নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি, উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার উদ্দেশ্যে রিয়েল টাইম অ্যাপস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
শনিবার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রামের ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স সেন্টারে দি চিটাগাং চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি আয়োজিত পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলেন, পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার উদ্দেশ্যে সব পর্যায়ে কঠোর মনিটরিং করা হচ্ছে। মিল পর্যায়ে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। ভোক্তা যাতে স্বস্থিতে থাকেন, সেজন্য যা করা দরকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাই করবে।
চট্টগ্রামের ব্যাসায়ীরা সারা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর এবং খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার যদি স্বাভাবিক কাজ করে, তাহলে পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে সহযোগিতার জন্যই কাজ করে, ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে। চলমান বিশ্ববাণিজ্যে অস্থির পরিস্থিতিতেও সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত পণ্য মজুত থাকার পরও সরবরাহে ঘাটতি বা মূল্য বৃদ্ধি হওয়ার কথা নয়। সরকার ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কোনো পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক উঠা-নামা করলে সেটা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিংয়ের দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের নিতে হবে।
আলোচনা সভায় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বলেন, পণ্যের সরবরাহ, মজুত ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে মিলার হতে পাইকারী ও খুচরা পর্যায়ে সাপলাই চেইন নির্বিঘ্ন রাখা, বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখা, প্রত্যেক দোকানে ক্রয়-বিক্রির মূল্য তালিকা প্রদর্শন, পণ্য পরিবহনকে বাধা মুক্ত রাখা, চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে ১৩ টন ওজনের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করতে হবে৷
আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলে শুল্ক সমন্বয় করার অনুরোধ জানিয়ে তারা বলেন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেলে তা সমন্বয় করা, ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) ইস্যুর ক্ষেত্রে জটিলতা দূর করা, এইচএস কোর্ড কোন কারণে ভুল হলে উচ্চহারে জরিমান না করে তা সংশোধনের সুযোগ দেওয়া, আমদানি, মিলার, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যৌক্তিকভাবে লভ্যাংশ নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সঠিক সময়ে পণ্য বাজারে এলে কোনো সমস্যা হবে না।
দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলেমর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আলোচনায় অংশ নেন চিটাগাং চেম্বারে নেতারা, চট্টগ্রামের বিভিন্ন মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা, আমদানিকারক, মিলালিক ফেডারেশনের নেতারা, দোকান মালিক সমিতির নেতারা, সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আকতার হোসেন, খাতুনগঞ্জ ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি সৈয়দ ছগির আহমেদ, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ এবং চট্টগ্রাম পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেন।