এবার বিএনপির সঙ্গে হাত মেলাল গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যও। সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনে রাজপথের কর্মসূচিতে থাকার ঘোষণা দিয়েছে তারা। মোস্তফা মহসিন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরাম রাজপথে থাকার কথা ঘোষণার একদিন পর আরও একটি জোটের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা এলো।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির লিয়াজোঁ কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য।
পরে সংবাদ সম্মেলনে বাম ঐক্যের সমন্বয়ক বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (মার্কবাদী-লেলিনবাদী) সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন চৌধুরী বলেন, আমরা রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছি। এ বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে রক্ষা করার জন্য বিএনপির সঙ্গে এ আলোচনা। দেশের স্বার্থে আমরা আগামী দিনে বিএনপির যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গে থাকব।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ‘যুগপৎ আন্দোলন’ শুরু করেছে। এ আন্দোলনে সাত দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট ও ১১ দলের জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট রয়েছে। আরও আছে এলডিপি ও জামায়াতে ইসলামী।
সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (মার্কবাদী-লেলিনবাদী) ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল মিলে ২০১৭ সালে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য নামে জোট গঠন করে।
আজ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাম ঐক্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (মার্কবাদী-লেলিনবাদী) সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন চৌধুরী, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক কমরেড আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশিদ।
বৈঠক শেষে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুন চৌধুরী বলেন, আগামী দিন চলার পথ যত কঠিনই হোক, আমরা সেখানে পিছপা হব না। আমরা রাষ্ট্র রূপান্তরের ২৭ দফা এবং আগামী দিনে ১১ জানুয়ারি যে অবস্থান কর্মসূচি হবে তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি।
তিনি বলেন, চূড়ান্ত আন্দোলন পর্যন্ত আমরা পিছপা হব না- বিএনপির সঙ্গে আমরা এই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কাজেই এ সরকারকে পরাজিত করব। আমরা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করব। সেই নির্বাচনে বিএনপিসহ এই জোট এদেশে জয়লাভ করবে। জনগণের সরকার এদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা সম্পর্কে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক বলেন, ২৭ দফা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখে একটা বিশ্বাস হয়েছে- বিএনপি রাষ্ট্র মেরামতের জন্য যে ২৭ দফা দিয়েছে, সেটা কৃষক-শ্রমিক-মজুর-ছাত্র-নারী-পুরুষ প্রত্যেকের জন্য কথাগুলো আছে। সেই কথা আমরা বিশ্বাস করেছি। আগামী দিনে ক্ষমতায় আসতে পারলে তারা (বিএনপি) এ মেরামতগুলো করবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বিএনপির ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছেন, আগামী দিনের রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে থাকবেন।
তিনি বলেন, আগামীতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হবে, সেখানে ক্ষমতায় গিয়ে আন্দোলনকারী দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার করে ২৭ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে হবে।