‘প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প’ নামের আড়ালে উপহারের ঘর নির্মাণে হরিলুট চলছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।
রোববার (১১জুলাই) দুপুরে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির এই মন্তব্য তুলে ধরেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১০ জুলাই) বিকেলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকারদের কাছ থেকে চাঁদা, জনগণের অর্থ, সরকারি কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে শুধুমাত্র ব্যক্তি প্রচারণার নামে যে নির্মাণ কাজ হচ্ছে তা কিছুদিন যেতে না যেতেই ভেঙে পড়ছে। এই প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা হরিলুট চলছে। এই মর্মে পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন আসছে। এভাবে ব্যক্তি প্রচারণায় জনগণের অর্থ অপচয়ের অধিকার কারও নেই’।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এবং চলমান নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক অবস্থা ও চরম অমানবিক আচরণসহ, খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে আটক ও তার প্রতি অমানবিক আচরনের বিষয় প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং জাতীয় মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশের কতৃত্ববাদী সরকারের জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ, সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, মিথ্যা মামলা, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুমের ঘটনা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মতামত প্রকাশ করেছে’।
বিএনপি মনে করে, যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে সাজা দিয়ে তাকে আটক রাখা হয়েছে। এমনকি সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এটা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সভায় গত ৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার ‘হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ’ শিল্প প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন শিশু-কিশোর-মহিলা শ্রমিকের মৃত্যু ও প্রায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ায় গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফেতার কামনা ও আহতদের আশু রোগ মুক্তি কামনা করা হয়। একই সঙ্গে এই দুর্ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত, দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা এবং নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের যথাযথ ক্ষতিপূরণের আহ্বান জানানো হয়।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘করোনার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন’ চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন অব্যাহত রাখার পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ মন্তব্যে স্থায়ী কমিটির সভায় গভীর ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিএনপি মনে করে এই নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে আজ পর্যন্ত একটি নির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি।
‘কোভিড-১৯ করোনা সংক্রান্ত কোনো তথ্য সাংবাদিক, কোনো ব্যক্তি অথবা সংস্থাকে অনুমতি ব্যতিরেকে কেউ দিতে পারবে না’ ঢাকা জেলা সিভিল সার্জনের এই নির্দেশনাকে মুক্ত তথ্য প্রবাহ নীতির বিরোধী দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, কোভিড-১৯ সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও চরম স্বাস্থ্য বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। এই নির্দেশ প্রদান প্রমাণ করছে যে, তারা প্রকৃত তথ্য গোপন করছে এবং করতে চায়।
তিনি বলেন, অবিলম্বে এই সব নির্দেশ এবং তথ্য গোপন করার অপচেষ্টা বন্ধ করে, জনগণের সামনে সত্য ও সঠিক চিত্র তুলে ধরলেই জনগণের সচেতনা বৃদ্ধিপাবে এবং সমস্যা সমাধান সহজ হবে।