

গাজায় গত ১৩ মাসে ৪৪ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। যার বেশিরভাগ মহিলা এবং শিশু। যার প্রেক্ষিতে আইসিসির এই রায়ের পর নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করতে সম্মত হয়েছে নেদারল্যান্ডস।

ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প জানিয়েছেন, নেদারল্যান্ডস নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করবে যদি তিনি ডাচ মাটিতে পা রাখেন। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে এক প্রশ্নের জবাবে ভেল্ডক্যাম্প বলেন, ‘সরকারের তরফ থেকে লাইন পরিষ্কার। আমরা আইসিসিকে সহযোগিতা করতে বাধ্য… আমরা রোম সংবিধি শতভাগ মেনে চলি।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল আইসিসির এই রায় নিয়ে জানিয়েছেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা একটি আইনি বিষয়। রাজনৈতিক বিষয় নয়। ইইউয়ের ২৭টি সদস্য দেশ এবং অন্যান্য স্বাক্ষরকারী দেশগুলি যা মানতে বাধ্য।

এদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তার দেশের সমর্থন ও আইসিসির ওয়ারেন্ট মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ যে প্রত্যেকেরই আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা উচিত। সংঘাতের শুরু থেকেই আমরা এটার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছি। আমরা আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে। আমরা আন্তর্জাতিক আদালতের সমস্ত বিধিবিধান ও রায় মেনে চলব।’

ইসরাইল আইসিসির এখতিয়ার স্বীকার না করলেও এবং নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ট আত্মসমর্পণ করবেন না বলে জানালেও তাদের চলাচলের সুযোগ সংকুচিত হয়ে গেছে।

আইসিসির প্রতিষ্ঠাতা চুক্তি রোম সংবিধির আওতায় ১২৪টি দেশ রয়েছে। আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে এসব দেশ বাধ্য।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী জোনাথন কুটাব বলেছেন, আইন তৈরি হয় এ ধারণার ওপর ভিত্তি করে যে মানুষ তা মেনে চলবে। যারা আইন অমান্য করে, তারা নিজেরাই অপরাধ করছে।

কুটাব আরও বলেন, ইসরাইলের মিত্র দেশগুলোর মধ্যে অনেকেই, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা, পরোয়ানা কার্যকরে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

নেতানিয়াহু এই অভিযোগগুলোকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেছেন।

আইসিসির পরোয়ানা জারির পর নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্ট যেসব দেশে গ্রেফতার হতে পারেন সেগুলো হলো:

আফগানিস্তান
আলবেনিয়া
অ্যান্ডোরা
অ্যান্টিগুয়া এন্ড বারবুডা
আর্জেন্টিনা
আর্মেনিয়া
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রিয়া
বাংলাদেশ
বার্বাডোজ
বেলজিয়াম
বেলিজ
বেনিন
বলিভিয়া
বসনিয়া এন্ড হার্জেগোবিনা
বতসোয়ানা
ব্রাজিল
বুলগেরিয়া
বুরকিনা ফাসো
ক্যাপভার্দে
কম্বোডিয়া
কানাডা
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক
চাদ
চিলি
কলম্বিয়া
কমোরোস
কঙ্গো
কুক আইল্যান্ড
কোস্টারিকা
আইভরিকোস্ট
ক্রোয়েশিয়া
সাইপ্রাস
চেক রিপাবলিক
ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো
ডেনমার্ক
জিবুতি
ডমিনিকা
ডমিনিকান রিপাবলিক
ইকুয়েডর
এল সালভেদর
এস্তোনিয়া
ফিজি
ফিনল্যান্ড
ফ্রান্স
গ্যাবন
গাম্বিয়া
জর্জিয়া
জার্মানি
ঘানা
গ্রিস
গ্রেনাডা
গুয়েতেমালা
গিনি
গায়ানা
হন্ডুরাস
হাঙ্গেরি
আইসল্যান্ড
আয়ারল্যান্ড
ইতালি
জাপান
জর্ডান
কেনিয়া
কিরিবাতি
লাটভিয়া
লেসোথো
লাইব্রেরিয়া
লিচেনস্টাইন
লিথুনিয়া
লুক্সেমবার্গ
মাদাগাস্কার
মালাবি
মালদ্বীপ
মালি
মাল্টা
মার্শাল আইল্যান্ড
মরিশাস
মেক্সিকো
মঙ্গোলিয়া
মন্টিনিগ্রো
নামিবিয়া
নাউরু
নেদারল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড
নাইজার
নাইজেরিয়া
নর্থ মেসিডোনিয়া
নরওয়ে
পানামা
প্যারাগুয়ে
পেরু
পোল্যান্ড
পর্তুগাল
দক্ষিণ কোরিয়া
রিপাবলিক অব মালদ্বীপ
রোমানিয়া
সেইন্ট কিটস এন্ড নেভিস
সেইন্ট লুসিয়া
সেইন্ট ভিনসেন্ট এন্ড দ্য গ্রেনাডাইন্স
সামোয়া
সান মেরিনো
সেনেগাল
সার্বিয়া
সিচিলিস
সিয়েরালিওন
স্লোভাকিয়া
স্লোভেনিয়া
সাউথ আফ্রিকা
স্পেন
ফিলিস্তিন
সুরিনাম
সুইডেন
সুইজারল্যান্ড
তাঞ্জানিয়া
তাজিকিস্তান
তিমুর লিস্ত
ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো
তিউনিশিয়া
উগান্ডা
যুক্তরাজ্য
উরুগুয়ে
ভানুয়াতু
ভেনেজুয়েলা
জাম্বিয়া

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ব্রিটিশ আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বলেছেন, আসন্ন বিচারপ্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং অতীতের দ্বন্দ্বের প্রতিশোধ গ্রহণের সময় ও সুযোগ নেই। এখানে প্রসিকিউটোরিয়াল যেসব সিদ্ধান্ত হবে, সেগুলো অবশ্যই প্রতিহিংসা বা রাজনৈতিক সুবিধার ভিত্তিতে নয়, পুরোপুরি তথ্য–প্রমাণের ভিত্তিতে হবে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনবিশেষজ্ঞ টবি ক্যাডম্যান বলেন, ‘অপরাধের সংজ্ঞা যথাযথভাবে নির্ধারণ এবং সুষ্ঠু বিচারের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য ট্রাইব্যুনাল যে আইন ও বিধি দ্বারা পরিচালিত হয়—উভয় ক্ষেত্রে ‘উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন’ আনা দরকার। কী কী পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, সে বিষয়ে বলিষ্ঠ পরামর্শ দিতে তিনি পিছপা হবেন না।

গত সোমবার নিয়োগ পেয়েছেন টবি ক্যাডম্যান। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩–এর সংশোধনীর খসড়া দেখার ও পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ট্রাইব্যুনাল ১৩ জন রাজনীতিবিদ এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ৮ জন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। গত ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিক্ষোভকারী ও অন্যদের নিহত হওয়ার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগের মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

জুলাই–আগস্টের ওই তিন সপ্তাহে সহিংসতায় ১ হাজার ৫০০ জনের মতো নিহত হওয়ার খবর প্রকাশ হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়নি।

অন্তর্বর্তী সরকারের আইনবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, (ট্রাইব্যুনালের) প্রসিকিউশন টিমকে সহায়তা করতে ক্যাডম্যানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে প্রসিকিউশনকে শক্তিশালী করতে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আসামিপক্ষেরও বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার অধিকার রয়েছে।

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২০১১ সাল থেকে অনুষ্ঠিত বিচারকাজের কঠোর সমালোচনা করে ক্যাডম্যান বাংলাদেশে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তাকে বাংলাদেশে এসে আইনি লড়াইয়ে যুক্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। ওই বিচারে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য অভিযুক্তদের বিচার ও সাজার সম্মুখীন করা হয়।

