জাতীয়

একসঙ্গে ১১ জন কিশোর-যুবকের মৃত্যুতে স্তব্ধ খন্দকিয়া গ্রাম

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের এক কিলোমিটার এলাকায় ট্রেন ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হয়েছেন। তাদের সবার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের আমানবাজার পূর্ব পাশে খন্দকিয়া গ্রামে। একসঙ্গে ১১ জন কিশোর ও যুবকের মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো গ্রাম।

মিরসরাই এলাকায় ট্রেন ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১৬ আরোহীর ঘটনার খবর নিহতদের পরিবার তথা হাটহাজারীর খন্দকিয়া গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া। এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে অমানিশার অন্ধকার। এলাকা জুড়ে চলছে শোকের মাতম। নিহতের পরিবারের সদস্য, তাদের আত্মীয়-স্বজন ও এলাকায় আবাল বৃদ্ধ বনিতার আহাজারিতে খন্দকিয়া গ্রামের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।

ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে চিকনদন্ডী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাসান জামান বাচ্চু বলেন, মিরসরাই উপজেলার পর্যটন স্পট খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে পথে ট্রেনের ধাক্কায় আমার এলাকার ১১জন নিহত হয়েছে। করতে আমি দ্রুত চমেক হাসপাতালে ছুটে আসি। এদের মধ্যে ৫/৬ জনকে জরুরি বিভাগে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুত্ব।

শুক্রবার দুপুরে খৈয়াছড়া ঝরনা লেভেলক্রসিংয়ে উঠে পড়া পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন আরও ৬ জন।

নিহতদের ১০ জনই হাটহাজারীর জুগিরহাট আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের ছাত্র-শিক্ষক। বাড়ি হাটহাজারীর আমানবাজার খন্দকিয়া গ্রামে। তারা খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে ফিরছিলেন।

নিহতরা হলেন- আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক মোস্তফা মাসুদ রাকিব (২৮), জিয়াউল হক সজীব (২৮), রিদোয়ান চৌধুরী (৩১) ও ওয়াহিদুল আলম জিসান (৩২)। শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশাম (১৮), আয়াত (১৮), মারুফ (১৭), তাসফির (১৮) ও হাসান (১৯)। নিহত অন্যজন হলেন- মাইক্রোবাস চালক গোলাম মোস্তফা (৩৫), তিনি হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী এলাকার বাসিন্দা।

আহতরা হলেন- তাছমীর পাভেল (১৬), মো. মাহিম (১৮), মো. সৈকত (১৮), তানভীর হাসান হৃদয় (১৮), মো. ইমন (১৯) ও মাইক্রোবাসের চালকের সহকারী তৌকিদ ইবনে শাওন (২০)। তারা চমেক হাসপাতালের ২৪ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতি ট্রেনটি দুপুর দেড়টার দিকে ওই লেভেলক্রসিং পার হওয়ার মুখে পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসটি লাইনে উঠে পড়ে। ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিলে তা ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে আটকে যায়। ওই অবস্থায় মাইক্রোবাসটিকে প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার পথ ছেঁচড়ে নিয়ে বার তাকিয়া স্টেশনের অদূরে থামে ট্রেনটি।

এরমধ্যেই মাইক্রোবাসের চালকসহ ১১জন মারা যান। স্থানীয়রা ছুটে এসে হতাহতদের উদ্ধার শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস, রেলপুলিশ ও থানা পুলিশের সদস্যরা এসে উদ্ধার কাজে যোগ দেন। আহতদের নেওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দীন গণমাধ্যমকে জানান, পরিবারের লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *