দেশের বাইরে সেরা বছর
২০০৯ সালের সাফল্যকে ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ। সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজেই দুটি টেস্ট জিতেছিল তারা। এত দিন কোনো পঞ্জিকা বর্ষে এটাই ছিল সেরা সাফল্য।
এবার জিতল তিনটি। পাকিস্তানকে তাদেরই মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে এই বছর দেশের জয় হল তিনটি।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কোনো আসরে এটাই বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। এবার জিতল তিন ম্যাচ।
বাংলাদেশের সেরা গন্তব্য
দেশের বাইরে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য ওয়েস্ট ইন্ডিজে। সব মিলিয়ে এখানে তিনটি টেস্ট জিতল বাংলাদেশ।
২০০৯ সালে জিতেছিল দুটি টেস্ট, ১৫ বছর পর জিতল আরেকটি।
দুটি করে টেস্ট জয় আছে পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়েতে। একটি করে ম্যাচ জিতেছে নিউ জিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায়।
১০১ রানের জয়
আক্রমণে ফিরে দুটি চার হজম করেছিলেন নাহিদ রানা। তবে শমার জোসেফের সঙ্গে লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন তিনিই। গতিময় পেসারের দারুণ ইয়র্কারে এলোমেলো হয়ে গেল স্টাম্প। বাংলাদেশ পেল ১০১ রানের জয়।
২০০৯ সালের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথমবারের মতো টেস্ট জিতল বাংলাদেশ। ২৮৭ রানের লক্ষ্য দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ১৮৫ রানে গুটিয়ে দিল সফরকারীরা।
প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া নাহিদের হাত দিয়েই হলো শেষটা। সেবার ১ উইকেট পাওয়া তাইজুল ইসলামের এবার শিকার পাঁচটি। তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ নিলেন দুটি করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৬৪
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ১৪৬
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৬৮
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৮৭) ৫০ ওভারে ১৮৫ (ব্র্যাথওয়েট ৪৩, লুই ৬, কার্টি ১৪, হজ ৫৫, আথানেজ ৫, গ্রেভস ২০, দা সিলভা ১২, আলজারি জোসেফ ৫, রোচ ৮, সিলস ১*, শামার জোসেফ ৬; হাসান ৬-০-২০-২, তাসকিন ১০-০-৪৫-২, তাইজুল ১৭-৫-৫০-৫, রানা ৯-২-৩২-১, মিরাজ ৮-০-৩১-০)।
রোচকে ফিরিয়ে হাসানের দ্বিতীয়
আক্রমণে ফেরার ওভারে জোড়া শিকার ধরলেন হাসান মাহমুদ। আলজারি জোসেফের পর কিমার রোচকে ফিরিয়ে দিলেন এই পেসার।
স্টাম্পে থাকা লেংথ ডেলিভারির লাইনে যেতে পারেননি রোচ। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নেন তিনি। বল লাগতো মিডল স্টাম্পের চূড়ায়। টিকে থাকে রিভিউ, তবে আম্পয়ার্স কলের জন্য ফিরে যান রোচ।
জয়ের আরও কাছে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
৭ বলে ৮ রান করেন রোচ।
৪৯ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৯ উইকেটে ১৭৬। ক্রিজে জেডেন সিলসের সঙ্গী শামার জোসেফ।
দা সিলভাকে ফিরিয়ে তাইজুলের ৫
দারুণ বোলিং করা তাইজুল ইসলামের হাত ধরে এলো আরেকটি সাফল্য। জশুয়া দা সিলভাকে ফিরিয়ে অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার পেলেন নিজের পঞ্চম উইকেট।
জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলার চেষ্টায় স্টাম্প তাক করে করা ডেলিভারির লাইনে যেতে পারেন ক্যারিবিয়ান কিপার-ব্যাটসম্যান। প্যাডে লাগার পরই কেবল খেলতে পারেন ব্যাটে।
আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নেন দা সিলভা। বল লাগত মিডল স্টাম্পে, দ্বিতীয় রিভিউ হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৮ বলে এক চারে দা সিলভা করেন ১২ রান।
তাকে বিদায় করে সাকিবের সঙ্গে ব্যবধান কমালেন তাইজুল। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৯বার ৫ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। তাইজুল পেলেন ১৫তম বার।
৪৬ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৭ উইকেটে ১৭২। ক্রিজে আলজারি জোসেফের সঙ্গী কিমার রোচ।
আথানেজকে টিকতে দিলেন না তাইজুল
দারুণ এক ডেলিভারিতে আলিক আথানেজকে বোল্ড করে দিলেন তাইজুল ইসলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপদ বাড়িয়ে বাঁহাতি এই স্পিনার নিলেন নিজের তৃতীয় উইকেট।
বলের লাইনের ধারে কাছে যেতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। অনেক দূরে থেকেই ব্যাট চালিয়ে দেন তিনি। কিন্তু বিশাল টার্ন করে বল ছোবল দেয় মিডল স্টাম্পে।
৬ বলে ১ চারে ৫ রান করেন আথানেজ।
২৭ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ১০৮। ক্রিজে কাভেম হজের সঙ্গী জাস্টিন গ্রেভস।
৯১ রানে থামলেন জাকের
একের পর এক সঙ্গীর বিদায়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করলেন জাকের আলি। তাতে ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের আশাও জাগালেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পাওয়া হলো না তার। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে থামলেন ৯১ রানে।
আলজারি জোসেফের স্লোয়ারে ছক্কা মেরে নব্বইয়ের ঘরে যান জাকের। তিন বল পর পুল করে আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন তিনি, আলিক আথানেজের হাতে।
১০৬ বলে পাঁচ ছক্কা ও আট চারে ৯১ রান করেন জাকের।
৫৯.৫ ওভারে ২৬৮ রানে থামে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ১৮ রানে পিছিয়ে থাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ পায় ২৮৭ রানের লক্ষ্য।
৫ উইকেটে ১৯১ রানে দিন শুরু করা বাংলাদেশ এদিন শেষ ৫ উইকেটে যোগ করে ৭৭ রান। এতে সবচেয়ে বড় অবদান জাকেরের। শেষ চার ব্যাটসম্যানের মিলিত অবদান কেবল ৪ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৬৪
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ১৪৬
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৬৮
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৮৭) ৫০ ওভারে ১৮৫ (ব্র্যাথওয়েট ৪৩, লুই ৬, কার্টি ১৪, হজ ৫৫, আথানেজ ৫, গ্রেভস ২০, দা সিলভা ১২, আলজারি জোসেফ ৫, রোচ ৮, সিলস ১*, শামার জোসেফ ৬; হাসান ৬-০-২০-২, তাসকিন ১০-০-৪৫-২, তাইজুল ১৭-৫-৫০-৫, রানা ৯-২-৩২-১, মিরাজ ৮-০-৩১-০)