খেলাধুলা

বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে আফগানিস্তান

বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে আফগানিস্তান

দারুণ বোলিংয়ে ছোট পুঁজি নিয়েও বাংলাদেশকে হারাল আফগানিস্তান। ভারতের সঙ্গী হয়ে ‘১’ নং গ্রুপ থেকে সেমি-ফাইনালে পৌঁছে গেল তারা।

সেন্ট ভিনসেন্টে আগে ব্যাট করে ১১৫ রান করে আফগানরা। কয়েক দফার বৃষ্টিতে ১৯ ওভারে ১১৪ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ। ৭ বল বাকি থাকতেই ১০৫ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে ৮ রানে জেতে আফগানিস্তান।

বাংলাদেশের জয়ের ওপর নির্ভর করছিল অস্ট্রেলিয়ার ভাগ্য। ১২.১ ওভারে জয় পেলে বাংলাদেশই চলে যেত সেমি-ফাইনালে। আর এরপর জিতলে সেমির টিকেট পেত অস্ট্রেলিয়া। কোনোটিই হতে দেয়নি আফগানরা। নিজেরাই জিতে প্রথমবারের মতো চলে গেছে সেমিতে।

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে রাশিদ খানের দল।

রান তাড়ায় একপ্রান্ত আগলে রেখে ৪৯ বলে ৫৪ রান করে অপরাজিত থাকেন লিটন কুমার দাস। আর কেউ ১৫ রানও করতে পারেননি।

অষ্টাদশ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানকে এলবিডব্লিউ করে আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন নাভিন উল হাক। ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নাভিনই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১১৫/৫ (গুরবাজ ৪৩, জাদরান ১৮, ওমারজাই ১০, নাইব ৪, নাবি ১, জানাত ৭*, রাশিদ ১৯*; তানজিম ৪-০-৩৬-০, তাসকিন ৪-১-১২-১, সাকিব ৪-০-১৯-০, মুস্তাফিজ ৪-০-১৭-১, রিশাদ ৪-০-২৬-৩)

বাংলাদেশ: (লক্ষ্য ১৯ ওভারে ১১৪) ১৭.৫ ওভারে ১০৫ (লিটন ৫৪*, তানজিদ ০, শান্ত ৫, সাকিব ০, সৌম্য ১০, হৃদয় ১৪, মাহমুদউল্লাহ ৬, রিশাদ ০, তানজিম ৩, তাসকিন ২, মুস্তাফিজ ০; নাভিন ৪-০-, ফারুকি ৩.৫-০-২৬-৪, নাবি ২-০-১৫-০, রাশিদ ৪-০-২৩-৪, নুর ৪-০-১৩-০, নাইব ২-০-৫-১)

ফল: ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে আফগানিস্তান ৮ রানে জয়ী


তাসকিনকে ফেরালেন নাভিন

নাভিন উল হাকের স্লোয়ার ডেলিভারি পিচে পড়ার পর নিচু হয়ে গেল বেশ। অনসাইডে খেলার চেষ্টায় তাসকিন আহমেদের ব্যাটে লেগে বল আঘাত করল স্টাম্পে। নবম উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

১৭.৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১০৫ রান। আফগানিস্তানের প্রয়োজন ১ উইকেট। বাংলাদেশকে করতে হবে ৮ বলে ৯ রান।

শেষ ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ক্রিজে। ৪৯ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত লিটন কুমার দাস।


লিটনের ফিফটি

বাকিদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি করলেন লিটন কুমার দাস। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ বলে ক্যারিয়ারের একাদশ পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৭ ইনিংস পর তার পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস এটি।

১৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৯৮ রান। নুর আহমেদের করা ওই ওভারের শেষ বলে আম্পায়ার্স কলের সৌজন্যে এলবিডব্লিউর হাত থেকে বেঁচে যান লিটন।

ফিরলেন তানজিদ, শান্ত ও সাকিব

পরপর দুই বলে শান্ত-সাকিবের বিদায়

নাজমুল হোসেন শান্তকে উইকেটে টিকতে দিলেন না নাভিন উল হাক। স্লোয়ার ডেলিভারি ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়লেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১ চারে ৫ বলে ৫ রান করলেন শান্ত।

বাংলাদেশের বিপদ বাড়িয়ে পরের বলেই ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন সাকিব আল হাসান। লেগ স্টাম্পের ডেলিভারি ব্যাটের সামনের কানায় লেগে ফিরতি ক্যাচ দিলেন তিনি। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় তালুবন্দী করলেন নাভিন।

৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৪ রান। লিটন কুমার দাস ৮ বলে ১৩ রানে অপরাজিত। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার।

আফগানিস্তানের ব্যর্থ রিভিউ

সেমি-ফাইনালের সমীকরণ

আফগানিস্তানকে ১১৫ রানে থামিয়ে প্রাথমিক কাজটা সেরেছেন বোলাররা। সেমি-ফাইনালের টিকেটের জন্য এবার দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাটসম্যানদের। ১২.১ ওভারের মধ্যে ১১৬ রান করতে পারলে গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে সেরা চারে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ।

 এছাড়া ১১৫ রান করে ছক্কা মারতে পারলে ১২.৫ ওভার পর্যন্ত সুযোগ থাকছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের। আর স্কোর সমান করে বাউন্ডারি মারলে সুযোগ থাকছে ১২.৩ ওভার পর্যন্ত।

বাংলাদেশের জিততে এর বেশি ওভার লেগে গেলে সেমিতে পৌঁছে যাবে অস্ট্রেলিয়া।

আর ম্যাচ জিতলে কিংবা বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও সেরা চারের টিকেট পাবে আফগানিস্তান।

 আপাতত বৃষ্টির কারণে শুরু হয়নি দ্বিতীয় ইনিংস। মাঠ শুকানোর কাজ করছেন মাঠকর্মীরা

আফগানিস্তানকে ১১৫ রানে থামাল বাংলাদেশ

১৯তম ওভারে কাটার-স্লোয়ারের মিশেলে অসাধারণ বোলিংয়ে মাত্র ১ রান দিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু শেষ ওভারে রাশিদ খানের কাছে জোড়া ছক্কা হজম করলেন তানজিম হাসান। ২০ ওভারে ১১৫ রানে পৌঁছে গেল আফগানিস্তান।

সেমি-ফাইনালের টিকেট পেতে ১২.১ ওভারের মধ্যে এই লক্ষ্য তাড়া করতে হবে বাংলাদেশের।

করিম জানাতের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১৪ বলে ২২ রান যোগ করেন রাশিদ। আফগান অধিনায়ক ৩ ছক্কায় করেন ১০ বলে ১৯ রান। তার এই ক্যামিওতেই মূলত একশ পেরোয় আফগানিস্তান।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৫৮ রান যোগ করেন আফগানরা। মন্থর ব্যাটিংয়ে ১৮ রান করতে ২৯ বল খেলেন ইব্রাহিম জাদরান। আরেক ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ৫৫ বলে খেলেন ৪৩ রানের ইনিংস।

দারুণ বোলিংয়ে এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, একশর আগেই আফগানিস্তানকে আটকাতে পারবে বাংলাদেশ। কিন্তু রাশিদের শেষের ঝড়ে লড়াই করার পুঁজি পেয়ে যায় আফগানরা।

এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে ফেরা তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে এক মেইডেনসহ মাত্র ১২ রানে নেন ১ উইকেট। রিশাদ হোসেনের ৩ উইকেটের জন্য খরচ ২৬ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১১৫/৫ (গুরবাজ ৪৩, জাদরান ১৮, ওমারজাই ১০, নাইব ৪, নাবি ১, জানাত ৭*, রাশিদ ১৯*; তানজিম ৪-০-৩৬-০, তাসকিন ৪-১-১২-১, সাকিব ৪-০-১৯-০, মুস্তাফিজ ৪-০-১৭-১, রিশাদ ৪-০-২৬-৩)

নাবিকে ফেরালেন তাসকিন

প্রথম তিন ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করলেও সাফল্য পাননি তাসকিন আহমেদ। ডেথে নিজের শেষ ওভার করতে এসে প্রথম উইকেট পেলেন এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে ফেরা ফাস্ট বোলার।

রিশাদের জোড়া আঘাত

নিজের শেষ ওভারে দুই উইকেট নিলেন রিশাদ হোসেন। দীর্ঘসময় ধরে খেলতে থাকা রহমানউল্লাহ গুরবাজের পর চার নম্বরে নামা গুলবাদিন নাইবকেও ফেরালেন তরুণ লেগ স্পিনার।

ওভারের প্রথম বল ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে ডিপ কভারে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেন ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৫৫ বলে ৪৩ রান করা গুরবাজ। তার স্ট্রাইক রেট ৭৮.১৮! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অন্তত ৪০ রানের সবচেয়ে মন্থর ইনিংস এটি।

দুই বল পর স্লগ করতে গিয়ে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন নাইব। এবার ডিপ কভার সীমানা থেকে অনেকটা পথ দৌড়ে সামনে লাফিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নেন সৌম্য। ১২ বলে ১০ রান করে ফেরেন নাইব।

১৭ ওভারে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৯৩ রান। ক্রিজে দুই ব্যাটসম্যান করিম জানাত ও মোহাম্মদ নাবি।

৪ ওভারে ২৬ রানে ৩ উইকেট নিলেন রিশাদ।

টিকতে পারলেন না ওমারজাই

রান আউটের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পরের বলেই আজমতউল্লাহ ওমারজাইকে কট বিহাইন্ড করলেন মুস্তাফিজুর রহমান।

জাদরানকে ফেরালেন রিশাদ

রিশাদ হোসেনের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি ইনসাইড আউট শট খেললেন ইব্রাহিম জাদরান। ঠিকঠাক টাইমিং পেলেন না। লং অফ থেকে বাঁ দিকে অনেকটা দৌড়ে দারুণ ক্যাচ নিলেন তানজিম হাসান।

৫৯ রানে ভাঙল আফগানিস্তানের উদ্বোধনী জুটি। ১ চারে ২৯ বলে ১৮ রান করে ফিরলেন জাদরান। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান আজমতউল্লাহ ওমারজাই।

১১ ওভারে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫৯ রান। ৩৫ বলে ২৮ রানে খেলছেন গুরবাজ।

জুটিরপঞ্চাশে জাদরান-গুরবাজের রেকর্ড

আরও একবার উদ্বোধনী জুটিতে পঞ্চাশ রান যোগ করলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। চলতি বিশ্বকাপে এ নিয়ে চার ম্যাচে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়লেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার।

টুর্নামেন্টের এক আসরে উদ্বোধনী জুটিতে এটিই সর্বোচ্চ পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটির রেকর্ড। এর আগে ভিন্ন পাঁচটি জুটি তিনবার করে পঞ্চাশ বা তার বেশি রানের জুটি গড়েছিল।

এক বিশ্বকাপে যে কোনো উইকেটে জুটি বেধে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডও গড়েছেন গুরবাজ ও জাদরান। চলতি আসরে সাত ম্যাচে এখন পর্যন্ত তাদের জুটির সংগ্রহ ৪৩৭ রান। ২০২১ সালে বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান জুটি বেধে করেছিলেন ৪১১ রান।

৯ ওভারে আফগানিস্তানের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৪ রান। গুরবাজ ৩০ বলে ২৫ ও জাদরান ২৪ বলে ১৬ রানে অপরাজিত।

পাওয়ার প্লেতে আফগানিস্তানের ২৭

প্রথম ৬ ওভারে কোনো উইকেট নিতে পারল না বাংলাদেশ। অবশ্য আফগানিস্তানও তেমন সুবিধা করতে পারেনি। পাওয়ার প্লেতে তাদের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৭ রান।