কথা বলার সময় টবি ক্যাডম্যান অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘(ট্রাইব্যুনালের) বিচারকাজে এখন সবকিছু থাকবে, যা আগে ছিল না। বিবাদীদের অবশ্যই সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার সব ধরনের নিশ্চয়তা দিতে হবে, ইতিপূর্বে বিবাদীরা যা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বিচার অবশ্যই ন্যায়বিচারের স্বার্থে হতে হবে, প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য নয়।’

ক্যাডম্যান উল্লেখ করেন, ‘যদিও এটা (বিচারকাজ) যথাযথভাবে ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া করা অনেক কঠিন, অধিকতর সময়সাপেক্ষ ও আরও বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে; কিন্তু এই বিচার করার এটাই একমাত্র পথ। বিচার হতে হবে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের মাধ্যমে এবং অবশ্যই স্বীকৃত পন্থার অধীনে।’

ক্যাডম্যান বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে এই কাজটা যথাযথভাবে হওয়া এবং প্রসিকিউটররা তাদের কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা রাখবেন। এটা আমার অঙ্গীকার। এতে (বিচারকাজ প্রভাবিত করা) আমার কোনো স্বার্থ নেই এবং ব্যক্তিগত অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যে রাজনৈতিক দল বা অন্য যেকোনো স্বার্থসংশ্লিষ্টই হোন না কেন, তিনি যেন যথাযথ ও সুষ্ঠু বিচার পান, আমি সেটি নিশ্চিত করব।’

গত সেপ্টেম্বরে এ ব্রিটিশ আইনজীবী বাংলাদেশ সফর করেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, আইন উপদেষ্টা ও অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাদের সঙ্গে আলাপে ‘বিচার বিভাগ সংস্কার ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিনি আলোচনা করেন’ বলে জানান ক্যাডম্যান।

টবি ক্যাডম্যান বলেন, ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রবল আকাঙ্ক্ষা আমাকে প্রভাবিত করেছে। আন্তর্জাতিক মানবিক ও মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘনকারী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা এবং তা ঠিকভাবে করার দৃঢ় আকাঙ্ক্ষাও প্রভাবিত করেছে আমাকে।’

আন্তর্জাতিক

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী। আমরাও একটি ব্যবসায়ী পার্টনার চাই। আমরা কোনো সংকট থেকে উত্তরণের জন্য হাত পাতছি না।

টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নানা ইস্যুতে মত প্রকাশ করেছেন ড. ইউনূস। এ সময় তিনি এ কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৩১ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে বাংলাদেশের হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা করেছিলেন। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশ এখন সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে।

টাইমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড. ইউনূস এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী যে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে পারবেন।

ড. ইউনূস আরও বলেন, আওয়ামী লীগের যারা হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। বিচারে অপরাধী প্রমাণিত না হলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার পাবে। যারা অপরাধী নয় তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অন্যদের মতোই স্বাধীন। তাদের (আওয়ামী লীগ) বিরুদ্ধে রাজনীতির মাঠে লড়তে হবে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এ সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, ঢাকার রাস্তার প্রতিটা দেওয়ালে প্রকাশ পেয়েছে আগস্টে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের মাধ্যমে বিদায় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের উদযাপন। মাইলের পর মাইল দেওয়ালজুড়ে আঁকা হয়েছে বিদায়ী এই শাসকের কার্টুন।

দেয়ালচিত্র নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনকে তিনি বলেন, শব্দগুলো খুবই বিস্ফোরক, এই তরুণ মস্তিষ্কগুলো অনেক ভাবনা, উচ্চাকাঙ্খা ও আশা-আকাঙ্খায় ভরপুর। তারা তাদের ভবিষ্যতকে এ চিত্রগুলোতে ফুটিয়ে তুলেছে। এটি বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অর্জন।

সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আমাকে সরকারের দায়িত্ব নিতে বলায় শুরুতে আমি তা এড়ানোর চেষ্টা করেছিলাম। আমি বলেছিলাম, ‘কাউকে খুঁজে নাও।’ কিন্তু পরে বললাম, ‘ঠিক আছে, তোমরা তোমাদের জীবন দিয়েছো, তোমার বন্ধুরাও তাদের জীবন দিয়েছে, তাই আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই ও আগস্টে আন্দোলন চলাকালীন বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আগের সরকার সম্পূর্ণ নিপীড়নের পরিবেশ তৈরি করেছিল। হত্যা, গুম ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ধ্বংস সাধন- এটি একটি ফ্যাসিবাদী শাসন ছিল।

ড. ইউনূস দাবি করেন, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে সাড়ে ৩ হাজার জনকে বিচারবহির্ভূতভাবে গুম করা হয়েছে।

তবে অনেক ক্ষেত্রে সংস্কারের ধীরগতি সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে। তিনি দেশটিকে পুনর্গঠিত করার অঙ্গীকার জানিয়ে বলেন, দেশে সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে। যেখানে নির্বাচনি ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি প্রশাসন এবং জাতীয় সংবিধানকে কেন্দ্র করে কাজ করা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আওয়ামী লীগের দেশের বাইরে পাচার করা হাজার কোটি ডলার পুনরুদ্ধার করবেন।

বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা না করেই। এটি একটি খারাপ এবং স্বৈরাচারী সরকারের লক্ষণ।

আন্তর্জাতিক

আবারও শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হরিনি আমারাসুরিয়া।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমার দিশানায়েকে আমারাসুরিয়াকে নিয়োগ দেন।

আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রবীণ রাজনীতিক বিজিথা হেরাথকেও নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা করা হয়।

২৪ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আমারাসুরিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেন দিশানায়েকে।

আমারাসুরিয়া তার দলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী এবং সিরিমাভো বন্দরনায়েকে ও চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গার পর তৃতীয় নারী, যিনি লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। খবর ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের।

শ্রীলঙ্কার সাধারণ নির্বাচনে ২শ ২৯ আসনের মধ্যে অনূঢ়ার বামপন্থি জোট ১শ ৫৯টি আসনে জয় লাভ করেন। আজ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী ছাড়া বাকি মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেন দিশানায়েকে।

সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজেই সামলাচ্ছেন দিশানায়েকে এবং আজ নিজেই জানিয়েছেন এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে তিনি থাকবেন।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেন প্রথমবারের মতো রাশিয়ার ভূ–খণ্ডে হামলা করেছে। মঙ্গলবার এ হামলা হয়েছে বলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। খবর বিবিসির।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেন মঙ্গলবার সকালে আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) ব্যবহার করে রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক এলাকায় হামলা করেছে। পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে এবং একটি ধ্বংস করা হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষের কারণে ওই এলাকায় একটি সামরিক স্থাপনায় আগুন ধরেছে বলে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানোর কথা ইউক্রেনের গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো ইউক্রেন সরকারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে এই হামলা চালানো হয়েছে। একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়ার পর আগুন ধরে যায়। দ্রুত ওই আগুন নেভানো হয়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।

এর আগে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করে যে, তারা রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক এলাকায় একটি গোলাবারুদের গুদামে হামলা চালিয়েছে। তবে এই হামলায় এটিএসিএমএস ব্যবহার করা হয়েছে কি না সেটা তারা নিশ্চিত করেনি।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটারের মতো দূরে কারাচেভ শহরের কাছে একটি ডিপোতে ওই হামলা হয়েছে। হামলার পর ১২টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

সামরিক বাহিনীর সূত্রের বরাত দিয়ে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কোনো সিঙ্গেল ইস্যু বা এজেন্ডায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এ সম্পর্ক বহুমুখী ও বিস্তৃত। দুই দেশ একে অপরের প্রতি আগের চেয়ে বেশি নির্ভরশীল।

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা রোববার (১৬ নভেম্বর) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৪’- শীর্ষক সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য দেন প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে খুবই গঠনমূলক সম্পর্ক রয়েছে। আমরা একে অপরের প্রতি পারস্পরিকভাবে নির্ভরশীল।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে হাইকমিশনার জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করে এবং বিশ্বাস করে যে এ দুই দেশের শান্তি, নিরাপত্তা, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

তিনি বহুমুখী সম্পর্কের প্রতিফলন হিসেবে বাণিজ্য, পরিবহন ও জ্বালানি সংযোগ এবং মানুষে-মানুষে সম্পৃক্ততার ক্রমাগত অগ্রগতির ওপর জোর দেন, যেখানে রাজনৈতিক পরিবর্তন নির্বিশেষে দুই দেশের পারস্পরিক নির্ভরতা ও দ্বিপাক্ষিক মঙ্গলের বাস্তবতা নিজেকে পুনর্ব্যক্ত করতে থাকবে।

ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সূচনা এবং পেট্রাপোল-বেনাপোল সমন্বিত চেকপোস্টের অবকাঠামো বিবর্ধনকে দ্বিপাক্ষিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে অব্যাহত অগ্রগতির উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন হাইকমিশনার।

ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতাকে তিনি বিম্‌সটেকের মতো কাঠামোর অধীনে আঞ্চলিক একত্রীকরণের পরিকল্পনার ক্ষেত্রে একটি নোঙর হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স দুই দেশের সম্পর্ককে গভীর করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। আমাদের সম্পর্ক আগের চেয়েও বেশি একে অপরের ওপর নির্ভরশীল।

হাইকমিশনার শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য দুই দেশের যৌথ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে এবং অংশীদারত্বের মাধ্যমে উভয় পক্ষের সাধারণ জনগণের উপকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

শনিবার বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ বছরের সম্মেলনে বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশ থেকে ২০০ জনের বেশি আলোচক, ৩০০ জন প্রতিনিধি এবং ৮০০ জন অংশগ্রহণকারী যোগ দেন।

আন্তর্জাতিক

সরকার লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে চাইলে ব্রিটেন সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট।

রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।

ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে। এছাড়া বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরাতে ড. ইউনূস রূপরেখা ঘোষণা করবেন বলে আশা ব্রিটেনের। সেইসঙ্গে রাজনীতিতে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রত্যাশা করে যুক্তরাজ্য।

২০০৭ সালের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আটক হয়েছিলেন তারেক রহমান।

পরে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডন চলে যান। এরপর লন্ডনে থেকে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ড দেওয়ার পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তারেক। এরপর লন্ডন থেকেই তিনি দল পরিচালনা করছেন।

পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলার জন্য তারেক রহমানকে দায়ী করে থাকে এবং আদালতেও তার শাস্তি হয়। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারেরও ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্ষমতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। আওয়ামী শাসনের অবসান ঘটনা পর থেকেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার গুঞ্জন শোনা যায়।

ড. ইউনূসের কাছে কী আশা যুক্তরাজ্যের, জানালেন মন্ত্রী ক্যাথরিন

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটা রূপরেখা ঘোষণা করবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন যুক্তরাজ্যের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট।

রোববার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা সফররত ক্যাথরিন ওয়েস্ট পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এমন প্রত্যাশার কথা জানান।

ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সব দলের সমান অংশগ্রহণ চায় যুক্তরাজ্য।

লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফেরানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিষয়ে কথা হয়নি। তবে সরকার চাইলে সহায়তা করতে প্রস্তুত ব্রিটেন।

তিনি আরও জানান, সামরিক জান্তার দমনপীড়নে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আরও ১০ মিলিয়ন পাউন্ড দেবে যুক্তরাজ্য।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুদিনের সফরে ঢাকায় আসেন। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাজ্য সরকারের কোনো জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধির এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।

যুক্তরাজ্যের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট দুই দিনের সফরে গতকাল শনিবার ঢাকায় আসেন।

গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাজ্য সরকারের কোনো জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধির এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরকালে প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।

ক্যাথরিন ওয়েস্ট যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরে সরাসরি চীন, উত্তর-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর দেখভাল করেন। তাছাড়া ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, বিশেষত রফতানি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক কূটনীতি, প্রযুক্তির বিস্তৃতি ও প্রয়োগের বিষয়গুলো তদারক করে থাকেন।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর যে কয়েকটি নাম আলোচনায় তাম্মধ্যে তুলসি গ্যাবার্ড অন্যতম।

দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরবর্তী প্রধান হিসেবে এই নারীকে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প।

যথাযথ কারণেই কৌতূহল বেড়েছে গোটা বিশ্বের। কে এই তুলসি গ্যাবার্ড? যার হাতে গোয়েন্দা সংস্থাকে ন্যস্ত করেছেন ট্রাম্প।
কেননা, গোয়েন্দা বিষয়ক গভীর অভিজ্ঞতা নেই তুলসির। তারপরও সংস্থাটির প্রধান করা হলো তাকে।

তুলসি গ্যাবার্ড একজন কট্টর ট্রাম্প সমর্থক, তা জানা সবার। হাওয়াই রাজ্যের সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান তিনি।

নাম ভারতীয় হলেও ভারতের সঙ্গে তুলসির বংশগত কোনো যোগসূত্র নেই। তিনি মূলত আমেরিকান হিন্দু। মার্কিন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টিভে প্রথম হিন্দুও তিনি।

তুলসির জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়ায়। বর্তমানে তার বয়স ৪৩ বছর। তিনি ২১ বছর বয়স থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়। ওই সময় হাওয়াই হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪২তম জেলা থেকে সদস্য নির্বাচিত হন।

তুলসি গ্যাবার্ড হাওয়াইয়ের চারবারের কংগ্রেস সদস্য। হাওয়াইয়ে তুলসির এই জনপ্রিয়তার কারণ তার বাবা বাবা মাইক গ্যাবার্ড । হাওয়াই স্টেট সিনেটর ছিলেন মাইক, যিনি রিপাবলিকান থেকে ডেমোক্র্যাটে যোগদান করেন।

২০১২ সালে ১১৩ তম কংগ্রেসে রিপাবলিকান কাওভিকা ক্রাউলিকে হারিয়ে ইউএস হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে আসন জিতেন তুলসি। তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫০৩ ভোট (৮০.৬ শতাংশ) এবং ক্রাউলি পেয়েছিলেন ৪০ হাজার ৭০৭ ভোট (১৯.৪ শতাংশ)।

এর মাধ্যমে প্রথম হিন্দু হিসেবে কংগ্রেসে নির্বাচিত হন তুলসি। শুধু তাই নয়; প্রথম আমেরিকান সামোয়ান হিসেবে কংগ্রেসের সদস্য হন।

তুলসি সনাতন ধর্মাবলম্বী। প্রথম শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভগবৎ গীতার ওপর শপথ নেন তিনি। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করার ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাসী। ’

তুলসি ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। তবে এর দুই বছর পরই তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ত্যাগ করেন। ডেমোক্র্যাটদের ওপর ‘অভিজাত যুদ্ধে আগ্রহী গোষ্ঠী’ অভিযোগ এনে তিনি দল ছাড়েন। সেসময় তিনি দাবি করেছিলেন, ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে ‘উইওক’ মতবাদীরা নিয়ন্ত্রণ করছে।

এরপর তুলসি ২০২২ সালে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিবিরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন জানান এবং রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।

সবমিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা, বিনামূল্যে কলেজ টিউশন এবং বন্দুক নিয়ন্ত্রণের মতো উদারনৈতিক কারণগুলো তুলসীর ভূমিকা রয়েছে।

তুলসি গ্যাবার্ডের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। তবে আর্মি রিজার্ভের লেফটেন্যান্ট কর্নেল তিনি। তিনি ইরাকে সামরিক সেবা দিয়েছেন।

আর সেই তুলসিকেই কিনা জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান বেছে নিলেন ট্রাম্প!

তাকে নির্বাচন করার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘দুই দশকের বেশি সময় ধরে তুলসি আমেরিকানের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। একজন সাবেক ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তিনি উভয় দলেই ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন, এখন তিনি গর্বিত রিপাবলিকান!’

জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে তুলসি গ্যাবার্ড ১৮টি গুপ্তচর সংস্থার নেতৃত্ব দেবেন এবং ৭৬ বিলিয়ন ডলারের বাজেট তদারকি করবেন।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা যেমন সিআইএ, এফবিআই এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ) থাকবে তার তত্ত্বাবধানে।

এদিকে এমন পদে তুলসির মনোনয়ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোনো মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

তার নিয়োগ বিষয়ে এক্স-এ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির ডেমোক্র্যাটিক ভার্জিনিয়া কংগ্রেসওম্যান সদস্য অ্যাবিগেল স্প্যানবার্গার বলেছেন, ‘জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে তুলসি গ্যাবার্ডের মনোনয়নে আমি হতবাক। কারণ, তিনি শুধু অযোগ্যই নন এই পদের জন্য প্রস্তুতও নন। বাশার-আল-আসাদ এবং ভ্লাদিমির পুতিনের মতো স্বৈরশাসকদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও সহযোগীপ্রবণ।

আন্তর্জাতিক

স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এই প্রথম পণ্যবাহী কোনো জাহাজ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে এসেছে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাহাজটি করাচি থেকে রওনা হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে।

ঘটনাটিকে দুই দেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগ বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশন।

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের নৌবাণিজ্য পুনর্স্থাপনে চিন্তিত ভারত হয়েছে বলা হয় পাকিস্তান হাইকমিশনের বিবৃতিতে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ এ ঘটনাকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে একটি প্রধান পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন।

তবে এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দিল্লি।

আজ শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে এ ধরনের সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের কাছাকাছি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারতের নিরাপত্তা সংস্থার একটি সূত্র বলেছে, গত বছর মোংলা বন্দরের একটি টার্মিনালের অপারেটিং অধিকার সুরক্ষিত করে চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগত জয়লাভ করেছিল ভারত। কিন্তু এখন, পাকিস্তান চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশাধিকার পেয়েছে। দুটি বন্দরের সমুদ্রপথে এখন পাকিস্তানি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেবে। বিষয়টি অবশ্যই এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে কারণ, মিয়ানমার চট্টগ্রামের খুব কাছাকাছি ।

বুধবার করাচির ওই জাহাজটি তিনশর বেশি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ে।

জাহাজ ভেড়ানো সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ।

এ সময় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এই নতুন রুটটি পণ্য পরিবহনের চেইনকে স্ট্রিমলাইন করবে, ট্রানজিট সময় কমিয়ে দেবে এবং উভয় দেশের জন্য নতুন ব্যবসার সুযোগ খুলে দেবে।

টেলিগ্রামকে এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও মোংলা বাংলাদেশের দুটি প্রধান সমুদ্র বন্দর এবং উভয়ই পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ বাইরে রয়েছে। সিঙ্গাপুর বা কলম্বোতে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য হতো। এখন যেহেতু পাকিস্তানি জাহাজগুলি সরাসরি চট্টগ্রামে আসবে, ভারতের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির জন্য বাংলাদেশে নিষিদ্ধ পণ্য পাঠানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারবেন না।

চট্টগ্রামে ২০০৪ সালের অস্ত্র উদ্ধারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় অবৈধ অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা এখনও সবচেয়ে বড় ঘটনা সেটি।

এদিকে পাকিস্তানের জাহাজ বাংলাদেশে নোঙরের বিষয়টিকে ঐতিহাসিক বলা হচ্ছে।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের নতুন শাসনব্যবস্থা সরাসরি সমুদ্র সংযোগকে স্বাগত জানায়। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধিরও আশা করে কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে বাণিজ্যের পরিমাণ ৮০০ মিলিয়নের নিচে নেমে গিয়েছিল।