রাজধানীর উপকণ্ঠ শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত আশুলিয়া থানা। ওই থানার কার্যক্রম চলছে রাজনৈতিক নেতাদের খেয়াল খুশিমতো। শুধু তাই নয়, এজাহার থেকেও নাম পরিবর্তন ও বাতিলের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ৯টা। আশুলিয়া থানায় গিয়ে দেখা গেছে, নীল পাঞ্জাবী পড়া মধ্য বয়সী একজন ওসির চেয়ারে বসে মামলার এজাহার কাটছাট করছেন। তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন ২০-২৫ জন যুবক। তাদের কেউ ঢুকছেন, কেউ বের হচ্ছে। অর্থাৎ কড়া নজরদারি। বাইরে মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন দেড় থেকে দুইশ যুবক। টেবিলে একটি ওয়াকিটকি পড়ে আছে। কোনো পুলিশের দেখা নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওসির চেয়ারে বসা ব্যক্তি আশুলিয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান মাস্টার। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জিল্লুর রহমান মাস্টার যুগান্তরকে বলেন, আমার ভাইসহ দুইজনের নাম একটি মামলায় ঢুকানো হয়েছে। ওই নাম কাটাতে থানায় গিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, আমি মূলত ওসির রুমে পাশের চেয়ারে বসেছিলাম।
জানা গেছে, ৫ই আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর আশুলিয়া থানায় লাশ পোড়ানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এরপর থেকে থানা পুলিশ মুলত নিস্ক্রিয়।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, উনি (জিল্লুর রহমান) ওসির রুমে বসেছিলেন। ওসি যেহেতু নেই, তাই ওসির আগের চেয়ার সরিয়ে অন্য একটি চেয়ার দেওয়া হয়েছে ওই রুমে। আমি থানায় ছিলাম না। পরে গিয়ে আমি তার পাশে বসি। আপনারা যা ভালো মনে করেন, তাই লেখেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। আপনি ঢাকা জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তবে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মুঈদের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এদিকে শুধু আশুলিয়ায় নয়, লক্ষ্মীপুরেও কথিত হত্যা ও অস্ত্র মামলা থেকে নাম বাদ দিতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে কৃষকদল নেতার বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি কথোপকথনের মোবাইল কল রেকর্ডিং স্থানীয়ভাবে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় গত বুধবার অভিযুক্তকে কারণ দর্শানো (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে কৃষকদল।