আদালতের গঠিত নতুন পরিচালনা পর্ষদের কাছে ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসের লকারগুলোর কম্বিনেশন নম্বর (পাসওয়ার্ড) দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কারাগারে থাকা মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের প্রতি এ নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।
এ জন্য নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা তার মনোনীত প্রতিনিধিকে কারাগারে এই দম্পতির সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করতে আইজি প্রিজন্সকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে বোর্ডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোরশেদ আহমেদ খান। আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাছুম ও সৈয়দ মাহসিব হোসেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রতিযোগিতা কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল।
এক গ্রাহক ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে মে মাসে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি মোবাইলফোন ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেন। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার রশিদও দিয়েছেন। পরে পণ্য না পেয়ে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
তার আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। এর ধারাবাহিকতায় ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির সব নথি আদালতে আসার পর একটি বোর্ড গঠন করে আদেশ দেন।
চেয়ারম্যান ছাড়া বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন—সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ, এফসিএ ফখরুদ্দিন আহমেদ ও অতিরিক্ত সচিব (ওএসডি) মাহবুব কবীর। মাহবুব কবীর এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
আদেশে আদালত চেয়ারম্যান, বোর্ড অব ডিরেক্টরস, ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে আলাদা আলাদা নির্দেশনা দেন। এছাড়া ইভ্যালির ঘটনায় উদ্ভুত ফৌজদারি মামলা আইন অনুসারে দেখভাল করতে দুদক চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোর্টের নিয়োগ করা কোম্পানিটির পরিচালনা পরিষদকে সহযোগিতা করতেও বলা হয়েছে।
গ্রাহকরা আগামী ছয় মাস পরিচালনা পর্ষদকে অর্থ ফেরতে চাপ দিতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে তারা সমস্যা সমাধানে ইভ্যালির হেড অফিসে যোগাযোগ করতে পারবেন। পরবর্তী আদেশের জন্য আদালত ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য রেখেছিলেন।
পরে আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন বলেন, ধার্য তারিখ অনুযায়ী মামলাটি কার্যতালিকায় আসে। সেখানে নতুন বোর্ড এর কার্যক্রম এর বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। এরপর আদালতের গঠিত নতুন পরিচালনা পর্ষদের কাছে ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসের লকারগুলোর পাসওয়ার্ড নাম্বার দিতে কারাগারে থাকা ইভ্যালির রাসেল ও তার স্ত্রীর প্রতি নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা করবেন।
এদিকে এই মামলায় পক্ষভুক্ত হতে ৩০ জন ইভ্যালির গ্রাহক আবেদন করেন। তবে তা আদালত গ্রহণ করেননি।
আদালত বলেছেন, নতুন বোর্ডের কাছে এ বিষয়ে আবেদন করেন। আগের আদেশ অনুসারে ছয় মাস অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। এই সময়ের পরে সমাধান না হলে তারা আদালতে আবেদন করতে পারবেন।