আন্তর্জাতিক

একের পর এক মার্কিন শুল্কের প্রতিবাদে এবার পাল্টা পদক্ষেপ নিল ভারত। যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন অস্ত্র ও বিমান কেনার পরিকল্পনা স্থগিত করেছে তারা।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রজনাথ সিং আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ওয়াশিংটনে গিয়ে অস্ত্র ও বিমান কেনার বিষয়টি ঘোষণা করার কথা ছিল, কিন্তু সেই সফর বাতিল করা হয়েছে।

সর্বশেষ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ‘জরিমানা’ হিসেবে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ভারতীয় পণ্যে শুল্কের মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ।

ভারত জানিয়েছে, শুল্ক নিয়ে পরিষ্কার কোনো সুরাহা না হলে নতুন অস্ত্র ও বিমান কেনা হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৬টি বোয়িং পি৮আই বিমান, স্ট্রাইকার যুদ্ধযান, জাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র কেনার কথা ছিল ভারতের।

আন্তর্জাতিক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিএমপি’র মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বাসস’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আন্তর্জাতিক

ভারতীয় পণ্যের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিনি দেশের কৃষকদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবেন না, এমনকি যদি তাকে এর জন্য চড়া মূল্যও দিতে হয়।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দিল্লিতে এক সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন মোদি। খবর এনডিটিভির।

ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকদের স্বার্থ আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ভারত তার কৃষক, পশুপালক এবং জেলেদের স্বার্থের সঙ্গে কখনও আপস করবে না। আমি জানি যে এর জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বিশাল মূল্য দিতে হবে, তবে আমি প্রস্তুত। ভারত দেশের কৃষক, জেলে এবং পশুপালকদের স্বার্থে প্রস্তুত।’

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রী মোদি এসব কথা বলেন।

ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ধরনের কৃষি পণ্য রপ্তানি করে এবং ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে যেসব ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার মধ্যে কৃষি একটি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার নয়াদিল্লির রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রাখার জন্য জরিমানা হিসেবে ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। এর আগে ২০ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল।

এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা যেকোনো মার্কিন বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর আরোপিত সর্বোচ্চ শুল্কের মধ্যে একটি।

এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, রাশিয়ান তেল আমদানির কারণে ভারতকে লক্ষ্য করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ‘অন্যায়’, ও ‘অযৌক্তিক’।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ‘আমরা ইতোমধ্যেই এই বিষয়গুলোতে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, আমাদের আমদানি বাজারের কারণগুলোর ওপর ভিত্তি করে ভারতের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। তাই এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তার জন্য ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা বেছে নিয়েছে।’

এতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, ভারত তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।

আন্তর্জাতিক

মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। গত বছরের ৩১ মে’র মধ্যে যারা যেতে পারেননি, তাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত কর্মীদের এবার কনস্ট্রাকশন এবং ট্যুরিজম সেক্টরে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।

শুক্রবার (১ আগস্ট) কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে হাইকমিশন জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মীদের আনায়নের লক্ষ্যে ডিমান্ড লেটার বা চাহিদাপত্র সত্যায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এজন্য ফরেন ওয়ার্কার্স সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এফডব্লিউসিএমএস) অনলাইন পোর্টালে চেকলিস্ট অনুযায়ী নির্ধারিত সব তথ্যাদি দাখিল করতে হবে।

দাখিলকৃত ডকুমেন্টেসের মধ্যে রয়েছে, কোম্পানির পক্ষ থেকে অনুমোদনপত্র, যা ম্যানেজার পর্যায়ের বা তদূর্ধ্ব কোনো কর্মকর্তার হতে হবে; বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমাকৃত সত্যায়ন ফি-এর মূল ব্যাংক স্লিপ; ৪-৫ জন কর্মীর সর্বশেষ বেতন স্লিপ; এবং কোম্পানির প্রোফাইল, যার মধ্যে কোম্পানির প্রোফাইল, বর্তমান কর্মীর সংখ্যা (স্থানীয় ও বিদেশি), প্রয়োজনে ২/৩ জন বাংলাদেশি কর্মীর মোবাইল নম্বর এবং বিগত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট থাকতে হবে। এবং ব্যাংক ব্যালান্সও যথাযথ হতে হবে—যেমন ১০০ জন কর্মীর জন্য ন্যূনতম দুই লাখ মালয়েশিয়ান রিংগিত ব্যালান্স থাকা প্রয়োজন।

এছাড়া, ফরেন ওয়ার্কার্স কম্পেনসেশন স্কিম (সকসো) এবং ফরেন ওয়ার্কার্স হাসপাতালাইজেশন ও সার্জিকাল স্কিমের নমুনা দলিল, কর্মীদের আবাসন সংক্রান্ত জেটিকে সার্টিফিকেট, নির্মাণ চুক্তিপত্র, অঙ্গীকারনামা বা গ্যারান্টি লেটার, ডিরেক্টরের স্বাক্ষরিত ডিমান্ড লেটার, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি, নিয়োগপত্র, বোয়েসেল ও নিয়োগকারীর মধ্যে চুক্তিপত্র এবং মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত কোটার অনুমোদনপত্রও দাখিল করতে হবে।

পাশাপাশি, অনলাইনে দাখিলকৃত তথ্যাদির মূল কপি এবং এক সেট ফটোকপি বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।

এদিকে, দীর্ঘ অনিশ্চয়তা ও প্রশাসনিক জটিলতার পর মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য শর্তসাপেক্ষে পুনরায় উন্মুক্ত হওয়ার আভাস মিলেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের মধ্যে নতুন সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুযায়ী নির্ধারিত কোটা, খরচ নিয়ন্ত্রণ ও নিয়োগ পদ্ধতি স্বচ্ছ রাখার শর্তে কর্মী পাঠানো আবারও শুরু হতে পারে।

সূত্র জানায়, মালয়েশিয়া সরকার ‘সিলেক্টভি রিক্রুটমেন্ট’ মডেল চালু করতে চায়, যেখানে কেবল নিবন্ধিত এবং সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত এজেন্সির মাধ্যমেই কর্মী পাঠানো যাবে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়, যাতে বাংলাদেশ সরকার কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করেছে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)-এর একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, ‘আমরা চাই একটি স্বচ্ছ ও বৈধ প্রক্রিয়ায় অভিবাসন হোক, যেখানে দালাল চক্রের কোনো সুযোগ থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘কর্মী প্রতি সর্বোচ্চ খরচ নির্ধারণ, মেডিকেল ও ভিসা প্রসেসিং সময় নির্ধারণ এবং নিয়োগকারী কোম্পানির বাস্তব যাচাই বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব বাংলাদেশ দিয়েছে। ‘

বাংলাদেশ সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় কাজ করতে ইচ্ছুক তার শ্রমিকদের শোষণের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে। দু’সপ্তাহ আগে বাংলাদেশি সরকার এবং মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের মধ্যে কুয়ালালামপুরে একটি বৈঠকের সময় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ধরে রাখতে হলে শুধু চুক্তি নয়, বাস্তবায়ন পর্যায়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় প্রায় ৫ লাখ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও নানা অনিয়ম ও কোটা বাণিজ্যের অভিযোগে তা মাঝপথেই স্থগিত হয়ে যায়।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ৩৫ শতাশং থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেছেন। এরপরই আজ ১ আগস্ট ভারতীয় টেক্সটাইল কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য বড় ধরনের পতনের মুখে পড়েছে। গার্মেন্টস খাতে ভারতের প্রধান প্রতিযোগী বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে চলে গেল।

বাংলাদেশ আগে থেকেই তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানির অন্যতম বড় দেশ। নতুন এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় পোশাক প্রস্তুতকারকদের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই ঘোষণার পরপরই ভারতীয় টেক্সটাইল খাতের একাধিক কোম্পানির শেয়ার দামে উল্লেখযোগ্য পতন ঘটে। আপস্টকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের কেপিআর মিলসের শেয়ার ৫ শতাংশ, ওয়েলসপুন লিভিংয়ের শেয়ার ২ শতাংশ, অলোক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার ০ দশমিক ৮ শতাংশ, পিয়ার্ল গ্লোবালের শেয়ার ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, গোকূলদাস এক্সপোর্টের শেয়ার ২ দশমিক ৬ শতাংশ, কিটেক্স গার্মেন্টসের শেয়ার ৩ দশমিক ২১ শতাংশ এবং বর্ধমান টেক্সটাইলের শেয়ার ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রকাশিত আমদানি শুল্ক তালিকা অনুসারে, ৫০টিরও বেশি দেশের ওপর শুল্ক কমিয়েছে ট্রাম্প। এতে রয়েছে বাংলাদেশের পাশাপাশি পাকিস্তান (১৯ শতাংশ), ভিয়েতনাম (২০ শতাংশ) এবং মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো আসিয়ান দেশগুলোতে ১৯ শতাংশ। তবে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করেছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতিকে ঘিরে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষ করে শ্রমনির্ভর খাত যেমন টেক্সটাইল ও উচ্চমূল্যের ইলেকট্রনিকস পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রই ভারতের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য, আর সেখানে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এখন আরো কঠিন হয়ে পড়ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি ভারত শিগগিরই আরো সুবিধাজনক বাণিজ্য চুক্তি না করে, তাহলে রপ্তানিকারকরা মার্কেটে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে হিমশিম খাবে।

আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল।

সেই থেকে এ পর্যন্ত ৬০ হাজার ৩৪ ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে।

গাজার হামাসশাসিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমনটি জানিয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত এক লাখ ৪৫ হাজার ৮৭০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৩ জন নিহত ও ৬৩৭ জন আহত হওয়ার পর নতুন এই তথ্য জানানো হলো। খবর বিবিসির।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় এখনও অনেক হতাহত আটকে আছেন, যাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা আজ (মঙ্গলবার) সকালে সতর্কবার্তা জারি করে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় বর্তমানে দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি বাস্তব হয়ে উঠছে।

ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেইজ ক্লাসিফিকেশনের (আইপিসি) ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অঞ্চলে খাদ্য মানদণ্ডে এবং গাজা সিটিতে তীব্র অপুষ্টির মানদণ্ডে এরইমধ্যে দুর্ভিক্ষের মাত্রা অতিক্রম করেছে।

এদিকে অবরুদ্ধ গাজা থেকে বিবিসির সংবাদদাতারা বলেন, আমরা বারবার শুনি যে ত্রাণ ঢুকছে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই চোখে পড়ে না।

কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, সশস্ত্র দলগুলো ত্রাণবাহী ট্রাক লুট করে এবং উচ্চ দামে কালোবাজারে বিক্রি করছে।

অন্যদিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা যে আমরা ত্রাণ আটকে দিচ্ছি।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনের ব্যস্ত এলাকা মিডটাউনে এক ভয়াবহ বন্দুক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামসহ চারজন। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় পার্ক অ্যাভিনিউর ৪৪ তলা একটি অফিস ভবনে এ হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। হামলাকারী শেষে নিজেও আত্মহত্যা করেন।

নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এ ঘটনাকে ‘ঘৃন্য’ এবং ‘জঘন্য কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ভবনটিতে বন্দুকধারী হামলা চালানোর পর সেটিতে লকডাউন আরোপ করা হয়। ওই ঘটনার সময় ব্যস্ত নিউইয়র্কে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

রক্তক্ষয়ী এ ঘটনা শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে। ওই সময় একটি কালো বিএমডব্লিউ গাড়ি নিউইয়র্কের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক পার্ক অ্যাভিনিউতে থামে।

বন্দুকধারী এক ব্যক্তি ওই গাড়ি থেকে একটি এম-৪ রাইফেল নিয়ে নামেন। এরপর তিনি ‘৩৪৫ পার্ক অ্যাভ’ নামে ৪৪ তলা ভবনটিতে প্রবেশ করেন। ভবনটির লবিতে ঢুকেই ডান দিকে ঘুরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করেন।

এরপর বন্দুকধারী এক নারীকে গুলি করেন। তিনি একটি পিলারের পেছনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নারীকে গুলি করে লবি দিয়ে ‘গুলি করতে করতে’ হেঁটে যেতে থাকেন হামলাকারী। এরপর সিকিউরিটি ডেস্কে থাকা এক নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করেন হামলাকারী। তখন তিনি লিফটের বোতামে চাপ দেন। একই সময় লবিতে আরেক ব্যক্তিকে গুলি করেন বন্দুকধারী।

হামলাকারী লিফট থেকে এক নারীকে নেমে যেতে দেন। তার কোনো ক্ষতি করেননি। এরপর লিফটে করে ৩৩ তলায় যান হত্যাকারী। সেখানে গিয়ে আরেক নারীকে গুলি করে তারপর নিজের বুকে গুলি চালান তিনি।

পুলিশ কমিশনার জেসিকা এস. টিশ জানিয়েছেন, ৩৩ তলায় রুডিন ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির অফিস অবস্থিত। যেটি ভবনটি পরিচালনা করত।

বন্দুকধারী কেন ওই ভবনে হত্যাযজ্ঞ চালালেন সেটি এখনো নিশ্চিত নয়।

নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলের বয়স ছিল মাত্র ৩৬ বছর। তিনি বাংলাদেশি ইমিগ্রেন্ট ছিলেন। নিউইয়র্ক সিটি পুলিশে তিন বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছিলেন তিনি। হামলার দিন তার ডিউটি ছিল ব্রঙ্কসের ৪৭ প্রিসেঙ্কটে। কিন্তু হামলার সময় তিনি ৩৪৫ পার্ক অ্যাভ ভবনে কাজ করছিলেন।

দিদারুলের দুই সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী গর্ভবতী। তিনি তৃতীয় সন্তানের বাবা হতেন।

নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার দিদারুল সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমরা তাকে যে কাজ করতে বলেছিলাম তিনি সেই কাজই করছিলেন। তিনি নিজেকে ঝুঁকির পথে রাখেন। তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তাকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করা হয়েছে। তিনি হিরো হিসেবে বেঁচে ছিলেন, মারাও গেছেন হিরো হিসেবে।’

ওই বন্দুকধারীর পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। তার নাম শেন তামুরা। ২৭ বছর বয়সী এই হত্যাকারী লাস ভেগাসের বাসিন্দা। নেভাডা রাজ্যে তার অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। এছাড়া তার মানসিক সমস্যার রেকর্ডও রয়েছে। তবে মানসিক সমস্যার কারণে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন কি না সেটি নিশ্চিত নয়। ন্যক্কারজনক এ হত্যাকাণ্ড ঘটানোর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তি নিশ্চিত করতে হলে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিকল্প নেই।

বৃহস্পতিবার ফ্রান্স সময় রাত সাড়ে ৯টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন ম্যাক্রোঁ। তিনি জানান, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

বিবৃতিতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, গাজায় যুদ্ধ থামানো এখন সবচেয়ে জরুরি। বেসামরিক মানুষের জীবন রক্ষা করতে হবে। শান্তি সম্ভব।

তিনি হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজাবাসীর জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

ম্যাক্রোঁর ভাষ্য, এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি স্বাধীন ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র অপরিহার্য, যা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে এবং অঞ্চলজুড়ে নিরাপত্তা রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।

তিনি জানান, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরই ফ্রান্স এই সিদ্ধান্তে এসেছে।

ম্যাক্রোঁ বলেন, আমি তাকে চিঠি দিয়ে আমার অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি। আমাদের দরকার আস্থা, স্বচ্ছতা ও প্রতিশ্রুতি। আমরা শান্তি অর্জন করব।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ফরাসিরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি চায়। আমাদের—ইসরায়েলি, ফিলিস্তিনি, ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের—এখন একসঙ্গে প্রমাণ করতে হবে, শান্তি সম্ভব।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ ফ্রান্সের স্বীকৃতি দেওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে চাপ আরও বাড়তে পারে।

তারা মনে করছেন, পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশই এই ঘোষণার পর নিজেদের অবস্থান নতুন করে পর্যালোচনা করতে বাধ্য হবে।