শরতে ঘরে যদি থাকে কাশফুলের আভা তবে শীতে থাকতে পারে উষ্ণ আলোর ছোঁয়া।
শরৎকাল মানেই উজ্জ্বল আকাশ, আকাশে সাদা মেঘের খেলা আর কাশফুলের মেলা।
অন্যদিকে শীত কিছুটা শুষ্ক তবে ঘর সাজানোর জন্য নানান উপকরণ মেলে এ সময়ে। গ্রীষ্মের গরমেরও আছে রং।
আর বসন্তে-তো সবই নতুন। আছে রং, উজ্জ্বলতা আর উৎসব।
ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘরের সাজেও তাই আনা যায় নতুনত্ব।
অন্দরসজ্জাবিদ গুলশান নাসরিন বলেন, “গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, বসন্ত, শীত সব সময় ঘরে উষ্ণতা, আরাম ও নান্দনিকতার সমন্বয় ঘটানোই মূল লক্ষ্য। সব মৌসুমেই কয়েকটি ছোটখাটো সজ্জা উপকরণই ঘরের চেহারা পাল্টে দিতে পারে।”
তারহীন আলো
যে কোনো সময়েই ঘরের উষ্ণতা ফুটিয়ে তোলার জন্য তারহীন ল্যাম্প বেশ কার্যকর। এসব ল্যাম্প যে কোনো জায়গায় রাখা যায়— সাইড টেবিলে, বুকশেলফে, এমনকি বারান্দা বা বাগানেও।
এগুলো সহজেই সরানো যায় এবং মেজাজ অনুযায়ী স্থান পরিবর্তন করা যায়।
বিশেষ করে যেসব ল্যাম্পে আলো নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধা রয়েছে, সেগুলো সব ঋতুর জন্য আদর্শ।
নানান গাছ, ফুলের শাখা
ঋতুর পরিবর্তনের সাথে আগের ঋতুর ফুল ও গাছের ডাল-পালা বদলে ফেলা যায়। লাল, বেগুনি ও বাদামি রং শরতের আবহের সাথে সুন্দরভাবে মানিয়ে যায়।
ফুলদানি ভরে ডাইনিং টেবিল বা সেন্টার টেবিলে রাখলে ঘরে আনবে প্রাকৃতিক ছোঁয়া।
একটি শাখা রাখলে হবে ‘মিনিমাল লুক’, আর একাধিক শাখা মিলিয়ে সাজালে ঘরে আসবে জমকালো আমেজ।
ছোট ফ্রেমের শিল্পকর্ম
ছোট আকারের ফ্রেম ঘরের সাজে বাড়তি মাত্রা যোগ করে। কাঠ বা রং করা ফ্রেম ঘরে উষ্ণতার আবহ আনে।
প্রকৃতি-প্রাণিত চিত্রকর্ম বা আলোকচিত্র ঘরের সাজের জন্য আদর্শ। কারণ এগুলো মাটির আভা ও প্রাকৃতিক রংয়ের সাথে মানিয়ে যায়।
ঝালর ও শোভাযুক্ত নকশা
ঘরের সাজে ঝালর, ট্যাসল বা পশম-অনুপ্রাণিত নকশা বেশ জনপ্রিয়। এগুলো ঘরে আনে গ্ল্যামার ও বৈচিত্র্য।
গুলশান নাসরিনের মতে, “ভারী ও আরামদায়ক উপাদানের সাথে এসব শোভা মিশিয়ে নিলে তৈরি হয় নতুন ধরনের সৌন্দর্য, যা আধুনিক অথচ ক্লাসিক ধাঁচের।”
স্টেটমেন্ট বাটি
খাবার ঘর বা রান্নাঘর সাজানোর জন্য বড় বাটি বা পেডেস্টাল বা স্ট্যান্ড বাটি এখন বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এতে রাখা যায় ফলমূল বা স্বাস্থ্যকর নাস্তা।
গোলাকার আকৃতির দুটি বাটি পাশাপাশি রাখলে ঘরে দৃশ্য ভারসাম্য তৈরি হয়। সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী এই উপকরণ ঘরের সাজে যোগ করবে অনন্য মাত্রা।
ভেলভেট কাপড়
ভেলভেট কাপড় আসবাবপত্রে এখনও ব্যবহার হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী ফুলেল নকশা বা চেক ডিজাইনের সাথে এই কাপড় মিশিয়ে ব্যবহার করলে ঘরে আসে সমকালীন ও চিরায়ত সৌন্দর্য।
গাঢ় সোনালি বা উজ্জ্বল রংয়ে তৈরি সোফা বা চেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘরের সাজকে উন্নত করে তোলে।
প্রাচীন ও সংগ্রহশালা উপকরণ
ঘরের সাজে প্রাচীন ও সংগ্রহশালা জিনিসপত্র অপরিহার্য। পুরানো টেবিল, ব্যবহৃত পুরানো চেয়ার বা পুরানো শিল্পকর্ম ঘরে আনে উষ্ণতা ও ইতিহাসের ছোঁয়া।
পরিষ্কার লাইনযুক্ত আধুনিক সোফার পাশে একটি কাঠের সাইড টেবিল বা পুরানো ট্রাঙ্ককে পার্শ্ব টেবিল বানালে তৈরি হয় ভিন্নরকম পরিবেশ, যা সব আবহে একেবারে মানানসই।