সময়, ইনিংস, ম্যাচ বদলে গেল; কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যর্থ হওয়ার গল্পটা থেকে গেল একই। অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে আউট হলেন বেশ কয়েকজন।
তাতে ইনিংস হারের শঙ্কা নিয়েই শেষ করতে হয়েছে সেন্ট লুসিয়া টেস্টের তৃতীয় দিন। মাটি হয়ে গেছে পেসার খালেদ আহমেদের টেস্টে প্রথম পাঁচ উইকেট পাওয়ার উৎসব।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে ইনিংস হারের লজ্জা থেকে বাঁচতে এখনও বাংলাদেশকে করতে হবে ৪৩ রান, হাতে আছে ৪ উইকেট। নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২৩৪ রানে অলআউট হওয়ার পর ৪০৮ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমেও ৬ উইকেট হারিয়ে করেছে ১৩২ রান।
এদিন ব্যাটিংয়ে হতাশার গল্পের শুরুটা হয় তামিম ইকবালকে দিয়ে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার দলের অন্যতম বড় ভরসা, তিনি জানেন নিশ্চয়ই। কিন্তু তার আউট হওয়ার ধরন তেমন কিছু বলছে না। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে কেমার রোচকে উইকেট দিয়ে এসেছেন তিনি। ৮ বলে ৪ রান করা তামিমকে ফিরিয়ে টেস্টে নিজের ২৫০তম উইকেট পেয়েছেন রোচ।
তামিমের উদ্বোধনী সঙ্গী মাহমুদুল হাসান জয় শুরুতে একটু দেখেশুনে খেলেন। খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে কি না, রোচকে দুই বলে চার মারলেন তিনি। এরপরই হলেন পরাস্ত। গুড লেন্থে পড়া রোচের বেরিয়ে যাওয়া বলে স্লিপে দাঁড়ানো ব্ল্যাকউডের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৩ চারে ২১ বলে ১৩ রান করেন জয়।
তিন নম্বরে খেলতে নামা নাজমুল হোসেন শান্তর আগেই ফিরে যান এনামুল হক বিজয়। এবারও প্রথম ইনিংসের মতো আম্পায়রস কলের স্বীকার হয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে যান আট বছর পর টেস্ট খেলতে নামা এই ব্যাটার। ৭ বলে ৪ রান করেন তিনি।
শান্তকে শুরুতে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্যই মনে হচ্ছিল। কিন্তু তিনিও উইকেট উপহার দিয়ে আসেন একরকম। ৯১ বলে ৪২ রান করে আলজেরি জোসেফের বল তাড়া করে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।
লিটন দাস ও সাকিব আল হাসানও নিজেদের ইনিংসকে লম্বা করতে পারেননি। ৩২ বলে ১৯ রান করে লিটন ও ৩২ বলে ১৬ রান করে আউট হন সাকিব। এরপর কিছুক্ষণ নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিং করার পর নামে বৃষ্টি। ১৪ বলে ১৬ রান করে সোহান ও ১৩ বলে ০ রান করে অপরাজিত আছেন মিরাজ।
এর আগে খালেদ আহমেদের ৫ উইকেটের কল্যাণে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করতে পারে বাংলাদেশ। ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৪০ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেঞ্চুরি করা মেয়ার্সের ব্যাটে চড়ে দারুণ কিছুর স্বপ্ন দেখছিল তারা। খালেদের উইকেট তখন ছিল দুটি।
দিনের শুরুতে দুই উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটার জশুয়া ডি সিলভাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এর আগে ১১৫ বলে ২৯ রান করেন তিনি।
এরপর ৯ বলে ৬ রান করা আলজারি জোসেফকে আউট করেন খালেদ আহমেদ। তার শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে দাঁড়ানো লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন জোসেফ।
এরপরই সবচেয়ে বড় উইকেটটা নেন খালেদ। সেটাও দারুণ এক বলে। কিছুটা কাটার ধরনের বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করার পথে বাঁধা হয়ে থাকা মেয়ার্স ক্যাচ তুলে দেন শরিফুল ইসলামের হাতে। ২০৮ বলে ১৪৬ রান করে আউট হন মেয়ার্স।
এরপরই শুরু হয় খালেদের পাঁচ উইকেটের অপেক্ষা। শেষ ব্যাটার জেডন সিলসকে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ বানিয়ে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন খালেদ। এর আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনবার পাঁচ উইকেটের স্বাদ পেলেও টেস্টে পেলেন এই প্রথম।