রাজনীতি

গাজীপুরে জাহাঙ্গীরকে নিয়ে ‘মাথা ঘামাচ্ছে না’ আওয়ামী লীগ: মায়া

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমন্বয় টিমের প্রধান মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জোর দিচ্ছেন দলের ঐক্যে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাঠে থাকা সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ‘ভাবছে না’ বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

ওই নির্বাচন নিয়ে দলের সমন্বয় টিমের এক বৈঠক শেষে মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে মাথা ‘ঘামাচ্ছে না’ আওয়ামী লীগ।

“২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় নির্বাচনের আগে এ নির্বাচন দেশবাসীর জন্য, আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ হওয়ার জন্য আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

ঢাকার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সকালে এই বৈঠক হয়। দুপুরে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন সমন্বয় টিমের প্রধান মায়া।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন প্রবীণ নেতা আজমত উল্লা খান। তার মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় দল মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক পাবেন তিনি।

এদিকে গতবারের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর এবারের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের কাছে নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন।

মেয়র পদে নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মা জায়দা খাতুনের মনোনয়ন পত্রও জমা দেন জাহাঙ্গীর।

ঋণ খেলাপির কারণে রোববার জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিলের কথা জানান গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। তবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেছেন, “কোনো অদৃশ্যের চাপে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছেন কিনা জানি না। তবে আমি ন্যায়বিচার পেতে আপিল করব। প্রয়োজনে আমি সুপ্রিম কোর্ট– হাই কোর্টে যাব। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে চাই।”

এ নির্বাচনে দলের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে জয়লাভের প্রত্যাশার কথা বলছেন আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

তিনি বলেন, “গাজীপুরের ভোটার সংখ্যা প্রায় ১২ লাখের কাছাকাছি, নয়টি থানা, ৪৮০টি কেন্দ্র, ৫৭ ওয়ার্ড। একটা বিশাল এলাকা। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে গেলে বিশাল কর্মীবাহিনী দরকার। তাই আমরা গাজীপুরে সর্বস্তরের জনগণ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার পক্ষের সকল মানুষকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করে এই নির্বাচনে জয়লাভ করতে চাই।”

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমন্বয় টিমের প্রধান সমন্বয়ক মায়া বলেন, “নির্বাচন পরিচালনার জন্য সেখানে আমাদের একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকবে। সেখান থেকে আমরা এটা নির্বাচন পরিচালনা করব৷ নির্বাচন পরিচালনার জন্য থানাভিত্তিক আমাদের কমিটি হবে। সেন্টার ভিত্তিক কমিটিও হবে।

“এবার স্তরে স্তরে আমরা কমিটিগুলো সাজাব। ৪৮০ এর মধ্যে বেশিরভাগ কমিটি হয়ে গেছে। আগামী ৯ তারিখের আগে নির্বাচনের সব কাজ আমরা শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।”

দলীয় প্রার্থীর জয়ের প্রত্যাশা জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রত্যেকে যেন ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থায় আমরা করতে চাই। আশা করি আমাদের নৌকার বিজয় হবে।

“ভোটের মধ্য দিয়ে আমরা জয়লাভ করতে চাই৷ সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, আগুন সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে কেউ যেন নির্বাচনে তার জন্য আমাদের কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *