বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনে যে দেশগুলোর ভূমিকা সবচেয়ে কম, সেই দেশগুলোকেই যে বেশি ভুগতে হচ্ছে, তা বিশ্বনেতাদের সামনে আবার তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকালে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের এক বৈঠকে তিনি এই বিষয়টি তুলে ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে আরও সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌছার পর এটাই ছিল তার প্রথম কর্মসূচি।
এই বৈঠকের আয়োজন করায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো বিশ্বে নগন্য পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ করে,অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার তারাই।”
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃদেশীয় প্যানেলের সর্বশেষ প্রতিবেদন ভবিষ্যতের যে বিষাদময় চিত্র তুলে ধরেছে, সবাইকে সতর্ক হতে তা তুলে ধরেন তিনি।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যদি পৃথিবীর তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায়, তাহলে স্থায়ী ক্ষতির শঙ্কা।
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এবং ক্ষতি প্রশমনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হওয়ার পরও সীমিত সম্পদ নিয়ে বাংলাদেশে ক্ষতি প্রশমনের ক্ষেত্রে বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে।
জলবায়ু ক্ষতি কাটাতে বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনা ইউএন ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি) এ দেওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি একই সঙ্গে বলেন, “আমরা ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছি। যার মূলে রয়েছে পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি, ক্ষতি প্রশমনের অবকাঠামো তৈরি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার।
“জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে জলবায়ু সহনশীল দেশের পথে এগোচ্ছি আমরা, আর আমাদের লক্ষ্য এই পথেই সমৃদ্ধ দেশ হওয়া,” বলেন শেখ হাসিনা।
জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে এই দেশগুলোর স্বার্থ আদায়কেই বাংলাদেশ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
‘গ্লোবাল সেন্টার ফর অ্যাডাপটেশন’ এর আঞ্চলিক দপ্তর ঢাকায় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু ক্ষতি কাটাতে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টায় অন্য দেশগুলোকেও সহযোগিতা করে যাবে বাংলাদেশ।