সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ হামলা নিয়ে পুতিনকে ‘পাগল’ বলে কটাক্ষ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার এ প্রতিক্রিয়াকে ‘আবেগের মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া’ বলে খোঁচা দিয়েছে ক্রেমলিন।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার মস্কোতে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইউক্রেনে সর্বশেষ রুশ বিমান হামলা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ‘মাত্রাতিরিক্ত আবেগ’-এর ফল।
ট্রাম্প রোববার নিজের ট্রুথ সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লেখেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘পুরোপুরি পাগল হয়ে গেছেন’, কারণ টানা তৃতীয় রাতেও রাশিয়া ইউক্রেনে বিমান হামলা চালিয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি সবসময় বলে এসেছি, কেবল একটি অংশ নয়, তিনি (পুতিন) পুরো ইউক্রেন চান। হয়তো সেটাই সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে। তবে যদি তিনি (পুতিন) তেমনটা করেন, তাহলে তা রাশিয়ার পতনের ডেকে আনবে!’
এক পৃথক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি যা দেখছি, তাতে আমি মোটেও খুশি নই। আমি জানি না ওঁর (পুতিন) কী হয়েছে। কী সর্বনাশটাই না করছে! অনেক মানুষকে হত্যা করছে, এটা আমি একদমই পছন্দ করছি না’।
এর আগে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া শনিবার রাতভর ৩৫৫টি ড্রোন ও ৯টি ‘খ-১০১’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। যার মধ্যে তারা ২৮৮টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
এদিকে ট্রাম্পের বক্তব্য প্রসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এটা নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত এবং এটা সবার আবেগঘন প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। আবেগ মাত্রাতিরিক্ত হয়ে পড়ছে— সেটাও স্বাভাবিক’।
মস্কো সব প্রতিক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন’।
এ সময়, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে প্রত্যক্ষ আলোচনা শুরু হওয়াটাকে ‘একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্জন’ হিসেবে দেখা হচ্ছে উল্লেখ করে পেসকভ বলেন, এ আলোচনা আয়োজনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।
তার ভাষায়, ‘এই আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করতে সহায়তা করার জন্য আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ—যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিও’।
তবে দ্বিতীয় দফার আলোচনার সময় ও স্থান নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান ক্রেমলিন মুখপাত্র।
এদিকে তুরস্কের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় গত ১৬ মে। তিন বছর বিরতির পর ইস্তাম্বুলে হওয়া সেই বৈঠকে উভয় পক্ষ সম্মত হয় যে, প্রত্যেকে ১,০০০ বন্দি বিনিময় করবে এবং যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখবে।
এ সময় পেসকভ এ আলোচনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তুরস্কের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, একটি সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির খসড়া নিয়েও কাজ চলছে। সূত্র: আনাদোলু