ইতোমধ্যে লাবনীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ফরেনসনিক বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে; সেখানে তার ফোনের কললিস্ট চেক করে দেখা হবে।
এক সপ্তাহ পার হলেও মাগুরায় পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার লাবনী আক্তার ও মাগুরা জেলা পুলিশ লাইন্সে তার সাবেক দেহরক্ষী মাহমুদুল হাসানের মৃত্যুর রহস্যের জট খোলেনি।
তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে লাবনীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ফরেনসনিক বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে তার ফোনের কললিস্ট চেক করে দেখা হবে।
এর বাইরে তারা সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারেননি।
মাহমুদুল হাসানের দুলাভাই মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, “এক সপ্তাহ চলে গেলেও আমার শ্যালকের আত্মহত্যার কারণটাই আমরা জানতে পারলাম না। আমরা মনে করি, মাগুরার পুলিশ সুপার মহোদয় একটু আন্তরিকতা দিয়ে চেষ্টা করলে অল্প সময়ের মধ্যেই এর কারণ উদঘাটন করা সম্ভব।”
ছুটিতে গ্রামের বাড়ি থাকা অবস্থায় গত ২০ জুলাই রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি খন্দকার লাবনী আক্তারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ২১ জুলাই সকালে মাগুরা পুলিশ লাইন্সের ব্যারাকের ছাদে নিজের অস্ত্রের গুলিতে প্রাণ হারান লাবনী আক্তারের সাবেক দেহরক্ষী কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান।
লাবনী আক্তারের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের দায়িত্বে থাকা মাগুরার শ্রীপুর থানার এসআই নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, “তদন্ত চলছে।”
এ বিষয়ে কোনো কিছু জানতে হলে এসপি অথবা ওসির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
লাবনী আক্তারের সাবেক দেহরক্ষী মাহমুদুল হাসানের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে আছেন মাগুরা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “তদন্ত চলছে; ঘটনাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।”
তবে এখনও মাহমুদুল হাসানের লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাননি বলে ওসি জানান।
শ্রীপুর থানার ওসি প্রিটন সরকার বলেন, “সব কিছু মাথায় রেখেই আমরা তদন্ত কাজ চালাচ্ছি। এ বিষয়ে স্পষ্ট করে এখনও বলার সময় আসেনি।”
এডিসি লাবনী আক্তারের মৃত্যুর পর তার স্বামী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক তারেক আব্দুল্লাহ দুই মেয়েকে নিয়ে ফরিদপুরে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন লাবনীর ছোট ভাই হাসনাতুল আজম প্রিন্স।
স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ শুনে ২১ জুলাই ভারত থেকে দেশে ফিরে আসেন ক্যান্সারাক্রান্ত তারেক। লাবনীর মরদেহ ২১ জুলাই দাফনের পরদিনই দুই মেয়েকে নিয়ে তিনি ফরিদপুরের বাসায় চলে যান।
জানতে চাইলে তারেক আব্দুল্লাহ বলেন, “বর্তমানে আমি মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি। এ মুহূর্তে এ বিষয়টি নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না।”
তবে লাবনী আক্তারের বাবা প্রাক্তন স্কুলশিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল আজম বলেন, “আর কোনো প্রশ্ন আপনারা আমাকে করবেন না। কারণ ঘটনার পর থেকে অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আমি ক্লান্ত। মানসিকভাবে এখন আমি একদম ভেঙে পড়েছি। স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের বিষয় ছাড়া আমার মেয়ের আত্মহত্যার পিছনে অন্য কোনো বিষয় আছে কিনা তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়।”