মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম অভিমুখে জন স্রোত। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাজমুল হাসান পাপনের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন, ব্যানার, পোস্টার নিয়ে হাজারো মানুষ মিছিল যোগে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন। স্টেডিয়াম জুড়ে পাপনসহ বিসিবির নির্বাচিত পরিচালকদের অভিনন্দন জানিয়ে টানানো হয়েছে পোস্টার। ঢাকার বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন থেকে ফুলের তোড়া হাতে হাজির হয়েছিলেন অনেকে।
দুপুর আড়াইটার দিকে এসে মূল গেট থেকে বিসিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করতে অন্তত মিনিট দশেক সময় লেগেছিল পাপনের। লোকের ভিড়, মিছিল ঠেলে যেতেই পারছিলেন না তিনি। সেই ধাক্কা কাটিয়ে নিজের কার্যালয়ে উঠার পরও ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন পাপন। ফুলের মালার হিড়িক নাকি তিনি নিজেই একটা সময় থামিয়ে দিয়েছিলেন।
নবনির্বাচিত পরিচালকদের নিয়ে প্রথম সভায়ও সবার সমর্থন, স্তুতিতে ভিজেছেন পাপন। আ. জ. ম. নাসিরই প্রথম পরিচালক হিসেবে গতকাল আগামী চার বছরের জন্য সভাপতি হিসেবে পাপনের নাম প্রস্তাব করেন। এনায়েত হোসেন সিরাজ, গাজী গোলাম মুর্তজা পাপ্পা সমর্থন করেন তাকে। পরে বাকি পরিচালকরাও সমর্থন জানান এই প্রস্তাবে। সর্বসম্মতিক্রমে টানা তৃতীয়বার বিসিবির নির্বাচিত সভাপতি হন পাপন।
প্রথম সভার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বোর্ড সভাপতি। দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে নতুন মেয়াদে তিনটি লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন পাপন। প্রথম কাজ হিসেবে এসব লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে চান তিনি। যার মধ্যে সবার আগে পূর্বাচলে ‘দ্য বোট’ খ্যাত শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ শেষ করতে চান। পরে গঠনতন্ত্রে কিছু সংশোধনের কাজ ও আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার পূর্ণাঙ্গ কাঠামো বাস্তবায়নই অগ্রাধিকার পাবে।
সংবাদ সম্মেলনে পাপন বলেছেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ হলো শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম। এটা আমাদের যতদ্রুত সম্ভব চালু করতে হবে। কারণ আমরা যে আইসিসি ইভেন্টে আবেদন করেছি সেখানে আমাদের এ স্টেডিয়াম দেখানো আছে। এটা ছাড়া কিন্তু আমরা ওই টুর্নামেন্ট পাব না। এটা নাম্বার ওয়ান, টপ প্রায়োরিটি।’
গঠনতন্ত্রে কিছু সংশোধন আনতে চান পাপন। পরের বোর্ড সভায় সংশোধনের সম্ভাব্য প্রস্তাব নিয়ে আসতে হবে পরিচালকদের। ইঙ্গিত মিলেছে ক্যাটাগরি-৩ থাকা শিক্ষা বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়, সার্ভিসেস সংস্থার ভোট কমিয়ে আনা হতে পারে।
নাজমুল হাসান পাপনের তিন লক্ষ্য:
১. শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ
২. গঠনতন্ত্র সংশোধন
৩. আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন
পাপন বলেছেন, ‘গঠনতন্ত্র, পরিচালকদের বলেছি সংবিধানে কোথায় কি পরিবর্তন আনা যায় তা বলতে বলেছি। পরের বোর্ড মিটিংয়ে তারা পরিবর্তনের মতামত উপস্থাপন করবে।’
আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনের মাধ্যমে সারা দেশে ক্রিকেটের অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন পাপন। তিনি বলেছেন, ‘আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থা তৈরি। এটার সঙ্গেই কাঠামোগত উন্নয়নের কথা এসেছে। ক্রিকেট একাডেমি ইতিমধ্যে এক জায়গায় হয়েছে আরেক জায়গায় হচ্ছে। আর কোথায় কোথায় হবে এটা নিয়ে প্রস্তাব করেছি। আর বয়স ভিত্তিকের জন্য নির্ধারিত একাডেমি হবে।’
ব্যাটসম্যান, পেসার, স্পিনারদের জন্য একাডেমি হবে। দেশি-বিদেশি কোচ থাকবে একাডেমিগুলোতে। সারা বছর খেলা পরিচালনা করার জন্য ৮-১০টা মাঠও তৈরি করবে বিসিবি।