ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা মানুষ কীভাবে পাবে, কারা পাবে এবং এর সংরক্ষণ ও বিতরণ করার বিষয়টি স্পষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কথা বলেননি। এর একটা সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ জনগণের সামনে প্রকাশ করা উচিত। টিকার জন্য সরকার নিজে সিরাম ইনস্টিটিউটকে টাকা না দিয়ে বেক্সিমকোর মাধ্যমে কেন দিচ্ছ? বেক্সিমকোর এখানে কত কমিশন আছে, সেটাও জানতে চাই।
রবিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। শনিবার বিকেলে একই জায়গায় অনুষ্ঠিত দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সারমর্ম তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখছি, এই বিষয়টা সরকারের সঙ্গে সরকার ডিল করছে অথবা সরকার সরাসরি সেই কোম্পানির সঙ্গে ডিল করছে। টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিতরণ ও পৌঁছানো একটা টেকনিক্যাল বিষয়। এটাকে জনগণের সামনে পরিষ্কার করে সরকারের রোডম্যাপ প্রকাশ করা দরকার। তারা কীভাবে এটা করতে চায় এবং জনগণকে আশ্বস্ত করা দরকার-এই টিকা তাদের কাছে কখন পৌঁছাচ্ছে।
তিনি বলেন, পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি- আজকালের মধ্যেই সরকার বেক্সিমকোর মাধ্যমে ৬০০ কোটি টাকা সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছে দেবে। এরপর তারা ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা দেবে। দেখা যাচ্ছে, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসবে। এটা অত্যন্ত অপ্রতুল। কে কখন পাবে, এটা জানতে পারছি না। আমরা শুনতে পেয়েছি, উচ্চপর্যায়ের মানুষের জন্য তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। খবর পেয়েছি, গুলশান ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাবসহ অন্যান্য ক্লাবে যারা সদস্য আছেন, তাদের নামের তালিকা করা হচ্ছে। আরও শুনতে পাচ্ছি, সরকারের উচ্চপদস্থদের জন্য তালিকা করা হচ্ছে, মন্ত্রীদের তালিকা করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ কীভাবে এই ভ্যাকসিন পাবে, কখন পাবে, সে বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য পাচ্ছি না।
করোনা ভাইরাসের টিকা সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ৪২৬ টাকা টিকার মূল্য পড়বে। এই মূল্য সরকার প্রদান করবে, নাকি জনগণকে দিতে হবে? সেই বিষয়টাও কিন্তু স্পষ্ট নয়। তিনি টিকা সংগ্রহ, বিতরণ, মূল্য, কতজনকে দেওয়া সম্ভব হবে, কাদের দেওয়া হচ্ছে। এর একটা রোডম্যাপ জনগণের সামনে প্রকাশের দাবি জানান।