আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের পূর্বশর্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন: সৌদি আরব

সৌদি গোয়েন্দা পরিষেবার সাবেক প্রধান প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল বলেছেন, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ফয়সাল লন্ডন-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউসে এক বক্তৃতায় গাজা যুদ্ধের বছর পেরোনোর আগে শান্তি প্রক্রিয়ায় ওয়াশিংটনের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করেন এবং জানান এই যুদ্ধের আগে শুরু হওয়ার আলোচনা (সৌদি- ইসরায়েল সম্পর্ক বিষয়ে) ইতিবাচকই ছিল।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে আলোচনা পুনরায় শুরু করতে আগ্রহী, কিন্তু রিয়াদের অবস্থান হল, যদি এমন একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয় যার অস্তিত্ব ইসরায়েল স্বীকার করে, তাহলে আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে কথা শুরু করতে পারবো। খবর আরব নিউজ

এই সময় আল-ফয়সাল বলেন ১৯৮১ সালের কিং ফাহদ শান্তি পরিকল্পনা এবং বাদশাহ আবদুল্লাহ কর্তৃক প্রস্তাবিত ২০০২ আরব শান্তি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, সৌদি আরব সবসময় এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজে এসেছে। সৌদি আরব চায় ১৯৬৭ সালে সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেম যুক্তকরে একট স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র।

বক্তব্যে গাজা যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে চাপ তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলি লবিস্ট গ্রুপের উপর থেকে কর রেয়াতের সুবিধা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরাইলকে সমর্থন করবে না আমিরাত

ফিলিস্তিনে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের প্রভাবে দিনদিনই জনমত হারাচ্ছে ইসরাইল। শুরুর দিকে ইসরাইলকে সমর্থন দিলেও এখনও অনেকেই আর সমর্থন দিতে পারছেন না এই যুদ্ধে। ইসরাইলের নাগরিকরাও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি। গাজায় বন্দিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে এরইমধ্যে গণবিক্ষোভ করছে দেশটির নাগরিকরা। এই অবস্থায় ইসরাইলকে কড়া বার্তা দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।

সংযুক্ত আরব আমিরাত নিজেদের অবস্থান জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারা গাজায় ইসরাইলের পরিকল্পনায় সমর্থন করবে না। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া গাজা যুদ্ধে সমর্থন করতে প্রস্তুত নয়।’

এর আগে, গত মে মাসে, ইসরাইল প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু গাজার জন্য একটি যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা অনলাইনে প্রকাশ করেন। যেখানে তার দাবি, এটি বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিনিরা অতুলনীয় সমৃদ্ধি উপভোগ করবে। এই পরিকল্পনায় বন্দর, সৌর শক্তি, বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন এবং নতুন আবিষ্কৃত গাজা গ্যাসফিল্ডের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত ছিল। আর এই পরিকল্পনা যুদ্ধে বিজয়ের পর আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে পর্যন্ত তিনটি পর্যায়ে সম্পন্ন করা হতো।

যেই রোডম্যাপে বলা হয়েছে, গাজার ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলি দখলদারিত্বের অধীনে পরিকল্পনাটি চালাবে। যা সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, মিশর, বাহরাইন, জর্ডান এবং মরক্কোসহ আরব রাষ্ট্রগুলির একটি জোট তত্ত্বাবধান করবে।

যার প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহুকে নিন্দা করেছেন আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ। তার মতে, ‘এই পদক্ষেপটিতে বাস্তবায়ন বা অনুরূপ পদক্ষেপ নেওয়ার বৈধ কর্তৃত্বের অভাব ছিল। কেননা, গাজা পরিকল্পনা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে কোনো পরামর্শ করা হয়নি। এছাড়াও, সংযুক্ত আরব আমিরাত গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি উপস্থিতি কভার প্রদানের লক্ষ্যে যে কোনও পরিকল্পনায় জড়িত হতে অস্বীকার করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যখন একটি ফিলিস্তিনি সরকার গঠিত হবে যা ভ্রাতৃপ্রতিম ফিলিস্তিনি জনগণের আশা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে। সততা, যোগ্যতা এবং স্বাধীনতার দ্বারা আলাদা হবে। তখন সংযুক্ত আরব আমিরাত সেই সরকারকে সব ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত থাকবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *