খেলাধুলা

আশা জাগিয়েও পারলেন না মিরাজ

বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে জয় তুলে নিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সফরকারিদের দেওয়া সিরিজে সমতা আনতে ২৩১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২১৩ রানে সবকটি উইকেট হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন তামিম ইকবাল। ম্যাচ অব দ্য ম্যাচ রাহকিম কর্ণওয়াল। ম্যান অব দ্য সিরিজ এনক্রুমা বনার।

এই টেস্ট জিততে হলে বাংলাদেশকে নিজেদের আগের রেকর্ড ভাঙতে হতো। এর আগে বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটিও ছিল উইন্ডিজদের বিপক্ষে। ২০০৯ সালে তাদের মাটিতে ২১৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে এবার স্বাগতিক হয়েও সেই রেকর্ডটি ভাঙতে পারলো না।

ঢাকা টেস্টে জোমেল ওয়ারিক্যান এবং রাহকিম কর্ণওয়ালের স্পিন বিষে নীল হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশকে ১৭ রানে হারিয়ে ২-০ তে সিরিজ জিতে নিলো ক্যারিবীয়রা। বল হাতে একাই বাংলাদেশের ব্যাটিংলাইন আপে ধ্বস নামান কর্ণওয়াল।

মিরপুরের উইকেটে স্পিনাররা বেশ ভালোভাবেই ভোগাবে সেটা জানাই ছিল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। যে কারণে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন তামিম ইকবাল। তবে শেষ বিকালে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আফসোস করতেই পারে। চা-বিরতিতে যাওয়ার আগে শেষ ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তকে সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন রাহকিম কর্ণওয়াল।

তখনও জয়ের জন্য ১৫৩ রানের প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। এই উইকেটে ২৩১ রান তাড়া করা যে সহজ ছিল না সেটি ভালো করেই জানা। তবুও আশা জেগেছিল মুশফিক-মুমিনুল আছেন বিধায়। তবে সেই আশায় পানি ঢালতে বেশি দেরি করেনি ক্যারিবীয়রা।

দলীয় ১০১ রানে ওয়ারিক্যানের বলে পা সামনে এগিয়ে আনতেই উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফিরতে হয় মুশফিককে। মুশফিকের বিদায়ের পর রান তাড়া যেন আরও কঠিন হয়ে পড়ে বাংলাদেশের জন্য। বাংলাদেশের জন্য কাজটা আরও কঠিন করেন কর্ণওয়ালই। দলীয় ১১৫ রানে মিঠুনকে সাজঘরে ফেরান তিনি।

১১৫ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে কাজটা যখন কঠিন হয়ে পড়ে তখনই কিছুটা আশা দেখাচ্ছিলেন দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক এবং উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস। দুই ব্যাটসম্যানই কর্ণওয়াল, ওয়ারিক্যানকে বেশ দেখে শুনেই খেলছিলেন। সেই সাথে এই দুই ব্যাটসম্যানকে দিতে হচ্ছে ধৈর্য পরীক্ষাও। কিন্ত মুমিনুলও আশা দেখিয়ে টিকতে পারলেন না ক্রিজে। দলীয় ১৪৭ রানে ওয়ারিক্যানের বলে থামতে হয় তাকে।

আউট হওয়ার আগে ২৬ রানের ইনিংস খেলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। বাংলাদেশের জন্য জয়ের কাজটা আরও কঠিন হয় দলীয় ৬ রান যোগ করতেই। কর্ণওয়ালের করা অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল মারতে গিয়ে উইকেটকিপার জশুয়া ডা সিলভার হাতে ক্যাচ তুলে দেন লিটন।

লিটনের বিদায়ের পর একপাশ থেকে আগলে রেখে বাংলাদেশের জয়ের আশা টিকিয়ে রাখেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের সঙ্গে তাইজুল কিছুটা সঙ্গ দিলেও দলীয় ১৬৩ রানে আউট হন তিনি। নবম উইকেট জুটিতে দলীয় স্কোরবোর্ডে মিরাজের সঙ্গে ২৫ রান যোগ করেন নাঈম। তবে সেই নাঈমও বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হতে পারলেন না। ক্রেগ ব্র্যাফেটের বলেই এলবিডব্লুর শিকার হতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় নাঈমকে (১৪)।

তবে তখনও আশা টিকিয়ে রাখেন মিরাজ। ৫৯তম ওভারে কর্ণওয়েলকে ছয় এবং চার মেরে লড়াই চালিয়ে যান মেহেদী হাসান। তবে নাটকের শেষটা হয় কর্ণওয়ালের হাতেই। দলের যখন ১৮ রান প্রয়োজন তখনই ওয়ারিক্যানের বলে স্লিপে থাকা কর্ণওয়ালের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মিরাজ। সেই সাথে শেষ হয় মিরাজের লড়াকু ৩১ রানের ইনিংস।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১ম ইনিংস) ৪০৯ (বনার ৯০, জশুয়া ডা সিলভা ৯২, আবু জায়েদ ৪-৯৮)

বাংলাদেশ (১ম ইনিংস) ২৯৬ (লিটন ৭১, মিরাজ ৫৭, মুশফিক ৫৪, কর্ণওয়েল ৫-৭৪)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২য় ইনিংস) ১১৭ (বনার ৩৮, জশুয়া ডা সিলভা ২০, তাইজুল ৪-৩৬)

বাংলাদেশ (২য় ইনিংস) ২১৩ (তামিম ৫০, মুমিনুল ২৬, মিরাজ ৩১ : কর্ণওয়াল ৪-১০৫)

বাংলাদেশের ১৭ রানের হার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *