প্রার্থীরা ইমোশন (আবেগী) হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। নির্বাচনের দিন দুইজনের মৃত্যুর ঘটনা বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়া বাকি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলেও দাবি তার।
ইসি সচিব বলেন, আমাদের জন্য খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক যে, মহেষখালী ও কুতুবদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একজন করে দুইজন লোক নিহত হয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আরও ২৪ জন আহত হয়েছেন। আমাদের কাছে যে তথ্য তাতে এসব ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। যে ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখবো। সামনে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য সজাগ থাকবো।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে ১৬০ ইউনিয়ন পরিষদ ও ৯ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শেষে ইসি সচিব এসব কথা বলেন। তিনি জানান, ৫টি কেন্দ্রে অনিয়মের কারণে ভোট বন্ধ করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ইউনিয়ন পরিষদে ইভিএমে প্রায় ৫০ শতাংশ, পৌরসভায় ৫৫ শতাংশ ও ব্যালটের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ৬৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে।
নির্বাচনে সহিংসতার কারণ প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, প্রার্থীরা খুব বেশি ইমোশনাল হয়ে যান। মহেষখালীতে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন। কুতুবদিয়ায় ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার সময়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা গুলি করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ডোর টু ডোর নির্বাচনী আমেজ থাকে। প্রার্থীরা এত বেশি ইমোশনাল হয়ে যান যে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে। বড় অনেক দল অংশ না নেওয়ার পরও নির্বাচনে সহিংসতা ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন- ইউপি নির্বাচন দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এলাকা এলাকা দ্বন্দ্ব থাকে, প্রার্থীরা ও তাদের সমর্থকেরা ইমোশনাল হয়ে যান। তখনই এ দ্বন্দ্ব হয়ে যায়। তিনি বলেন, অনিয়মের কারণে পাঁচটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করতে হয়েছে। নির্বাচনে অনিয়ম হওয়ায় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ করেছেন।
ভোটের আগের রাতে একজন নারী মারা যাওয়ার বিষয়ে সচিব বলেন, প্রার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ৭০ বছর বয়স্ক একজন বৃদ্ধ নারী মারা গেছেন। কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে আমাদের জানাতে বলেছি। সহিংসতার বিষয়ে ইসির পদক্ষেপ বিষয়ে তিনি বলেন, কুতুবদিয়ায় যে ৭ নম্বর কেন্দ্রে নির্বাচনী প্রার্থীদের পক্ষে একদল সন্ত্রাসী ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে হুমকি দিচ্ছিল। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফায়ার ওপেন করেছে। অর্থাৎ এ বিষয়ে সর্বোচ্চভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এটি হয়েছে।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেক প্রার্থী জয়ী হওয়ায় নির্বাচন ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ বা নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে কী না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে তা কোনোভাবেই বলবো না। কারণ তিনটি। প্রথমত: একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করেন, দ্বিতীয়ত: যারা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তারা যদি নিয়ম-নীতি না মানেন তাহলে অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হবে খুবই স্বাভাবিক, তৃতীয়ত: যোগ্য প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো না- তাহলে তো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী জয়ী হবেন।