জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশন (পিবিসি)-এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা। জাতিসংঘের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে পিবিসি চেয়ার ও ভাইস চেয়ারদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
পিস বিল্ডিং কমিশন (পিবিসি) হচ্ছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের একটি আন্ত:রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সংস্থা।
এই সংস্থা বিভিন্ন সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে শান্তি বিনির্মাণে কাজ করে থাকে। যেন সংঘাতের পুনরাবৃত্তি রোধ করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকোসক) থেকে নির্বাচিত সদস্যসহ ৩১ সদস্যের সমন্বয়ে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পিবিসি। জাতিসংঘে শীর্ষ অর্থ প্রদানকারী ও শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলো এই কমিশনের সদস্য।
নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, আজ খুবই আনন্দের বিষয় যে, দশ বছর পর বাংলাদেশ আবারো পিস বিল্ডিং কমিশনের চেয়ার পদে নির্বাচিত হয়েছে। এর আগে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত থাকাকালীন এই পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবারই প্রথম একজন নারী মর্যাদার এই পদটিতে নির্বাচিত হলেন, যা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গৌরবের।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, পিবিসির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়া শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেয়ারই পরিস্কার স্বীকৃতি। কারণ বিশ্বের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কিছু অঞ্চলে শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশ দীর্ঘসময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় উল্লেখযোগ্য এই অবদান রেখে চলেছে।
কোভিড মহামারীর এই সময়টায় যখন গোটা দুনিয়ায় শান্তি রক্ষা, শান্তি বিনির্মাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে, ঠিক তেমনি একটি সময়ে পিবিসি পরিচালনার জন্য সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশের প্রতি যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে, তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। কোভিড-১৯ এর এই সময়টায় বৈশ্বিক সংহতি রক্ষায় বিশেষ মনোযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
সংঘাতর্পূণ দেশ বা অঞ্চলে শান্তিবিনির্মাণ সক্ষমতাসমূহের উন্নয়নে শান্তিরক্ষীরা যে গুরুত্বর্পূণ ভূশিকা রেখে চলেছে তা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা যেসব দেশে নিয়োজিত সেই দেশগুলোর উন্নয়নের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখে চলেছে। শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবসময়ই তা গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ণ করবে।
পিবিসি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশ এর সদস্য। ২০১২ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এর সভাপথি নির্বাচিত হয়েছিল।