কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার ঘটনায় আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিক্ষোভ করেছিলেন। এ অবস্থায় তাদের অনেককে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। সেই সব প্রবাসীদের মুক্তির বিষয়ে সে দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
রোববার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অডিটোরিয়ামে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন। মতবিনিময়ের শুরুতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী অন্দোলনের সমর্থনে বেশ কয়েকটি দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। তার মধ্যে আরব আমিরাতে বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করা হয়, এমনকি জেলও দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে দেখছি। তারা কিছুতেই যেন সাফার না করে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আশা করছি আজ বা কালকের মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা নিজে কথা বলবেন তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। যাতে তারা সহায়তা পেতে পারে। অন্তত কোনো শাস্তি ছাড়া যেন তাদের মুক্তি দেয়া হয়। তারপর বাকিটুকু না হয় আমরা সহায়তা করার চেষ্টা করলাম।
তিনি (ড. ইউনূস) নিজেই উচ্চ পর্যায়ে কথা বলবেন, চেষ্টা করবেন তাদের যেন শাস্তির সম্মুখীন হতে না হয়।
তৌহিদ হোসেন বলেন, তারা হয়তো স্থানীয় আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। সে কারণে আমরা সেই দেশকে দোষারোপ করতে পারি না। তাদের যে আইন আছে সে অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু তাদের (প্রবাসী) সেন্টিমেন্ট যেটার কারণে তারা এটার পক্ষে এসেছে তখন তারা হয়তো সেই আইন-কানুনও ভুলে গেছে অনেকে। আমরা চেষ্টা করব তাদের যেন মুক্ত করতে পারি।
এ সময় প্রবাসীদের জন্য সেবার মানোন্নয়নে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীদের জন্য আরও উন্নত সেবা নিশ্চিতের বিষয়টিতে লক্ষ্য রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে আমিরাতের বেশ কয়েকটি রাস্তায় গত ১৯ জুলাই জমায়েত করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ সময় দাঙ্গা উসকে দেওয়ার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিন বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয় দেশটির আদালত।
এছাড়া অবৈধভাবে সেদেশে প্রবেশ এবং ‘সমাবেশে’ অংশ নেওয়ায় আদালত আরও ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেন। আদালত তাদের কারাবাসের মেয়াদ শেষে নির্বাসন এবং জব্দ করা সমস্ত ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দেন।