রহমানউল্লাহ গুরবাজ ২১ বলে ১২ ও ইব্রাহিম জাদরান ১৫ বলে ১০ রানে অপরাজিত।

সেন্ট ভিনসেন্টের চ্যালেঞ্জিং উইকেটে শুরু থেকেই দেখা মিলেছে অসম বাউন্সের। কিছু ডেলিভারি অতিরিক্ত লাফিয়েছে। কয়েকটি আবার একদম নিচু হয়ে গেছে স্টাম্প ঘেঁষে। তবে কোনোভাবে উইকেট বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছে আফগান ওপেনাররা।

বাংলাদেশের ব্যর্থতার দায়ও অবশ্য আছে। পঞ্চম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে ৯ রানে থাকা ইব্রাহিমের ক্যাচ নিতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়।

জাদরানের ক্যাচ ছাড়লেন হৃদয়

পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসে সুযোগ তৈরি করলেন সাকিব আল হাসান। অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বল সজোরে মারলেন ইব্রাহিম জাদরান। শর্ট কভারে মাথার ওপরের ক্যাচ নিতে পারলেন না তাওহিদ হৃদয়। ৯ রানে বেঁচে গেলেন জাদরান।

ব্যবহৃত পিচে ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষার অপেক্ষা

পিচ রিপোর্টে লিসা স্থালেকার ও পমি এমবাঙওয়া বলেছেন, ‘২৪ কিমি. প্রতি ঘণ্টায় বাতাস বইছে। এটি একটি বড় বিষয় হতে পারে। দুই পাশে ৬৭ ও ৭০ মিটার বাউন্ডারি। সোজা বাউন্ডারি ৮০ মিটার। আফগানিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া ম্যাচও এই উইকেটে খেলা হয়েছে। টুর্নামেন্টজুড়ে আমরা দেখেছি এখানে উইকেটে বাউন্স অসম। তাই দ্রুত রান করা কঠিন। সময় নিয়ে ইনিংস লম্বা করার পথে হাঁটতে হবে। স্পিনারদের জন্য ঠিক আছে, পেসারদের জন্য ঠিক আছে তবে ব্যাটসম্যানদের জন্য খুব কঠিন। বড় রানের ম্যাচ হয়তো দেখা যাবে না।

 আফগানিস্তানের অপরিবর্তিত একাদশ

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে স্মরণীয় জয়ের ম্যাচের একাদশে কোনো পরিবর্তন করেনি আফগানিস্তান। দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ছাড়া তাদের বাকি ৯ জনই বোলিং করতে পারেন।

পেস বিভাগে নাভিন উল হক, ফাজালহাক ফারুকির সঙ্গে গুলবাদিন নাইব, আজমতউল্লাহ ওমারজাই, করিম জানাত।। আর স্পিনে রাশিদ খানের নেতৃত্বে হাত ঘোরাতে পারেন মোহাম্মদ নাবি, নানগেলিয়া খারোটে, নুর আহমেদরা।

 আফগানিস্তান একাদশ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, গুলবাদিন নাইব, আজমতউল্লাহ ওমারজাই, মোহাম্মদ নাবি, করিম জানাত, রাশিদ খান, নানগেলিয়া খারোটে, নুর আহমেদ, নাভিন উল হক, ফাজালহাক ফারুকি।

একাদশে ফিরলেন তাসকিন-সৌম্য

সুপার এইটে শেষ ম্যাচের একাদশে জোড়া পরিবর্তন আনল বাংলাদেশ। শেখ মেহেদি হাসান ও জাকের আলির জায়গায় দলে ফিরলেন তাসকিন আহমেদ ও সৌম্য সরকার।

তাসকিনের অন্তর্ভুক্তিতে পেস বিভাগে শক্তি বাড়ল বাংলাদেশের। মিডিয়াম পেস বোলিং করতে দেখা যেতে পারে সৌম্যকেও। স্পিনে রিশাদ হোসেনের সঙ্গে থাকছেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ।

আগের ছয় ম্যাচের মতো আরও একবার বেঞ্চেই থাকতে হলো বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামকে।

বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ হাসান, লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, সৌম্য সরকার, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান।

 টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

আরও একবার টস হারল বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন আফগানিস্তান অধিনায়ক রাশিদ খান। জটিল সমীকরণ মেলানোর ম্যাচে রান তাড়া করতে হবে বাংলাদেশকে।

নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছেন, টস জিতলে তিনি আগে বোলিংই নিতেন। তাই চাওয়ামতো পেয়ে সেমি-ফাইনালে যাওয়ার সুযোগটা নিতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক।

 সেমি-ফাইনালের ক্ষীণ আশা নিয়ে আফগানিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ

সুপার এইটে প্রথম দুই ম্যাচ হারের পরও শেষ হয়ে যায়নি বাংলাদেশের সেমি-ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা। শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জটিল সমীকরণ মেলাতে পারলেই ইতিহাস গড়ে সেরা চারে উঠে যাবে বাংলাদেশ।

সেন্ট ভিনসেন্টে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টায় শুরু হবে খেলা। ম্যাচটি জিতলে অথবা এক পয়েন্ট পেলেও আর কোনো সমীকরণ ছাড়াই সেমি-ফাইনালে পৌঁছে যাবে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের সামনে জয়ের বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ যদি আগে ব্যাট করে ১৬০ রান করে এবং ৬২ রানে জিততে পারে; তাহলে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের পয়েন্ট হবে সমান ২। তখন অন্য দুই দলের চেয়ে নেট রানরেটে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশ যাবে সেমি-ফাইনালে।

আফগানিস্তান আগে ব্যাট করে যদি ১৬০ রানের স্কোর দাঁড় করায়, তাহলে ১২.৫ ওভারের মধ্যে তাড়া করতে পারলে নেট রান রেটে এগিয়ে সেরা চারের টিকেট পাবে বাংলাদেশ।

এই দুই ব্যবধানের কমে বাংলাদেশ জিতলে সেমিতে উঠে যাবে অস্ট্রেলিয়া। ন্যুনতম ব্যবধানে হারলেও সেমির স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে আফগানিস্তানের।

দুই দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান অবশ্য আফগানিস্তানের পক্ষে। ১১ ম্যাচের ৬টি জিতেছে তারা। বাংলাদেশের ৫ জয়ের একটি আবার ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে। টি-টোয়েন্টির বিশ্ব আসরে ওই একবারই মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল।

 

ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া হারায় এখনও সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ আছে বাংলাদেশের। অন্যদিকে সেমিতে যেতে জিততেই হবে আফগানদের। এমন সমীকরণ সামনে রেখে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচটি পরিণত হয়েছে অলিখিত এক ফাইনালে। যেখানে টসে জিতে বাংলাদেশকে ফিল্ডিংয়ে পাঠিয়েছে আফগানরা।

সবশেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া ২৪ রানে হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচটা ফিরে পেয়েছে প্রাণ। সমীকরণ বলছে সুপার এইটে কোনো জয় না পেলেও এখনও সেমিতে যেতে পারে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে আফগানদের হারিয়ে দিতে হবে নূন্যতম ৬২ রানের ব্যবধানে নতুবা রান তাড়া করতে হবে ১২.৫ ওভারের মধ্যেই। কাজটা আপাতত দৃষ্টিতে কঠিনই বটে। এরপরও একটা সুযোগ কিন্তু পাচ্ছে বাংলাদেশ। আফগানদের সমীকরণটা অবশ্য সহজ। সেমিতে যেতে জিততে হবে তাদের, আর হারলে বাদ।

এই সমীকরণ মেলানো বাংলাদেশের জন্য কঠিনই বটে। কেননা, সুপার এইটে বাংলাদেশ কোনো জয় না পেলেও আফগানরা তাদের সবশেষ ম্যাচে হারিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। যা তাদের করেছে আরও আত্মবিশ্বাসী। এমন আত্মবিশ্বাসী দলের সামনে বাংলাদেশের ম্যাচ জেতাটা তাই কঠিনই বটে।

তবে বাংলাদেশকে আফগানরা আশাবাদী করছে তাদের বিপক্ষে খেলা সবশেষ দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের জয়। তাছাড়া এই ফরম্যাটে আফগানদের সাথে বরাবরই বেশে ভালো ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচেও তাই সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা পেতে পারে বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *