শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ১৫টি চিনিকলের নয়টিতে এবার আখ মাড়াই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি আখ মাড়াই মৌসুমের মধ্যে ওই চিনিকলগুলোকে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গত রোববার অনলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের সার্বিক বিষয় পর্যালোচনার জন্য এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সংসদ সদস্যরা অংশ নেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৫টি চিনিকলের মধ্যে বাকি ছয়টিতে আখ মাড়াই না করে সেসব মিল সংলগ্ন এলাকায় উৎপাদিত ও কৃষকের সরবরাহ করা আখ কিনে ফেলা হবে। যেসব মিলে চলতি মৌসুমে আখ মাড়াই করা হবে সেগুলোতে এগুলোও মাড়াই করা হবে।
চালু থাকা চিনিকলগুলো হলো- কেরু অ্যান্ড কোং (বিডি), মোবারকগঞ্জ সুগার মিলস, ফরিদপুর চিনিকল, রাজশাহী চিনিকল, নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস, নাটোর সুগার মিলস, ঠাকুরগাঁও সুগার মিলস, জয়পুরহাট চিনিকল ও জিলবাংলা সুগার মিলস।
চিনি উৎপাদন বন্ধ থাকবে কুষ্টিয়া চিনিকল, পাবনা চিনিকল, পঞ্চগড় চিনিকল, শ্যামপুর সুগার মিলস, রংপুর চিনিকল ও সেতাবগঞ্জ চিনিকলে। এসব চিনিকল এলাকায় উৎপাদিত ও কৃষকের সরবরাহ করা আখ কিনে নেবে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন।
বন্ধ থাকা চিনিকলের কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিককে ছাঁটাই করা হবে না, বরং সমন্বয় করার জন্য সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত সব চিনিকলের আধুনিকায়নের মাধ্যমে বহুমুখী খাদ্যপণ্য উৎপাদন করে লাভজনক করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করা হবে। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ইতোমধ্যে চিনিকল আধুনিকায়নের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে রাষ্ট্রয়াত্ত্ব ছয়টি চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধে ‘আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’ বাতিল করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশন ও বাংলাদেশ চিনিশিল্প করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে ১৫ ডিসেম্বর থেকে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন বলে জানান সংগঠন দুটির নেতারা। গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের হুমকি দেন আখচাষি ও চিনিকলের শ্রমিকরা।