ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টায় গণভবন থেকে ভিডিও কন্ফারেন্সে যুক্ত হয়ে ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ডাবল লাইনে হওয়ায় ওই অঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এখন থেকে আর ক্রসিংয়ের ঝামেলা পোহাতে হবে না তাদের। নতুন যুগের সূচনা ঢাকা-চট্টগ্রাম এই রেলপথ।
জানা গেছে, ৩২১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পুরো অংশ ডাবল লাইনে উন্নীত হচ্ছে। এ পথে আর কোনো ট্রেনকে ক্রসিংয়ে পড়তে হবে না বলে কমে আসবে যাত্রার সময়।
কুমিল্লা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেলপথ সিঙ্গেল লাইনের হওয়ায় এতদিন ক্রসিংয়ে পড়ে অনেক ট্রেনের যাত্রায় বিলম্ব হত। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেত।
আখাউড়া পৌর এলাকার কয়েকজন জানান, নানা কাজে ফেনী যাতায়ত করতে হয়। প্রতিবারই দেখা যায় আখাউড়া কিংবা ফেনীতে নির্ধারিত সময়ের আগেও ট্রেন চলে আসে। পরে কুমিল্লা-আখাউড়া অংশে ক্রসিংয়ের কারণে সব সময়ই ট্রেনের বিলম্ব হয়।
এই ৭২ কিলোমিটার রেলপথ ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন হওয়ায় পুরো ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে আর কোনো ট্রেনকে ক্রসিংয়ে পড়তে হবে না। অনির্ধারিত যাত্রা বিরতিতে সময়ও নষ্ট হবে না। পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের রেলযোগাযোগ আরও সহজ হবে।
লাকসাম রেলওয়ে জংশনের সহকারী মাস্টার ইকবাল হোসেন বলেন, আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন রেলপথে ট্রেন চলাচলের বিষয়টিতে রেলওয়েতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হচ্ছে।
নতুন এ পথে মিটার গেজ ও ব্রড গেজ এ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে। বর্তমানে এই পথে মোট ২৩ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে এ পথ দিয়ে ৭২ জোড়া ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা তৈরি হবে। সেই সঙ্গে মালবাহী ট্রেন চলাচলের সক্ষমতাও কয়েক গুণ বাড়বে।
লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার রেলপথে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন করতে ২০১৪ সালে ছয় হাজার ৫০৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয় একনেকে। ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয় নির্মাণ কাজ। ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা থেকে লাকসাম পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার অংশ ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
ডাবল লাইন নির্মাণ এবং বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনের উন্নয়নে এ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এক হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক। আর এক হাজার ২৬ কোটি টাকার বেশি অর্থায়ন করেছে সরকার।