ষড়যন্ত্র না থাকলে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হল কেন, সেই প্রশ্ন রেখেছে হাই কোর্ট।
এ বিষয়ে এক রুলের শুনানিতে সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ থেকে এমন মন্তব্য আসে।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার এ সময় বলেন, “পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটা আমাদের অহংকার।
“এ ধরনের জাতীয় স্বার্থ উন্নয়নের বিরুদ্ধে যারা থাকেন, তারা জাতির শত্রু, দেশের শত্রু, তাদের চিহ্নিত করা দরকার। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশবিরোধী, এদের খুঁজে বের করতে হবে।”
পদ্মা সেতু প্রকল্পে ‘দুর্নীতির মিথ্যা গল্প’ বানানোর নেপথ্যে ‘প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের’ খুঁজে বের করে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানি শেষে বিষয়টি মঙ্গলবার আদেশের জন্য রেখেছে আদালত।
আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
পাঁচ বছর আগে জারি হওয়া ওই রুল সোমবার শুনানিতে আসে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দিন রোববার রুল শুনানির জন্য বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই রুল জারি করেছিল।
‘ষড়যন্ত্রকারীদের’ খুঁজে বের করতে ১৯৫৬ সালের ‘ইনকোয়ারি অ্যাক্ট’র তৃতীয় অনুচ্ছেদ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন অনুযায়ী কমিটি বা কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- সরকারের কাছে তা জানতে চেয়েছিল আদালত।
‘প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের’ কেন বিচারের মুখোমুখি করা হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, যোগযোগ সচিব, দুদক চেয়ারম্যান ও আইজিপিকে সেখানে বিবাদী করা হয়।
এছাড়া কমিটি বা কমিশন গঠনে কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
ওই কমিশন গঠন নিয়ে সরকারের তিনটি মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি হলেও পরে আর এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এর মধ্যে রুল জারি করা হাই কোর্ট বেঞ্চের পরিবর্তন হয়, মামলাটি আর কোনো বেঞ্চেও উঠেনি।
পাঁচ বছর আগে স্বতঃপ্রণোদিত যেসব প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আদালত এই রুল আদালত দিয়েছিল, তার মধ্যে একটির শিরোনাম ছিল-‘ইউনূসের বিচার দাবি’।
পদ্মায় বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন আটকাতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের ‘ষড়যন্ত্র’ ছিল বলে সব সময় বলে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । তবে ইউনূস সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।