খেলাধুলা

জিম্বাবুয়ে সফরে টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে সোহান

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো অধিনায়কত্ব করার সুযোগ এই কিপার-ব‍্যাটসম‍্যানের সামনে।

ব‍্যাট হাতে কাটছে বাজে সময়। দলও আটকে ব‍্যর্থতার চক্রে। দুইয়ে মিলিয়ে নেতৃত্বের পাশাপাশি মাহমুদউল্লাহর দলে থাকা নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। কঠিন সময় কাটানো অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব‍্যাটসম‍্যানকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে জিম্বাবুয়ে সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে। তার অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব পেয়েছেন কিপার-ব‍্যাটসম‍্যান নুরুল হাসান সোহান।

জিম্বাবুয়ে সফরে যাচ্ছেন না সাকিব আল হাসান। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের পুরো সফর থেকেই বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারকে।

হজে যাওয়ার জন‍্য ওয়েস্ট ইন্ডিজে সবশেষ সিরিজে না খেলা অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব‍্যাটসম‍্যান মুশফিকুর রহিমও নেই জিম্বাবুয়ে সফরের টি-টোয়েন্টি দলে।

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দল: মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক, লিটন দাস, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক), শেখ মেহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, মোসাদ্দেক হোসেন, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, পারভেজ হোসেন।

সবশেষ সিরিজের দলে পরিবর্তন দুটি। ১৫ জনের দলে নতুন মুখ বিস্ফোরক ওপেনার পারভেজ হোসেন। চোট কাটিয়ে এই সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন পেসার হাসান মাহমুদ।

এখনও সেরে না ওঠায় টি-টোয়েন্টি দলে নেই মিডল অর্ডার ব‍্যাটসম‍্যান ইয়াসির আলি চৌধুরি।

রাজধানীর একটি হোটেলে শুক্রবার টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে বসেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস। ছিলেন জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ ও তিন নির্বাচক।

বৈঠক শেষে গণমাধ‍্যমকে জালাল জানান, কেবল জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন‍্যই নেতৃত্ব পেয়েছেন সোহান।

“টি-টোয়েন্টিতে (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ আমাদের অধিনায়ক ছিল। কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলছিল অধিনায়কত্ব ইস্যু নিয়ে। সম্মানের সঙ্গে আমরা রিয়াদকে ডেকেছিলাম, টি-টোয়েন্টি দল নিয়ে আলাপ করেছি। তার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এবার আমরা একটা নতুন দল পাঠাতে চাচ্ছি জিম্বাবুয়েতে। এর মধ্যে কিছু সিনিয়র খেলোয়াড়ও থাকছে না। আসলে দেখার জন্য তাদেরকে (তরুণদের) পাঠানো হচ্ছে।”

“এই দলটাকে সামলানোর জন্য সোহানকে অধিনায়কত্ব দিচ্ছি। সেটা আমরা আজকে মাহমুদউল্লাহকে জানিয়ে দিয়েছি। মুশফিকও জানে, সাকিবও জানে। তাদের জায়গায় আমরা নতুন খেলোয়াড় নিয়ে চেষ্টা করছি। এটা শুধু জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য দেখতে চাচ্ছি তাদের পারফরম্যান্স কি হয়। সেটা দেখার জন্য আপনারা বলতে পারেন নতুন ব্র্যান্ডের একটা দল যাচ্ছে।”

এই দলকে নিয়ে খুব বেশি দূরে দেখতে চান না জালাল।

“এশিয়া কাপের ভাবনায় তারা (মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক) আছে। পরেরটা আমরা পরে চিন্তা করব। শুধুমাত্র জিম্বাবুয়েতে আমরা এই টি-টোয়েন্টি দলটাকে দেখতে চাচ্ছি। আমরা এটাকে পরীক্ষামূলক দল বলছি না, কারণ এই সংস্করণে আমরা ভালো করছি না। সামনে ভালো করতে পারব কি না আমরা জানি না। তবে আমরা চেষ্টা করছি। দেখি আমরা, নতুনরা কী করে।”

জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকা করার লড়াইয়ে থাকা সোহান ঘরোয়া ক্রিকেটে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ। উইকেটের পেছনে দারুণ তৎপর। বোলার ও ফিল্ডারদের অনুপ্রাণিত করে যান পুরোটা সময়। তাকে নেতৃত্বে আনার পেছনে এসবেরই বড় ভূমিকা থাকার কথা জানান জালাল।

“সোহান ঘরোয়া ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিয়েছে। ওর মধ‍্যে আমরা লিডারশিপ কোয়ালিটি দেখেছি। ঘরোয়া ক্রিকেটে সে পরীক্ষিত একজন অধিনায়ক। ও অভিজ্ঞ এবং অনুপ্রাণিত করার সামর্থ‍্য ওর আছে।

টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ জানান, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক ও সাকিবকে জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

“সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ এই সিরিজে নাই, মনে হয় সোহানই সবচেয়ে সিনিয়র। ওর নেতৃত্ব দেওয়ার সামর্থ‍্য আছে। মাঠে দেখি ও দলকে কীভাবে অনুপ্রাণিত করে। রিয়াদকে আমরা এখনই সরিয়ে দিচ্ছি না। ও ফিরবে, সবারই বিরতির দরকার পড়ে। রিয়াদ ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে।”

“বিভিন্নজনকে বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করছি। আমরা ওয়ানডেতে সহ-অধিনায়ক দেব, সেটা হয়তো অন‍্য কেউ হবে। লিডার্স তৈরি করা আমাদের জন খুব গুরুত্বপূর্ণ। সোহান এখান থেকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক নয়। সে শুধু এই সিরিজের জন‍্য অধিনায়ক।”

এশিয়া কাপের আগে কয়েক জন খেলোয়াড়কে পরীক্ষা করে দেখতে চান প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। তাদের একজন টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব‍্যাটসম‍্যানদের মধ‍্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডধারী পারভেজ। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে ফরচুন বরিশালের হয়ে ৪২ বলে সেঞ্চুরি করেন যুব বিশ্বকাপজয়ী এই ওপেনার।

“ইমন তরুণ খেলোয়াড়। আমাদের এইচপিতে ওর নার্সিং হচ্ছে। ওর ব‍্যাপারে যা পাচ্ছি, সবই ইতিবাচক। পরশু দিনও একটা ম‍্যাচে ও সেঞ্চুরি করেছে এবং ও খুব ভালো অবস্থানে আছে। ওর কাছ থেকে আমরা এই সিরিজে ভালো কিছু আশা করছি।”

চোটের জন‍্য লম্বা সময় মাঠের বাইরে ছিলেন পেসার মাহমুদ। ২০২১ সালের ২০ মার্চ দেশের হয়ে সবশেষ খেলেন তিনি। ২০২০ সালে মার্চে খেলেন একমাত্র টি-টোয়েন্টি। এই সংস্করণে নিজের সামর্থ‍্য দেখানোর সুযোগ তার সামনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *