রাজনীতি

আ. লীগ নেতাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে: মির্জা আব্বাস

আওয়ামী লীগ নেতাদের মাথাপিছু আয় ও ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সরকার বলে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। কিন্তু কার বেড়েছে আমি জানি না।

তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের মাথাপিছু আয় এবং ক্রয় ক্ষমতা যে বেড়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর আওয়ামী লীগের বাইরে যারা আছেন তারা যে না খেয়ে আছেন এতেও কোনো সন্দেহ নাই।
বৃহস্পতিবার (১২মে) সকাল সাড়ে দশটার দিকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে দলীয় নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাড়িসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, মাথাপিছু আয় বেড়ে ২৮২৪ ডলার হয়েছে। অন্যদিকে যে বাচ্চাটা মায়ের পেটে আছে তার মাথায় লোন হলো ৪৯২ডলার। একথা আপনারা কেন বলছেন না? নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের তিনি বলেন, আপনারা স্লোগানতো দিচ্ছেন, এই যে মাথাপিছু ৪৯২ডলার ঋণ এটা দিতে পারবেন, ক্ষমতা আছে এই অপকর্ম, এই অত্যাচার-অনাচার, লুট-ডাকাতি, লোনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। আমাদের কারো ওপরে হামলা হবে, কারো ওপরে জুলুম হবে, আমরা এক যোগে প্রতিবাদ করবো, কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার বলেছে আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি ইভিএম-এ করবো না স্বাভাবিক করবো। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বললেন ৩০০ আসনে ইভিএম-এ নির্বাচন হবে। তাহলে আমরা যে বলছি নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না। ওই ঘটনায় এটা প্রমাণ হয়ে গেল। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। বিভিন্ন পত্রিকায় দেখা যাচ্ছে আসন ভাগ করছেন। ১০০ আসন ৭০ আসন। আসন যারা ভাগ করছেন আমরা আপনাদের ‘পা’ ভাগ করে দেব। আসন ভাগের নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। কোনো আতাতের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। কথাটা মনে রাখবেন। যারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন তারা জাতীয় বেঈমান হবেন। এই কথাটা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লালদিঘীর ময়দানে সেই ১৯৮৬ সালে বলেছিলেন। তারপর তিনি নির্বাচনে গিয়ে নিজেকে বেঈমান হিসেবে প্রমাণ করেছিলেন। এবারও যারা নিজেদের জাতীয় বেঈমান হিসেবে প্রমাণ করতে চাইবেন আমরা সরকার এবং তাদের বিরুদ্ধে এক যোগে ব্যবস্থা নেব।

তিনি বলেন, একটা কথা বলি, তখন শ্রীলংকার বিষয়টি সামনে আসেনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের সাহেব কী করে যে বুঝলেন বাংলাদেশেও শ্রীলংকার অবস্থা হবে আমি বুঝি না। উনি কিন্তু বহু আগে বলেছেন, সময় আসলে যা মাল কামাইছেন এইসব মাল নিয়ে দেশ থেকে পালাতে হবে। এটা কিন্তু আমরা বলিনি, কাদের সাহেব বলেছেন।

কয়েকদিন আগে বিনাভোটের প্রধানমন্ত্রী বললেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনো রকম বাধা দেওয়া হবে না। এই কথা যেদিন বললেন, তার ঠিক পরদিন আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা খন্দকার মোশাররফ সাহেবের বাড়িতে হামলা করা হলো। এরপর রেদোয়ান আহমেদের বাড়িসহ ১০/১২ জায়গায় হামলা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলার পরে এই ঘটনা কী করে হয়! অর্থাৎ এই দেশে আজকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কিংবা চোর-বাটপার লুটেরা কেউ প্রধানমন্ত্রীর কথা শোনে না।

তিনি বলেন, মজার বিষয় হলো মোশাররফ সাহেবের বাড়িতে যখন হামলা হয়েছে ওখানে কিন্তু ছাত্র-লীগ যুবলীগ উত্তম, মধ্যম খেয়ে ফেরত এসেছে। রেদোয়ানের ওপরে হামলা হয়েছে সেখানেও আওয়ামী লীগ যুবলীগ উত্তম-মধ্যম খেয়ে ফিরে আসছে। আমাদের ভিপি জয়নাল আবেদিনের ওখানে হামলা হয়েছে সেখানেও উত্তম মধ্যম খেয়েছে। অর্থাৎ প্রতিরোধ শুরু হয়ে গেছে। এখন আমাদের প্রত্যাঘাত করতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে উঠছে, আমরা প্রত্যাঘাতের মাধ্যমেই এই সরকারের পতন ঘটাবো।

মির্জা আব্বাস বলেন, শুরু কিন্তু হয়ে গেছে। কোথা থেকে শুরু হয়েছে সে কথা আমি বলতে চাই না। পালানো শুরু হয়েছে। কিছু কিছু লোক এর আগেও এয়ারপোর্টে গিয়ে ধরা খেয়েছে। এখনও ধরা খাচ্ছে। যেতে পারছে না, বের হতে পারছে না।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন (ভিপি জয়নাল), মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণ বিএনপি নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির আজিজুল বারী হেলাল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুস সালাম আজাদ, ড. খন্দকার মারুফ হোসেন, নারী দলের আফরোজা আব্বাস, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, যুবদলের মোরতাজুল করিম বাদরু, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

এর আগে সকাল দশটা থেকে ঢাকার বিভিন্ন থানা থেকে মিছিল নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। এই সমাবেশে সহস্রাধিক নেতাকর্মীর উপস্থিত লক্ষ্য করা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *