খেলাধুলা

রোমাঞ্চকর জয় দিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করলো বাংলাদেশ। আজ সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ২ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তানকে।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে মোহাম্মদ নবির হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৪ রান করে আফগানিস্তান। ৪০ বলে

অপরাজিত ৫৪ রান করেন নবি। জবাবে শুরুতে চাপে পড়লেও পঞ্চম উইকেটে তাওহিদ হৃদয় ও শামিম হোসেনের ৪৩ বলে ৭৩ রানের জুটিতে জয়ের পথ সহজ করে ফেলে বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে শেষ ৫ বলে ২ রান দরকার পড়ে টাইগারদের। কিন্তু শেষ ওভারের হ্যাট্টিক করে ম্যাচে উত্তেজনা তৈরি করেন আফগানিস্তানের পেসার করিম জানাত। শেষ পর্যন্ত ১ বল বাকী থাকতে জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সাকিবের দল।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট শিকারের আনন্দে মাততে পারতো বাংলাদেশ। পেসার তাসকিন আহমেদের বলে আফগানিস্তানের ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজের কঠিন ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি রনি তালুকদার। ১ রানে জীবন পান গুরবাজ।

পরের ওভারে স্পিনার নাসুম আহমেদের প্রথম বলে ছক্কা মারেন আরেক ওপেনার হজরতুল্লাহ জাজাই। পরের ডেলিভারিতে আবারও বড় শট মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগে তাওহিদ হৃদয়কে ক্যাচ দেন ৮ রান করা জাজাই।

দ্বিতীয় ওভারে জীবন পেলেও চতুর্থ ওভারে তাসকিনের বলেই আউট হন গুরবাজ। ডিপ স্কয়ার লেগে মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ১১ বলে ১৬ রান করা গুরবাজ।

পঞ্চম ওভারে আক্রমনে এসেই উইকেট তুলে নেন ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচের হিরো পেসার শরিফুল ইসলাম। ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা হজম করলেও পরের ডেলিভারিতে তিন নম্বরে নামা ইব্রাহিম জাদরানকে ৮ রানে থামান শরিফুল। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেটে ৪০ রান তুলতে পারে আফগানিস্তান।

অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসে আফগানিস্তানের উপর চাপ বাড়ান সাকিব। চার নম্বরে নামা করিম জানাতকে ৩ রানে থামিয়ে দেন সাকিব।

পঞ্চম উইকেটে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে নিয়ে জুটির চেষ্টা করেন নবি। সাবধানে খেলে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন তারা।

কিন্তু এই জুটির পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান মেহেদি হাসান মিরাজ। উইকেটের পেছনে লিটন দাসের দারুন ক্যাচে আউট হন নাজিবুল্লাহ। ২৩ বলে ৩টি চারে ২৩ রান করেন নাজিবুল্লাহ। ১৪তম ওভারে ৮৭ রানেই ৫ উইকেট হারায় আফগানিস্তান।

রানের গতি কম থাকায় ষষ্ঠ উইকেটে মারমুখী হয়ে উঠেন নবি ও আজমতুল্লাহ ওমরজাই। তাসকিন-মুস্তাফিজ ও সাকিবের করা ১৭ থেকে ১৯তম ওভারের প্রত্যকটিতে ১৪ রান করে তুলেন নবি ও ওমারজাই। এসময় ৫টি ছক্কা ও ১টি চার মারেন তারা।

সাকিবের করা ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে ছক্কা মারার পর শেষ ডেলিভারিতে তাসকিনের দারুন ক্যাচে বিদায় নেন ওমরজাই। ৪টি ছক্কায় ১৮ বলে ৩৩ রান করেন তিনি।

২০তম ওভারে মুস্তাফিজের তৃতীয় ডেলিভারিতে বাউন্ডারি দিয়ে ১০৮তম টি-টোয়েন্টিতে ৩৯ বল খেলে পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন নবি। ঐ ওভারের পঞ্চম বলে নাজমুল হোসেন শান্তর দারুন ক্যাচে ৩ রানে আউট হন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৪ রান করে আফগানিস্তান। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেন নবি। বাংলাদেশের সাকিব ২৭ রানে ২টি, নাসুম-তাসকিন-শরিফুল-মুস্তাফিজ ও মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।

১৫৫ রানের টার্গেটে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আফগানিস্তান পেসার ফজলহক ফারুকির বলে বোল্ড হন ওপেনার রনি তালুকদার। দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে রানের চাকা ঘুড়াতে শুরু করেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। ৫ ওভার শেষে ৩০ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ।

পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারের প্রথম বলে লিটন-শান্তর জুটি ভাঙ্গেন আফগান স্পিনার মুজিব। সুইপ করতে গিয়ে মিস টাইমিং করলে বল শান্তর বাঁ-হাতে কনুইতে লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে। ১টি ছক্কায় ১২ বলে ১৪ রান করেন শান্ত।

পরের ওভারে ওমরজাইর বলে উইকেট ছেড়ে খেলে পুল শটে আকাশে বল তুলে রশিদকে ক্যাচ দেন লিটন। ২টি চারে ১৯ বলে ১৮ রান করে লিটন আউট হলে দলীয় ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

এ অবস্থায় জুটি বাঁধেন অধিনায়ক সাকিব ও তাওহিদ হৃদয়। জুটির শুরুতে বৃষ্টিতে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। খেলার শুরুর পর ব্যাট হাতে চড়াও হবার চেষ্টা করেন সাকিব। দুই ওভার মিলিয়ে ৩টি চারও মারেন তিনি। কিন্তু ১১তম ওভারে পেসার ফরিদের প্রথম বলে ডিপ পয়েন্টে করিমকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৩টি চারে ১৯ রান করা সাকিব।

৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। নতুন ব্যাটার শামিম হোসেনকে নিয়ে পাল্টা আক্রমন করেন হৃদয়।

ওমরজাইর করা ১৩তম ওভারে ২১ রান তুলেন হৃদয়-শামিম। ঐ ওভারেই তিন অংকে পা রাখে বাংলাদেশ। ১৬তম ওভারে মুজিবের বলে নাজিবুল্লাহর হাতে ব্যক্তিগত ২৪ রানে জীবন পান শামিম।

ফারুকির করা ১৭তম ওভারে ১৬ রান তুলে টাইগারদের জয়ের পথে নিয়ে আসেন হৃদয়-শামিম জুটি। শেষ ৩ ওভারে ১৯ রানের সমীকরণে নামিয়ে আনেন তারা।

১৮তম ওভারে শামিমকে শিকার করে আফগানিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন রশিদ। ৪টি চারে ২৫ বলে ৩৩ রান করেন শামিম। জুটিতে ৪৩ বলে ৭৩ রান যোগ করেন হৃদয় ও শামিম।

শামিম যখন ফিরেন তখন জয় থেকে ১৮ রান দূরে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ উইকেটে ১২ বলে ১৬ রান তুলে ম্যাচ হাতে মুঠোয় আনেন হৃদয় ও মিরাজ। শেষ ওভারে ৬ রানের প্রয়োজনে প্রথম বলে চার মারেন মিরাজ। জয়ের সমীকরন ২ রানে নেমে আসে। পরের তিন বলে মিরাজ-তাসকিন ও নাসুমকে শিকার করে হ্যাট্টিক করেন করেন জানাত। টি-টোয়েন্টি ৫০তম হ্যাট্টিক এটি।

পঞ্চম ডেলিভারিতে চার মেরে বাংলাদেশকে জয়ের স্বাদ দেন শরিফুল। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩২ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া হৃদয়। ৪ রানে অপরাজিত থাকেন শরিফুল। ৬ বলে ৮ রান করেন মিরাজ। আফগানিস্তানের জানাত ১৫ রানে ৩ উইকেট নেন।

আগামী ১৬ জুুলাই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান।

স্কোর কার্ড :

আফগানিস্তান ইনিংস :

জাজাই ক হৃদয় ব নাসুম ৮
গুরবাজ ক মিরাজ ব তাসকিন ১৬
ইব্রাহিম ক লিটন ব শরিফুল ৮
জানাত ক শান্ত ব সাকিব ৩
নবি অপরাজিত ৫৪
নাজিবুল্লাহ ক লিটন ব মিরাজ ২৩
ওমারজাই ক তাসকিন ব সাকিব ৩৩
রশিদ ক শান্ত ব মুস্তাফিজ ৩
মুজিব অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-২, লে বা-২, ও-২) ৬
মোট (৭ উইকেট, ২০ ওভার) ১৫৪
উইকেট পতন : ১/১৬ (জাজাই), ২/২৬ (গুরবাজ), ৩/৩২ (ইব্রাহিম), ৪/৫২ (জানাত), ৫/৮৭ (নাজিবুল্লাহ), ৬/১৪৩ (ওমারজাই), ৭/১৫২ (রশিদ)।

বাংলাদেশ বোলিং :

নাসুম : ৩-০-২০-১,
তাসকিন : ৪-০-২৯-১,
শরিফুল : ৩-০-৩০-১ (ও-১),
সাকিব : ৪-০-২৭-২,
মুস্তাফিজ : ৪-০-৩১-১ (ও-১),
মিরাজ : ২-০-১৩-১।

বাংলাদেশ ইনিংস :

লিটন দাস ক রশিদ ব ওমারজাই ১৮
রনি বোল্ড ফারুকি ৪
নাজমুল হোসেন বোল্ড ব মুজিব ১৪
সাকিব ক করিম ব ফরিদ ১৯
তাওহিদ হৃদয় অপরাজিত ৪৭
শামিম হোসেন ক গুরবাজ ব রশিদ ৩৩
মিরাজ ক নবি ব জানাত ৮
তাসকিন ক গুরবাজ ব জানাত ০
নাসুম ক ফরিদ ব জানাত ০
শরিফুল অপরাজিত ৪
অতিরিক্ত (লে বা-১, ও-৯) ১০
মোট (৮ উইকেট, ১৯.৫ ওভার) ১৫৭
উইকেট পতন : ১/৫ (রনি), ২/৩০ (শান্ত), ৩/৩৯ (লিটন), ৪/৬৪ (সাকিব), ৫/১৩৭ (শামিম), ৬/১৫৩ (মিরাজ) ৭/১৫৩ (তাসকিন) ৮/১৫৩ (নাসুম)।

আফগানিস্তান বোলিং :

ফারুকি : ৪-০-৩৬-১ (ও-১),
মুজিব : ৪-০-২২-১ (ও-১),
ওমারজাই : ৩-০-৩৪-১ (ও-২),
রশিদ : ৪-০-২৪-১,
ফরিদ : ২-০-১৭-১,
নবি : ১-০-৮-০,
করিম : ১.৫-০-১৫-৩ (ও-১)।

ফল : বাংলাদেশ ২ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: তাওহিদ হৃদয়(বাংলাদেশ)।
সিরিজ : দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

খেলাধুলা

টি-টোয়েন্টিতে অধিকাংশ সময়ই ভয়ঙ্কর দল আফগানিস্তান। বিশেষ করে তাদের বিশ্বমানের বোলিং আক্রমণ ভোগান্তিতে ফেলে যেকোনো দলকেই। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা দুই বোলারই তাদের। সেরা দশে আছেন আরও একজন। কিন্তু তারপরও নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে আলাদা কোনো পরিকল্পনা নেই বাংলাদেশের। নিজেদের নিয়েই ভাবছেন সাকিব আল হাসানরা।

অথচ কয়েক দিন আগেই এই আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হেরেছে বাংলাদেশ। যে সংস্করণেই কিনা সবচেয়ে বেশি ভালো খেলে টাইগাররা। প্রথম দুই ম্যাচে তো সেই অর্থে লড়াইও করতে পারেনি তারা। তবে তৃতীয় ম্যাচে দারুণভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের বিপক্ষে বরাবরই সফল অধিনায়ক রশিদ খান। এই লেগস্পিনারের বল ঠিকমতো বুঝতেই পারেন না টাইগাররা। টাইগারদের বিপক্ষে সফল মুজিব উর রহমানও। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছেন ফজল হক ফারুকিও।

নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে না ভেবে দলগতভাবে ভালো করার তাগিদ দিচ্ছেন অধিনায়ক সাকিব। তিনি বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা কাউকে নিয়ে আমরা চিন্তা করছি না। আমাদের দলও কোনো একজন ব্যাটসম্যান বা বোলারের ওপর ভরসা করে নেই। আমরা চাই যেন আমরা দলীয়ভাবে পারফর্ম করি, যেটার মাধ্যমে যেন জয়লাভ করতে পারি। আমাদের তাড়না একইরকম রাখার চেষ্টা করব আমরা।

মাঠেই প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাববেন বলে জানান অধিনায়ক। বলেন, আমরা কোনো একজন ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা বলিনি, চিন্তাও করিনি। যে ব্যাটিং বা বোলিং করবে, সে তার জায়গা থেকে কী কী পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে, সেগুলো নিয়ে আমি নিশ্চিত যে তারা ব্যক্তিগতভাবে কাজ করবে। এটা আসলে কাউকে বলার বিষয় নয় এবং করারও বিষয় নয়। যে পরিস্থিতিতে যে আসবে, তার দায়িত্ব কিভাবে সে দলের জন্য ভালো পারফর্ম করতে পারে।

মূলত দল হিসেবে খেলেই আফগানদের হারাতে চান সাকিব। তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয়, আমরা দল হিসেবে তখনই ভালো খেলি, যখন অন্য দল নিয়ে চিন্তা না করি। আমরা যখন খোলা মন নিয়ে থাকি, নিজেদের খেলাটায় কিভাবে উন্নতি করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবি এবং নিজেদের জায়গা থেকে সবাই ১০ বা ২০ শতাংশ উন্নতি করা যায়, সেই চিন্তা করি, আমার কাছে মনে হয় দলটা তখনই পারফর্ম বেশি করে।

সাকিব আরও বলেন, আমরা তখনই একটু নার্ভাস থাকি বা অত ভালো পারফর্ম করতে পারি না- যখন আমরা কন্ডিশন নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করি এবং অনেক বেশি প্রতিপক্ষ নিয়ে চিন্তা করি। আমার কাছে মনে হয়, ওই জিনিসটা আমরা যত কম করতে পারব, ততই আমাদের জন্য ভালো।

খেলাধুলা

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দারুণ সুযোগ পেয়েও জয় হাতছাড়া করেছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে অবশ্য সেই সুযোগ দেয়নি নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। রাবেয়া খানের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর শামিমার অসাধারণ এক ইনিংসের সৌজন্যে ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

নিজেদের মাঠে যেকোনো সংস্করণে ভারতের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের প্রথম জয়। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি তৃতীয় জয়। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং করে বাংলাদেশকে ১০৩ রানের লক্ষ্য দেয় ভারতের মেয়েরা। রাবেয়া ও সুলতানা খাতুনের ঘূর্ণি জাদুতে আগে ব্যাটিং করে সুবিধা করতে পারেননি সফরকারী ব্যাটাররা।

শামিমার ৪১ রানের ইনিংসের কল্যাণে ১০ বল হাতে রেখে ৬ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য তাড়া করে জয় পায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। ১৬ রানেই টপ অর্ডারের দুই উইকেট হারায় তারা। সাথি ১০ ও দিলারা আক্তারকে ১ রানে ফেরান স্পিনার মিন্নু মানি। তৃতীয় উইকেটে জ্যোতি ও শামিমা ৪৬ রানের জুটিতে দলের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন।

দলের ৬২ রানে জ্যোতিকে ফিরিয়ে ব্রেক-থ্রু এনে দেন দেবিকা বৈদ্য। ১৪ রান আসে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে। এরপর সুলতানা খাতুনের ১২ ও নাহিদা আক্তারের ১০ রানের কল্যাণে লক্ষ্য ১৮.২ ওভারে ১০৩ রান তুলে বাংলাদেশ।

এর আগে টস জিতে ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ। ৯ উইকেটে ২০ ওভারে ১০২ রান করে তারা। ২০ রানেই দুই ওপেনারকে হারায় ভারত। স্মৃতি মান্ধানাকে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেন সুলতানা। ১ রান আসে স্মৃতির ব্যাট থেকে। চতুর্থ ওভারে আরেক ওপেনার শেফালি ভার্মাকেও ১১ রানে ফেরান অফ স্পিনার সুলতানা।

তবে তৃতীয় উইকেটে হরমনপ্রীত কৌর ও জেমিমাহ রদ্রিগেজ ৪৫ রানের জুটি গড়ে সেই চাপ সামলে নেন। ২৮ রানে জেমিমাহকে আউট করে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্বর্ণা আক্তার। ভারতের ৯১ রানে হরমনপ্রীতকে ফেরান ফাহিমা খাতুন। ৪১ বলে ৪০ রানে সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছেন ভারতের অধিনায়ক।

১৬.২ ওভারে চতুর্থ উইকেট হারিয়েছিল ভারত। এরপর ১১ রান তুলতেই বাকি ৫ উইকেট হারায় তারা। ৯ উইকেটে ১০২ রানের সংগ্রহ পায় সফরকারীরা। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সুলতানা ২টি ও লেগ স্পিনার রাবেয়া ৩টি উইকেট শিকার করেছেন।

খেলাধুলা

তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ৭ উইকেটের জয় পেল বাংলাদেশ। দাপুটে এই জয়ে সিরিজে ২-১ হোয়াইটওয়াশ এড়াল টাইগাররা।

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ১৭ রানে জয় পায় আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৩৩১ রান করে আফগানরা।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ১৪২ রানের বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। টাইগারদের হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে আফগানরা।

প্রথম দুই ম্যাচে হেরে মঙ্গলার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় ছিল টাইগাররা। মানরক্ষার ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিংয়ে আফগানদের ১২৬ রানে অলআউট করেন শরিফুল-তাসকিন-তাইজুলরা।

৩০০ বলে ১২৭ রানের মামুলি স্কোর তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

দলের জয়ে ৬০ বলে তিন চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে অনবদ্য ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক লিটন দাস। ৩৯ বলে পাঁচ বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৯ রান করে ফেরেন সাকিব আল হাসান। ১৯ বলে ২২ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তাওহিদ হৃদয়। ১১ রানে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শূন্য রানে আউট হন নাইম শেখ।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৪৫.২ ওভারে ১২৬ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।

বাংলাদেশ দলের হয়ে পেসার শরিফুল ইসলাম নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম। একটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ।

ম্যাচ সেরা শরিফুল, সিরিজ সেরা ফারুকি

আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের পরিবর্তে খেলানো হয় পেসার শরিফুল ইসলামকে। দলে ফিরেই বাজিমাত বাঁহাতি এই পেসারের।

দুর্দান্ত বোলিংয়ে আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন শরিফুল। আফগানরা অলআউট হয় ৪৫.২ ওভারে ১২৬ রানে। ৯ ওভারে ২৯ রানে ৪ উইকেট নেন শরিফুল। এটি আবার তার ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৭ উইকেটের সহজ জয় পায় বাংলাদেশ। দলের জয়ে অবদান রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তরুণ এই পেসার।

তিন ম্যাচ সিরিজে সর্বোচ্চ ৮ উইকেট শিকার করে সিরিজ সেরা হয়েছেন ফজলহক ফারুকি।

সাকিব আল হাসানের বিশ্ব রেকর্ড

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ৭ উইকেটের দাপুটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। দলের জয়ে ৩৯ বলে ৩৯ রান করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৩৯ রান করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে সব সংস্করণ মিলিয়ে ১৪০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাকিব।

আন্তর্জাতিকে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১৪০০০ হাজার রান ও ৬০০ উইকেট শিকার করে ‘ডাবল ক্লাবের’ প্রথম ক্রিকেটার তিনি। তার আগে বিশ্বের আর কোনো ক্রিকেটারের এমন রেকর্ড নেই।

বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে রান সংগ্রহে শীর্ষে রয়েছেন তামিম ইকবাল। তিনি ১৫ হাজার রানের ক্লাব স্পর্শ করা প্রথম ক্রিকেটার। সব মিলিয়ে ৩৮৫ ম্যাচে ১৫১৪৮ রান করেছেন তামিম। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ৪৩৯ ম্যাচে ১৪ হাজার ৩১০ রান নিয়ে দুইয়ে আছেন।

খেলাধুলা

৫ অক্টোবর ভারতে শুরু হবে ১৩তম ওয়ানডে বিশ্বকাপ। আইসিসি বিশ্বকাপের এবারের আসরে ১০ দলের মধ্যে আটটি দল সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে।

জিম্বাবুয়েতে অনুষ্ঠিত বাছাই পর্বে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ড।

এবারই প্রথম দুইবারের সাবেক চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ছাড়া হবে বিশ্বকাপ। বাছাইপর্ব থেকে তারা বিদায় নেয়। গতবারের মতো এবারো বাছাইপর্ব থেকে বিদায় নেয় জিম্বাবুয়ে।

এবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ১০ দল রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে ৯টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চারে থাকা দলগুলো খেলবে সেমিফাইনাল।

বাছাইপর্ব চলার কারণে গত ২৭ জুন বিশ্বকাপের চূড়ান্ত সূচি প্রকাশিত হলেও বাংলাদেশ পায়নি চূড়ান্ত সূচি। বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের বাকি দুই প্রতিপক্ষও চূড়ান্ত হয়েছে।

আগামী ২৮ অক্টোবর কলকাতায় নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে খেলবে বাংলাদেশ। সেটি হবে আসরে বাংলাদেশের ষষ্ঠ ম্যাচ। ৬ নভেম্বর দিল্লিতে অষ্টম ম্যাচে শ্রীলংকার মুখোমুখি হবে টাইগাররা।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচের সময়সূচি:

তারিখ -প্রতিপক্ষ -স্থান

অক্টোবর বাংলাদেশ-আফগানিস্তান -ধর্মশালা
১০ অক্টেবর বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড -ধর্মশালা
১৪ অক্টোবর বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড -চেন্নাই
১৯ অক্টোবর বাংলাদেশ-ভারত -পুনে
২৪ অক্টোবর বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা- মুম্বাই
২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস -কলকাতা
৩১ অক্টোবর বাংলাদেশ-পাকিস্তান -কলকাতা
নভেম্বর বাংলাদেশ-শ্রীলংকা- দিল্লি
১২ নভেম্বর বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া -পুনে

খেলাধুলা

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল।

তবে তিনি এখনই জাতীয় দলে ফিরছেন না। তার মানে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলতি সিরিজে তার খেলা হচ্ছে না। তিনি দেড় মাসের ছুটি নিয়েছেন। এশিয়া কাপের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন তামিম।

চলতি সপ্তাহে এশিয়া কাপের সূচি ঘোষণা করতে পারে আয়োজক দেশ পাকিস্তান। ৫ অক্টোবর ভারতের আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শুরু হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তার আগেই শেষ করতে হবে এশিয়া কাপ।

বুধবার চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম খেলায় হেরে যায় তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। ঠিক পরদিন সকালে সংবাদ সম্মেলন করে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম।

হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তামিমের অবসরের ঘোষণায় চমকে যায় পুরো দেশ। শুক্রবার দুপুরে অভিমানী তামিমকে গণভবনে ডাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবন থেকে বের হয়ে তামিম জানান, আজ দুপুরবেলায় আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বাসায় দাওয়াত করেছিলেন। ওনার সঙ্গে অনেকক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি। উনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন খেলায় ফিরে আসতে। আমি আমার অবসর এই মুহূর্তে তুলে নিচ্ছি। কারণ আমি সবাইকে না বলতে পারি কিন্তু দেশের যে সবচেয়ে বড় ব্যক্তি, তাকে না বলা আমার পক্ষে অসম্ভব।

এদিন গণভবনের সামনে তামিম যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন পাশেই ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যেহেতু সে শারীরিক ও মানসিকভাবে এখনো ফিট না, সেজন্য দেড় মাস সময় নিয়েছে। এই দেড় মাসে সে পুনর্বাসন শেষ করে আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই ক্রিকেটে ফিরে আসবে।

খেলাধুলা

তামিম ইকবালের আকস্মিক অবসরের ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে জরুরি সভা ডেকেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সভার পর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, তিনি অবসর প্রশ্নে তামিমকে বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছেন। সেটার উত্তরের অপেক্ষায় আছেন তারা। তাছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র না দেওয়ায় ততক্ষণ পর্যন্ত বিসিবির কাছে তামিমই বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক, বলেন বিসিবি সভাপতি।

সভার পর সংবাদ মাধ্যমকে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘আমরা চাই তামিম সিদ্ধান্ত বদল করে ফিরে আসুক। তাহলে খুশি হবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘তামিমের সংবাদ সম্মেলনের পর যোগাযোগ করেও তাকে পাইনি। তার পর তার ভাই নাফীসের মাধ্যমে বার্তা দিয়েছি। কিন্তু কোনো উত্তর পাইনি। আমরা তার উত্তরের অপেক্ষায়।’

সেই বার্তা দেওয়া প্রসঙ্গে নাজমুল হাসান বলেন, আমি সকাল থেকে ওকে ট্রাই করছি। কিন্তু পাচ্ছি না। নাফীস ইকবালের সঙ্গে কথা বলেছি, ওর মাধ্যমেও পাইনি। তখন আমি একটা ম্যাসেজ পাঠাই নাফীসের কাছে। ম্যাসেজটা দেই বিকাল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে। সেখানে তামিমকে বলেছিলাম, কমপক্ষে এই সিরিজটা সে অধিনায়ক হিসেবে শেষ করুক। তার পর আমরা বসে আলোচনা করে ঠিক করবো সামনে কী করা যায়।

সেখানে আরও বলা ছিল, তার মতো একজন লিজেন্ডারি ক্রিকেটারের এভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা ঠিক হচ্ছে না। তার থাকাটা বাংলাদেশ দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বলেন নাজমুল।

বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, তামিম সিদ্ধান্ত না বদলালে আফগানিস্তান সিরিজের শেষ দুই ওয়ানডেতে ডেপুটি লিটন দাস অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু এই মুহূর্তে নতুন কাউকে দায়িত্ব দিচ্ছেন না তারা।

খেলাধুলা

আইসিসি বিশ্বকাপের প্রথম দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলটি ১৯৮৩ সালে ভারতের বিপক্ষে হেরে রানার্সআপ হয়।

এরপর শিরোপা জয় তো দূরে থাক! ফাইনালেও যেতে পারেনি। ২০২০ সালের পর থেকে ধারাবাহিকতা হারাতে থাকে ক্যারিবীয়রা।

২০০৭ সালে নিজেদের ঘরের মাঠে ব্রায়ান লারার শেষ বিশ্বকাপে সাত ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুটিতে জয় পায়। ২০১১ এবং ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়। সবশেষ ২০১৯ সালের বিশ্বকাপেও হতাশা করে উইন্ডিজ।

এবারের আসরে বাছাইপর্ব থেকেই বিদায়। ৫ অক্টোবর ভারতে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপে দেখা যাবে না উইন্ডিজকে। ৪৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ছাড়া হবে বিশ্বকাপ।

গত শনিবার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮১ রানে অলআউট হয়ে ৭ উইকেটে হেরে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে যায় ক্যারিবীয়রা।

বিশ্বকাপের মূলপর্ব থেকে বাদ পড়ার পর দলটির তারকা অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার বলেন, বাছাইপর্বে আমাদের যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ ছিল, কিন্তু আমরা সেটা করতে পারনি। আমারা একটি দল হিসেবে পারফরম্যান্স করতে পারিনি। এখান থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে হবে।

সাবেক এই অধিনায়ক আরও বলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সঙ্গে আমার কাটানো সম্ভবত সব থেকে খারাপ সময় এটা। তারপরও বলব, সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। যে সমস্যা রয়েছে তা দ্রুত সমাধানও সম্ভব নয়। আমাদের তরুণ প্রতিভা তুলে আনতে হবে। তাহলে আগামীতে সফলতা আসবে।

খেলাধুলা

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে গত ১৮ ডিসেম্বর টাইব্রেকারে বিশ্বকাপ-ভাগ্য সুতোয় দুলছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের। শত কোটি মানুষের চোখ ছিল টেলিভিশনের পর্দায়। টাইব্রেকারে ফ্রান্সের কিংসলে কোমানের শট অসীম দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন আর্জেন্টাইন গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। ওই শটটি না ফেরালে হয়তো ৩৬ বছর পর নিজেদের তৃতীয় বিশ্বকাপ ট্রফিটি ছুঁয়ে দেখা হতো না আলবিসেলেস্তেদের। এক টাইব্রেকারেই হিরো বনে যান মার্তিনেজ। তিন যুগ পর আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতানোর অন্যতম নায়ক গোলকিপার মার্তিনেজ আজ বাংলাদেশে আসছেন। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে বিমানে সাত হাজার ৬৩৩ কিলোমিটার পারি দিয়ে ভোর সাড়ে ৫টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার। তবে ঢাকায় ১২ ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে এলেও মার্তিনেজকে দেখার সুযোগ থাকছে না ক্রীড়ামোদীদের।

মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য বাংলাদেশে আসছেন ২০২২ কাতার বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা দলের তারকা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। তার সঙ্গে কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মীও থাকবেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি যাবেন হোটেলে। কয়েক ঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ফান্ডেড নেক্সটের কোম্পানি নেক্সট ভেঞ্চারের কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন অ্যাস্টনভিলা তারকা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন মার্তিনেজ। এরপর বিকালের ফ্লাইটে মার্তিনেজ চলে যাবেন কলকাতায়। রোববার অনির্ধারিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেক্সট ভেঞ্চারের সিইও সৈয়দ আব্দুল্লাহ জায়েদ এবং চিফ স্ট্র্যাটেজিক অফিসার সৈয়দ আব্দুল্লাহ গালিব জানান, ‘আমাদের ইচ্ছা ছিল মার্তিনেজকে নিয়ে একটি পাবলিক অনুষ্ঠান করার। ২৬ জুন ঢাকায় আসার সময় নিশ্চিত করেন তিনি। ঈদের ছুটি এবং তিনি খুবই কম সময় ঢাকায় থাকবেন ফলে সেই অনুষ্ঠান সম্ভব হচ্ছে না।’

মার্তিনেজের সফরে তাদের অফিসের সূচি নিয়ে জায়েদ বলেন, ‘আমরা মার্তিনেজকে বাংলাদেশের মানুষের আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসার বিষয়টি ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে দেখাব। আমাদের অফিসে স্টাফরা কিছু সময় কাটাবেন তার সঙ্গে। আমন্ত্রিত অতিথিরাও থাকবেন সংক্ষিপ্ত এ অনুষ্ঠানে।’ তিনি যোগ করেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাৎ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ঢাকায় নিযুক্ত আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতও থাকতে পারেন।’ গালিব বলেন, ‘আমরা আইটি কোম্পানি, তাই আইসিটি মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। মাশরাফি মুর্তজা আর্জেন্টিনার সমর্থক। তিনি তরুণ সমাজের আইকন। সেই হিসাবে তাকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল দল ভারত থেকে আসছে। দেশে থাকলে আমরা অবশ্যই তাদের কয়েকজনকে দাওয়াত দিতাম।’

মার্তিনেজকে ঢাকায় আনার উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নেক্সট ভেঞ্চার্স ফ্লাগশিপ ব্র্যান্ডের জন্য মার্তিনেজকে ঢাকায় আনা হচ্ছে। সংক্ষিপ্ত এই সফরে মার্তিনেজ একটি ছোট সাক্ষাৎকারে অংশ নেবেন এবং ব্র্যান্ড প্রমোশনের জন্য ফটোশুটেও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ-সদস্য মাশরাফি মুর্তজাসহ আরও কয়েকজন তারকার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন মার্তিনেজ। মার্তিনেজকে ঢাকায় আনছেন কলকাতার স্পোর্টস প্রমোটার শতদ্রু দত্ত। কলকাতা থেকে শতদ্রু দত্ত বলেন, ‘আমস্টারডাম থেকে সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকায় পৌঁছবেন মার্তিনেজ। এরপর হোটেলে কিছুটা সময় বিশ্রাম নেবেন। দুপুরের দিকে পৌনে এক ঘণ্টার জন্য কোম্পানির অফিস (নেক্সট ভেঞ্চার্স ও ফান্ডেড নেক্সট) পরিদর্শন করবেন। পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপরই বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার বিশ্বসেরা এই গোলকিপার।’ জানা গেছে, ঢাকায় বেশি সময় মার্তিনেজকে রাখার বিষয়ে সম্মতি ছিল শতদ্রুর। কিন্তু এতে অনেক অর্থের প্রয়োজন। তাই তিনি আসছেন অনেকটা শুভেচ্ছাদূত হয়ে। শতদ্রুর কথায়, ‘মার্তিনেজ বাংলাদেশকে ভালোবাসেন। তাই তিনি তেমন কোনো অর্থই নিচ্ছেন না এই সফর থেকে। শুধু বিমান খরচ ও আনুষঙ্গিক কিছু বিষয় ছাড়া।’

বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার কোটি কোটি সমর্থক থাকা সত্ত্বেও মার্তিনেজের ঢাকায় আসার বিষয়ে তেমন গা করছে না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তাদের তেমন কোনো উদ্যোগও নেই এ বিষয়ে। তাই হয়তো বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকেও আমন্ত্রণ জানায়নি ফান্ডেড নেক্সট।

খেলাধুলা

বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বেড়েছে।তবে ৮৮৯ দশমিক ৫ পয়েন্ট নিয়ে আগের অবস্থান ১৯২তম স্থানেই আছে বাংলাদেশ ফুটবল দল।

বৃহস্পতিবার র‍্যাঙ্কিংয়ের হালনাগাদ প্রকাশ করে ফিফা।

গত ৬ এপ্রিল ফিফার প্রকাশিত সর্বশেষ র‍্যাঙ্কিংয়ে ৮৮৩ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট নিয়ে ১৯২তম স্থানে ছিল বাংলাদেশ।

চলমান সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। দীর্ঘ ১৪ বছর পর সেমিতে উঠল বাংলাদেশ।গ্রুপ পর্বে লেবাননের কাছে হারলেও মালদ্বীপ ও ভূটানকে হারিয়ে সেমিতে উঠে বাংলাদেশ। দুটি জয়ের সুবাদে পয়েন্ট বেড়েছে বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের ঠিক উপরেই থাকা ব্রুনেইয়ের পয়েন্ট ৮৯১ দশমিক ১২।১৮৪৩ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফ্রান্সের পয়েন্ট ১৮৪৩ দশমিক ৫৪। ১৮২৮ দশমিক ২৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে আছে ব্রাজিল।

র‍্যাঙ্কিংয়ে চতুর্থ থেকে দশম স্থান পর্যন্ত আছে যথাক্রমে- ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, পর্তুগাল ও স্পেন।