রাজনীতি

নাম প্রকাশ না হলে ‘সন্দেহ থাকবে’: জি এম কাদের

নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগে রাষ্ট্রপতির কাছে সার্চ কমিটির দেওয়া নাম প্রকাশ না করলে ‘সংশয়’ এবং ‘সন্দেহ’ থেকে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

সোমবার সন্ধ্যায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বনানীতে নিজ কার্যালয়ে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির এক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন সংসদের বিরোধী দলীয় এই উপনেতা।

নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য আগামী মঙ্গলবারের বৈঠকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বরে রোববার জানিয়েছে সার্চ কমিটি।

তবে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে না বলে জানান কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ওই নামের তালিকা থেকেই অনধিক ৫ জনকে নিয়ে নতুন ইসি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নাম প্রকাশ না করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “রাষ্ট্রপতির কাছে সার্চ কমিটির দেওয়া নামগুলো প্রকাশ না হলে মানুষের মাঝে একটা সংশয় ও সন্দেহ থেকে যাবে।

“কারণ সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাজে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ আছে প্রধানমন্ত্রীর। সার্চ কমিটির দেওয়া নামগুলো প্রকাশ হলে এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না।”

জি এম কাদের বলেন, “রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া নাম প্রকাশ না হলে প্রস্তাবিত নাম থাকবে, না কী বাইরে থেকে নাম অন্তর্ভুক্ত হবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাবে।

“রাষ্ট্রপতি মাত্র দুটি কাজ ছাড়া বাকি সকল কাজই প্রধানমন্ত্রী বা সরকার প্রধানের পরামর্শ অনুযায়ী করেন। তাই সার্চ কমিটির দেওয়া নামগুলো প্রকাশ করা উচিৎ।”

সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেন, “আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। তাই নির্বাচন কমিশন এমন লোক দিয়ে গঠন করা উচিৎ, যারা সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে।

“গণতন্ত্র চর্চার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে গণতন্ত্র চর্চা শুরুই করা যায় না। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রবেশ দ্বার।”

নির্বাচন কমিশন নিয়োগে গত জানুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদে পাশ হওয়া নতুন আইনে বলা হয়েছে, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে সার্চ কমিটি।

আইনে বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি পদের জন্য দুইজন এবং নির্বাচন কমিশনারের চারটি পদের জন্য আটজনের নাম তারা প্রস্তাব করবে রাষ্ট্রপতির কাছে।

অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “ভালো মানুষ দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই হবে না, নির্বাচন কমিশনকে কাজ করার কর্তৃত্ব দিতে হবে। সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে কর্তৃত্ব দেওয়ার কথা আছে কিন্তু বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না।

“বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচন কশিনকে সরকারের ওপর নির্ভর করতে হয়। আবার, দলীয় সরকার প্রশাসনকে ইচ্ছে মতো ব্যবহার করতে পারে। এতে নির্বাচন কমিশন অনেক সময় অসহায় ভূমিকা পালন করে।

“এটাই নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার প্রধান কারণ। প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু নতুন আইনে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।”

সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরীফা কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, সুনীল শুভ রায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *