খেলাধুলা

অধিনায়ক হিসেবে যে ৭ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন মিরাজ

বাংলাদেশের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের কাঁধে এখন বড় দায়িত্ব। আইসিসির র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ দলকে আবার জয়ের ধারায় ফেরাতে হবে তাকে। তবে মিরাজের সামনে চ্যালেঞ্জ এই একটাই নয়।  অনেক দিকেই এখন মিরাজের নজর দেওয়া দরকার।

১। দলকে এক সুতোয় গাঁথা–

প্রথমেই মিরাজকে দলকে একত্রিত রাখতে হবে। এখন দলে বড় অস্থিরতা চলছে। শান্ত ওয়ানডে অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন এবং টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকেও পদত্যাগ করেছেন। শান্ত বলেছিলেন, তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক থাকা ভালো নয়। তার মন খারাপ থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই মিরাজকে ড্রেসিংরুমের ভেতরের অস্বস্তি দূর করে দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।

২। নিজের ব্যাটিং পজিশন ঠিক করা–
মিরাজকে নিজের ব্যাটিং পজিশন ঠিক করতে হবে। এখন পর্যন্ত তাকে একেক ম্যাচে একেক পজিশনে ব্যাট করতে দেখা গেছে। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে নিজের জন্য নির্দিষ্ট পজিশন ঠিক করতে হবে তাকে। সেক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে হবে, কোথায় তার গড় আর স্ট্রাইকরেট সবচেয়ে ভালো থাকবে, পারফর্ম্যান্স দিয়ে সবচেয়ে বেশি প্রভাব রাখতে পারবেন, কোথায় ব্যাট করলে আবার তার বোলিংয়েও প্রভাব ফেলবে না, সেসব দিকেও দেখতে হবে তাকে।

৩। ওপেনিং ধাঁধার সমাধান–
তানজিদ হাসানকে ওপেনার হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার সঙ্গে কে ওপেন করবেন তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম আছেন দলে। লিটনের সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো নয়, শেষ পাঁচ ইনিংসে তার রান মাত্র ৬। তবে তার অভিজ্ঞতা ও কিপিং দক্ষতা তাকে এগিয়ে রাখতে পারে। শান্ত তিন নম্বরে ফিরতে পারেন, যদিও শেষ ওয়ানডেতে ওপেন করে ৭৭ করেছিলেন।

৪। পরবর্তী মুশফিক মাহমুদউল্লাহদের খুঁজে বের করা–
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মিডল অর্ডার ঠিক করা। মুশফিকুর ও মাহমুদউল্লাহ অবসর নিয়েছেন। সাকিব চ্যাম্পিয়নস ট্রফিকে বিদায় ম্যাচ ভাবছিলেন, কিন্তু রাজনীতির কারণে তার ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। ফলে মিডল অর্ডারে প্রায় ৭৬০ ওয়ানডে ম্যাচের অভিজ্ঞতার শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি ও শামিম হোসেন আছেন। তবে তাদের অভিজ্ঞতা কম। আফিফ, নুরুল হাসান সোহান বা মোসাদ্দেকের মতো বিকল্পকেও বিবেচনা করা যেতে পারে।

৫। স্পিন আক্রমণের ধার ফেরানো–
স্পিন আক্রমণ নিয়েও মিরাজের কাজ আছে। সাকিবের শেষ ওয়ানডে খেলার পর থেকে বাংলাদেশের স্পিনাররা ১৫ ম্যাচে ৬৫.৬৯ গড়ে ২৩ উইকেট পেয়েছেন। মিরাজ নিজেই ৭১ গড়ে ৯ উইকেট পেয়েছেন। রিশাদ বা নাসুমও ধারাবাহিক নন। নতুন মুখ তানভীর ইসলাম এখনো ওয়ানডে খেলেননি। ফলে স্পিনের ধার ফেরানো নিয়েও ভাবতে হবে তাকে।

৬। ওয়ানডে স্পেশালিস্ট পেসার খুঁজে বের করা–
স্পিন ভালো না করলে পেস আক্রমণের উপর ভরসা রাখতে হবে। তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের ফেরায় শক্তি বাড়বে। হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও তানজিম হাসান ভালো করছেন। তবে মিরাজকে ঠিক করতে হবে কে আসলে ওয়ানডে স্পেশালিস্ট।

৭। র‍্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি–
র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করাও জরুরি। শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারলে বাংলাদেশ এক ধাপ উপরে উঠতে পারে। সরাসরি ২০২৭ বিশ্বকাপের কোয়ালিফাই করার জন্য এই পয়েন্ট গুরুত্বপূর্ণ বেশ।

মিরাজের জন্য সময় কম, কাজ বেশি। বাংলাদেশের ওয়ানডে ফরম্যাটে ভালো ইতিহাস আছে। শেষবার তামিমের নেতৃত্বে জয়ের হার ভালো ছিল। সাকিব ও শান্ত সেটা ধরে রাখতে পারেননি। এখন মিরাজকে এই কঠিন সময়ে দলকে আবার জয়ের রাস্তায় ফেরাতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *