পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা এ বছর প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাই। রবিবার (৩ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের নিজ দফতরে বছরের প্রথম কার্যদিবসে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১ জানুয়ারি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর দফতরের মন্ত্রী টিন্ট সোয়েকে চিঠি লিখে এ বছর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার অনুরোধ করেছি। চিঠিতে কী লেখা হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করিয়ে দিয়েছি তাদের প্রতিশ্রুতির কথা। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে নিরাপত্তা দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে কিন্তু কোনও অগ্রগতি হয়নি।
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমি বলেছি এর জন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং নববর্ষে আমরা আশা করি যে আপনারা আপনাদের কথা রাখবেন। ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি, অতীতে কথা রেখেছেন এবং এখন নিজেদের লোকগুলো নিয়ে যান। যদি এদের ফিরিয়ে না নেওয়া হয়, তবে এ অঞ্চলে অশান্তির আশঙ্কা আছে।’
সমস্যার সমাধান একমাত্র মিয়ানমারই করতে পারে এবং তাদের ব্যবহারের পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের ব্যবহারে পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা আশাবাদী। দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও বহুপক্ষীয় আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। এমনকি আইনি কাঠামোর মধ্যেও কাজ করছি। যত ব্যবস্থা আছে সব নিয়ে কাজ করছি।’
মিয়ানমারকে যাচাই-বাছাই করার জন্য ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গার তালিকা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরমধ্যে তারা ২৮ হাজার যাচাই-বাছাই করেছে। তারা অত্যন্ত ধীরগতিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
পক্ষীয় বৈঠক বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থার উদ্যোক্তা হচ্ছে চীন। তারা এটি নিয়ে কাজ করছে। আমরা সবসময় তৈরি। তারা যখন তারিখ দেবে আমরা বসবো।’
নতুন উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাপান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাপানের অনেক বড় বিনিয়োগ আছে মিয়ানমারে। তাদের অনুরোধ করেছিলাম এবং তারা বলেছিল যে নিশ্চয় তারা আমাদের সাহায্য করবে। কারণ, মিয়ানমারের ওপরে জাপানের প্রভাব আছে। এটি চীনের উদ্যোগের বাইরে। তবে জাপানের উদ্যোগে কাঠামো এখনও তৈরি হয়নি। আমরা বলেছি এবং তারা পছন্দ করেছে।’
ভারত আমাদের বলেছে, তারা মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ করবে এবং সহায়তা করবে। তারাও চায় রোহিঙ্গারা ফেরত যাক। ভারত, জাপান, চীন—সবাই আমাদের সঙ্গে একমত যে মিয়ানমারেই সমস্যার সমাধান নিহিত আছে বলে তিনি জানান।