ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ইয়াল জামির গাজার পুরো নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেছেন, এটি কার্যত দখলদারিত্বই বোঝায়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাবে গাজা দখলের পরিকল্পনা সদ্যই এক বৈঠকে অনুমোদন করেছে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। আর সেই বৈঠকেই বিতর্কিত এই পরিকল্পনা নিয়ে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা হয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী প্রধান এবং নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে একথা জানানো হয়েছে। ইয়ানেট সংবাদ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, ১০ ঘণ্টা দীর্ঘ বৈঠকে সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির গাজার পুরো নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন।
তার মতে, এটি কার্যত দখলদারিত্বই বোঝায়। এতে যেসব এলাকা দখলে আনা হবে সেসব জায়গায় বাস করা প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হতে পারে। ২০ জন ইসরায়েলি বন্দির জীবনও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। যারা এখনও জীবিত আছে বলে ধারণা করা হয়।
সেনাপ্রধান জামির আরও বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে ক্লান্ত সেনাবাহিনীর ওপর এতে অতিরিক্ত চাপ পড়বে। গাজার বিভিন্ন অভিযানে অনেক রিজার্ভ সেনা সদস্য ইতোমধ্যেই একাধিকবার অংশ নিয়েছেন।
বিবিসি লিখেছে, কবে থেকে এই দীর্ঘমেয়াদি অভিযান শুরু হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এতে হাজার হাজার সেনা সদস্য মোতায়েন করতে হবে ইসরায়েলকে। আবার গাজার বেসামরিক নাগরিকদেরকেও আবার সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিতে হবে, যাদের অনেকেই এর আগে একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, অভিযানের বিস্তার ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আরও বেশি প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি করবে।
মা’আরিভ পত্রিকা বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিস্তৃত অভিযানের সময় জীবিত বন্দিদের ‘অধিকাংশ বা সম্ভবত সবাই’ নিহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাদের অপহরণকারীদের হাতে কিংবা ইসরায়েলি সেনাদের হামলায়।
নেতানিয়াহুর পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হিসেবে গাজা সিটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে ‘দখল’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি।
ইয়ানেট ওয়েবসাইট বলছে, বেসামরিক দায়িত্ব সম্পর্কিত আইনি জটিলতার কারণে এই শব্দ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিভাষা বদলালেও আন্তর্জাতিক আইনে দখলদার বাহিনী হিসেবে ইসরায়েলের স্থানীয় জনগণের চাহিদা পূরণের দায়িত্ব থেকেই যাবে।