বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদসহ ৩০ বুদ্ধিজীবীর পরামর্শ নিতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এজন্য আগামী ১৩ মার্চ বিকেল তিনটায় এক বৈঠক আয়োজন করে তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে সংস্থাটি।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বুধবার (৯ মার্চ) নির্বাচন ভবনে তার দপ্তরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শিক্ষাবিদ, বিশিষ্টজন, গণমাধ্যম, নারী নেত্রী ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবেন এবং তাদের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শ নিয়ে তৈরি করবেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ। ধারাবাহিক সংলাপের প্রথম সভায় ৩০ বুদ্ধিজীবী/শিক্ষাবিদকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ইসি।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এমিরেটস প্রফেসর ডক্টর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (আসিফ নজরুল), অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসাইন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, অধ্যাপক এম আবুল কাশেম মজুমদার, আইন বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর বোরহানউদ্দিন খান, সোশিয়লজির অধ্যাপক সাদেকা হালিম।
এছাড়াও রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, অধ্যাপক আখতার হোসেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইয়াসমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য তানভির হাসান, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মফিজুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী, ইউল্যাব ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিক, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ মোহাব্বত খান, অধ্যাপক ডক্টর মোবাশ্বের মোনেম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. ফেরদৌস হাসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শামছুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসলিম আরিফ সিদ্দিকি।
আগামী ২২ মার্চ বিশিষ্টজন এবং ৩০ মার্চ গণমাধ্যমের সঙ্গে বৈঠক করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। পরদিন তারা শপথ নিয়ে প্রথম অফিস করেন ২৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর পুরোদমে এখনো কাজ করেনি কমিশন। এর মধ্যে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি শ্রদ্ধা নিবেদন, সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, ভোটার দিবস উদযাপন ও নানা আনুষ্ঠানিকতা করেছেন।
দায়িত্ব নেওয়ার পর এতো তাড়াতাড়ি আগের কোনো কমিশন মতবিনিময় বা সংলাপে বসার উদ্যোগ নেননি। অবশ্য দায়িত্ব নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন- আমরা দলগুলোকে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানাতে পারি।
নির্বাচন কমিশন সর্বশেষ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন ২০১৭ সাল। সে বছর ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসার মধ্য দিয়ে কার্যত ওই সংলাপ শুরু হয়েছিল। এরপর ৪০টি রাজনৈতিক দল, নারী নেতৃত্ব, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও গণমাধ্যমের সঙ্গেও বসেছিল তৎকালীন কেএম নূরুল হুদার কমিশন।
সর্বশেষ সংলাপ থেকে আসা সুপারিশের মধ্য থেকে দুটো প্রধান ভাগে ভাগ করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে একটি অংশ নিজেদের এখতিয়ারভুক্ত। অন্যদিকে সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। সরকারের এখতিয়াভুক্ত সুপারিশগুলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠায় কমিশন। আর অন্যগুলো নিজেদের কর্মপরিকল্পনার ভেতর অন্তর্ভুক্ত করেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের অধীনেই আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে ২০২৩ সালের শুরু থেকেই হাতে নিতে নির্বাচনী প্রস্তুতি। আর তার আগেই সংলাপের আয়োজন ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন সচেতন মহল।