সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরকারবিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আল জাজিরায় প্রচারিত একটি প্রতিবেদনের অন্যতম প্রধান চরিত্র সামিউল ওরফে জুলকারনাইন সায়েম খান ওরফে সামিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ।
রবিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) উপ-পরিদর্শক আফসার আহম্মদ।
তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার ঢাকার সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল, আশিক ইমরান ও স্বপন ওয়াহিদ।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালতে চারজনকে অব্যাহতির আবেদন করে তদন্ত সংস্থা। তারা হলেন- লেখক মুশতাক আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, জার্মান প্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন ও ফিলিপ শুমাখার।
এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষের মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করেন। পরদিন বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে (সিটিটিসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। গত ১৩ জানুয়ারি এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন- কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার ঢাকার সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদ। প্রমাণ না পাওয়ায় এজাহারভুক্ত আট আসামিকে অব্যাহতির আবেদন করে পুলিশ। তারা হলেন- মিনহাজ মান্নান, তাসনিম খলিল, সাংবাদিক সাহেদ আলম, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, জুলকারনাইন সায়েম খান, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ ও ফিলিপ শুমাখার।
২০২০ সালের ৫ মে র্যাব-৩ সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে একটি ফেসবুক পেজে আসামিরা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করেন, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। ওই পেজের অ্যাডমিন জুলকারনাইন এবং কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ, মুশতাক আহমেদ।
এজাহারে আরও বলা হয়, তাদের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোনে ‘আমি কিশোর’ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনা ভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে।