জাতীয়

নীলফামারীতে দ্রুত বাড়ছে তিস্তার পানি

জেলায় দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে তিস্তা নদীর পানি।

বুধবার সকাল ছয়টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকেল ৪টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। সেখানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের উত্তর সিকিমে চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এমন ভয়াবহতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল চারটায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। এর আগে সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় কিছুটা বেড়ে বিপৎসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার, দুপুর একটায় ৭২ সেন্টিমিটার, দুইটায় ২৫ সেন্টিমিটার, তিনটায় ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। সেখানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। রাত পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনার রয়েছে। ওই পয়েন্টে নদীর পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিতে সতর্কতা জারি করে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ঠরা। এতে করে জেলার ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, গয়াবাড়ি, ঝুনাগাছ ছাপানী, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে ১৫ গ্রামের পাঁচ হাজার পরিবার বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবং মাইকিং করে তিস্তা পারের মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলছি। ইতিমধ্যে অনেকে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় নৌকা মজুত রাখা হয়েছে।’

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনো ঘরবাড়িতে পানি না উঠলেও এলাকাবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছেন।’

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদ্দৌলা বলেন, ‘বুধবার বেলা ৩টায় তিস্তা ব্যরাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেণ্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বেলা ৪টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধি অব্যহত আছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রেখে সতর্কাবস্থায় রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।’

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি সকাল থেকে তিস্তা নদী এলাকায় অবস্থান করছি।

এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন মসজিদের মাইকে প্রচারণা চলছে। ইতিমধ্যে চর এলাকার মানুষজন তাদের গরু বাছুর নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে শুরু করেছেন। যাদের জমিতে আধাপাকা ধান আছে তারাও তাদের ধান কেটে নিচ্ছেন।’

জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘আমি তিস্তা পারে অবস্থান করছি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সৃষ্ঠ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডিমলা উপজেলা পরিষদকে ৩০ মেট্রিক টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও প্রয়োজনীয় ত্রাণ মজুদ আছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *