জাতীয়

জুলাই আন্দালনে বিএনপি-জামায়াত নিয়ে যা বলেছে জাতিসংঘ

বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিক্ষোভ চলাকালে প্রকাশ্যে সহিংসতার ডাক দেয়নি। এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে জাতিসংঘ।

একইসঙ্গে তারা বিএনপি এবং জামায়াত নেতাদের এমন কোনো বক্তব্য খুঁজে পায়নি, যেখানে তারা সমর্থকদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, পুলিশ বা সরকারি স্থাপনার ওপর হামলা না চালানোর আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা এই প্রতিবেদন বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের সহজবোধ্যভাবে বোঝার সুযোগ করে দিতে  ইংরেজি থেকে হুবহু বাংলায় অনুবাদ করেছে। বাংলায় অনুদিত সেই প্রতিবেদনটি ধারাবাহিকভাবে পাঠকদের কাছে সংবাদ আকারে তুলে ধরা হচ্ছে। আজ থাকছে সেই প্রতিবেদনের ১১তম পর্ব।

ওএইচসিএইচআরের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিল একই ছাতার নিচে পরিচালিত আন্দোলন, যা বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র শাখাসহ বিভিন্ন ধরনের ছাত্রদের একত্রিত করেছিল।

১৮ জুলাই থেকে পুরোপুরি অবরোধের মাধ্যমে প্রধান সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থার কৌশলগতভাবে এবং দীর্ঘস্থায়ীভাবে অচলাবস্থা সৃষ্টির জন্য আন্দোলন সম্প্রসারণের ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এই আহ্বানের প্রতিধ্বনি করে এবং তাদের বহুসমর্থকসহ সাধারণ জনগণের বড় একটি অংশ এই ডাকে সাড়া দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে, বিক্ষোভে সহিংসতার ঘটনা পরিকল্পিত এবং বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল। তারা প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন যে, বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ স্থাপনা, সরকারি ভবন এবং পরিবহন অবকাঠামোতে হামলা চালানো হয়েছে। তবে ওএইচসিএইচআর এই দাবির সমর্থনে কোনো তথ্য পায়নি। বরং, এটা অনুমান করা যায় যে, দেশব্যাপী পুলিশ এবং পূর্ববর্তী সরকার দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে যে গুরুতর বলপ্রয়োগ করেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্নস্থানে জনতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং কারো নির্দেশনা ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে পুলিশ ও সরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। বিশেষ করে, যেসব এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে পুলিশের নিপীড়ন বেশি ছিল, যেমন যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও আশুলিয়া, সেখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রতিশোধমূলক হামলা তীব্র ছিল।

ওএইচসিএইচআর যতটুকু নিশ্চিত হতে পেরেছে, বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিক্ষোভ চলাকালে প্রকাশ্যে সহিংসতার ডাক দেয়নি। অন্যদিকে তাদের সমর্থকদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, পুলিশ বা সরকারি স্থাপনার ওপর হামলা না চালানোর আহ্বান জানিয়েছে, এমন কোনো বক্তব্যও খুঁজে পায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *