জাতীয়

টরন্টোর আকাশে বিমান উড়বে ২৬ মার্চ থেকে

অবশেষে স্বাধীনতা দিবসে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-টরন্টো সরাসরি ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা।

সেজন্য সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে গুছিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটারে ‘বিমান হাফ-ম্যারাথন’ প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আগামী ২৬ মার্চ টরন্টোতে বিমানের ফ্লাইট যাত্রা করবে।”

এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবরে টরন্টোতে সরাসরি ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।তবে মহামারীর কারণে সেই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়ন করতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি।

ঢাকা-টরন্টো সরাসরি বিমান যোগাযোগ শুরুর বিষয়ে আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিমানের এই রুট চালু হলে কানাডার পাশাপাশি নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশিরাও উপকৃত হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ২০১৩ সালে এ বিষয়ে সুপারিশ করার পর তখনকার বিমানমন্ত্রী ফারুক খান কানাডার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা জানিয়েছিলেন।

২০১৭ সালে ঢাকায় কানাডার হাই কমিশনারের সঙ্গে তখনকার বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সঙ্গে এক বৈঠকও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু ফ্লাইট আর চালু হয়নি।

বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী শুক্রবার বলেন, “আমরা ঢাকা টু নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়েও অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। ঢাকা থেকে জাপানের নারিতাতে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে সব কিছু চূড়ান্ত হয়েছে।

“শুধু করোনাভাইরাসের কারণে কার্যক্রম থেমে আছে। পৃথিবীর অন্য আন্তর্জাতিক গন্তব্যগুলোতেও বিমান অদূর ভবিষ্যতে ডানা মেলবে।”

সেবার মান নিয়ে ‘আপস করা হবে না’ মন্তব্য করে মাহবুব আলী বলেন, “বাংলাদেশের পতাকা বহন করে বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে বিমান উড়ে যায়। আমরা চাই সেই বিমান মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।

“যে কোনো ধরনের অভিযোগ আমাদের জানাবেন। ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিমানের সেবার মান নিয়ে আমরা কোনো আপস করবো না।”
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেছিলেন, “২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে ঢাকা–টরেন্টো ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আগাচ্ছি। এই রুটে ফ্লাইট চালাতে গিয়ে ১৭টি শর্ত ছিল। এর মধ্যে ১৫টি পূরণ করা হয়েছে। বাকি দুটি শর্তপূরণের কার্যক্রম চলমান আছে। এরপর টরেন্টোতে পরীক্ষামূলক ফ্লাইট যাবে।”

বিমানের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত হাফ-ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের ১৮৬২ অ্যাথলেট। এর মধ্যে বিদেশি প্রতিযোগী ছিলেন ২৫ জন।

প্রতিযোগিতায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার পুরুষ হাফ ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন স্নিগ্ধ, দ্বিতীয় হয়েছেন আলামিন এবং তৃতীয় হয়েছেন গোলাম রাহাত তোফায়েল।

সাড়ে ৭ কিলোমিটার নারী হাফ ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন আফসানা হালিমা, দ্বিতীয় হয়েছেন স্নেহা জান্নাত এবং তৃতীয় হয়েছেন সাদিয়া আক্তার রিনা।

২১ কিলোমিটার নারী হাফ ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন নাসরিন বেগম, দ্বিতীয় হয়েছেন হামিদা আক্তার জেবা এবং তৃতীয় হয়েছেন মৌসুমি আক্তার।
২১ কিলোমিটার পুরুষ হাফ ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন আসিফ বিশ্বাস, দ্বিতীয় হয়েছেন লিউক জেনারেল শো। তিনি চীনের বেইজিং থেকে সাইকেল চালিয়ে ঢাকায় এসেছেন। তৃতীয় হয়েছেন সামির হাসান খান।

প্রতি বছর এ ম্যারাথন আয়োজন করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মার্চ আমাদের অহংকারের মাস। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। সুতরাং ভিন্ন আঙ্গিকে আজকের ম্যারাথনের আয়োজন। এখন থেকে প্রতিবছর বিমানের আয়োজনে আরও বড় পরিসরে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।”

প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বিমান পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *