চীনের প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার ২ ঘণ্টার বেশি সময়ের এক ফোনালাপে তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’র বিরুদ্ধে নতুন করে হুঁশিয়ার করেছেন।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরিকল্পনা নিয়ে উত্তেজনার আবহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এক ফোনকলে ‘আগুন নিয়ে না খেলার’ নতুন সতর্কবার্তা দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
বৃহস্পতিবার দুই দেশের নেতা ফোনে কথা বলেছেন। জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা নেওয়ার পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে এটি তার পঞ্চম ফোনালাপ। তবে গত চার মাসের মধ্যে এটিই তাদের প্রথম ফোনালাপ।
২ ঘণ্টার বেশি সময়ের এ ফোনালাপেই শি তাইওয়ান ইস্যুতে বাইডেনকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’র বিরুদ্ধে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, “যারা আগুন নিয়ে খেলে তারা কেবলই পুড়ে যাবে। (আমরা) আশা করি যুক্তরাষ্ট্র সেটি পরিষ্কারভাবেই দেখতে পারছে।”
ফোনে দুই নেতার কথপোকথনের বিস্তারিত প্রকাশ করে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘এক-চীন নীতি’ মেনে চলা উচিত। আর তাইওয়ানের স্বাধীনতার ব্যাপারে চীন যে ঘোর বিরোধী এবং তারা তাইওয়ানে কোনও বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপও মানতে নারাজ সেকথা আবারও জোর দিয়েই বলেছেন শি।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ার সফরের গুঞ্জনের মধ্যে চীন কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রকে উত্তোরত্তর কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে। সর্বশেষ বুধবার যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে চীন বলেছে, পেলোসি যদি তার সফর নিয়ে অগ্রসর হন, তাহলে ‘মারাত্মক পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
চীন তাইওয়ানকে তার নিজের বিচ্ছিন্ন প্রদেশ মনে করে; একদিন না একদিন প্রদেশটি মূলভূখণ্ডের সঙ্গে একত্রিত হবে বলেও মনে করে তারা। সেই ধারণা বাস্তবায়নে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয় না বেইজিং।
যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে চীনের অংশ মেনে নিয়ে ‘এক চীন’ নীতির প্রতি সমর্থন জানালেও তাইওয়ানের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক ও সামরিক যোগাযোগ আছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটন-তাইপে মাখামাখি চীনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে কারণে তারা তাইওয়ানে পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতির ব্যাপারে একের পর এক সতর্কবার্তা দিচ্ছে।
চীনের এই হুমকি-ধামকিতে সম্প্রতি কয়েকদিনে তাইওয়ান নিয়ে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। আর এ আবহেই বৃহস্পতিবারের বাইডেন-শি ফোনালাপে প্রাধান্য পেয়েছে তাইওয়ান প্রসঙ্গ।
তবে অন্যান্য আরও অনেক বিষয় নিয়েও দু’নেতা আলাপ করেছেন। এর মধ্যে আছে- ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন, যে যুদ্ধের নিন্দা চীন এখনও করেনি। এছাড়াও দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়েও দু’নেতা আলাপ করেছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।