সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে সিনহা গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। এসময় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা।
বুধবার বিকেল থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখে। রাত সাড়ে ৮ পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজট ছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে টিয়ার গ্যাস ও পরে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে ২জন পুলিশসহ ২০জন শ্রমিক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। রাত ৯টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।
এর আগে সকালে তাদেরকে বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা বলেছিল মালিক পক্ষ। পরে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করে বেতন না পেয়ে তারা সড়ক অবরোধ করে। এসময় শিল্প পুলিশের সাথে প্রথমে শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ সড়ক থেকে অবরোধকারীদের সরানোর চেষ্টা করলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে।
পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে শিল্প পুলিশ ও জেলা পুলিশ তাদের অবরোধ তুলে নিতে বললে শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে টিয়ার গ্যাস ও পরে প্রায় ৫০ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে। অবরোধে অংশ নেয়া শ্রমিক রায়হান, আমীর, নোমান জানায়, লকডাউন শুরুর থেকেই বেতন বকেয়া রয়েছে। সকালে মালিকপক্ষ থেকে তিন মাসের বকেয়া বেতন দেয়ার কথা বলেছিল। তাই সকাল থেকে আমরা বকেয়া বেতনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বিকেল পর্যন্ত মালিক পক্ষের কোন সাড়া না পেয়ে রাস্তা অবরোধ করেছি। এছাড়া অবরোধের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকা সিলেট, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এ ছাড়া ঢাকামুখী যান চলাচল বন্ধ হয়ে সড়কের চারপাশে ব্যাপক যানজট দেখা দিয়েছে।
এদিকে অবরোধে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে সোনারগাঁ থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশের সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন এবং তারা শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। অবরোধ তুলে নিতে বার বার অনুরোধ করে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। শ্রমিকদের দাবি, তিন মাসের বকেয়া বেতন দেয়ার কথা বলে তাদের সকাল থেকে অপেক্ষা করিয়ে এখনো বেতন দেওয়া হয়নি।
সোনারগাঁ থানার ওসি তদন্ত শফিকুল ইসলাম জানান, মারমুখি শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ বাধ্য হয়ে টিয়ার গ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে। তবে শ্রমিকদের দাবি পুলিশের গুলিতে ২০ জনেরও বেশী শ্রমিক আহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৮ জনই গুলি বিদ্ধ। তবে শ্রমিকরা আহতদের নাম ঠিকানা জানাতে পারেনি। কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, শ্রমিকদের অবরোধের কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অবরোধ প্রত্যাহার হওয়ার যান চলাচল শুরু হয়েছে।