মুজিববর্ষ উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির কথা বলে প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ‘বনবন্ধু’ পরিচয় দিয়ে জাহিদুর রহমান ইকবাল নামের এই ব্যক্তি প্রতারণা করে আসছিলেন। এ ছাড়া আরো একাধিক ভুয়া প্রতিষ্ঠানের প্রধান পরিচয় দিয়ে তিনি লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করছিলেন।
অবশেষে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের শাহ আলী ভবনে নিজের কথিত কার্যালয় থেকে জাহিদুর রহমান ইকবালকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
আজ বুধবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুণ-অর-রশীদ জানান, গ্রেপ্তারের সময় ইকবালের কাছ থেকে ২৭০টি সিল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৮৪টি ডকুমেন্টস প্রসেসিং ফাইল, মুজিববর্ষের লোগো ব্যবহার করা ও প্রধানমন্ত্রীর বাণীসংবলিত ৫০০টি চিঠি, দুটি সিপিইউ, দুটি প্রিন্টার, একটি স্ক্যানার, দুটি মনিটর, একটি ল্যাপটপ, দুটি মোবাইল ফোনসেট ও একটি টয়োটা করোলা গাড়ি জব্দ করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ইকবাল মুজিববর্ষের লোগো, প্রধানমন্ত্রীর বাণী ব্যবহার করে গাছ লাগানোর কথা বলে প্রায় ৪০ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কাছে অনুদান চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘৩০ বছর ধরে জাহিদুর রহমান ইকবাল ওরফে বনবন্ধু জাহিদুর রহমান ইকবাল প্রতারণা করে আসছে। মুজিববর্ষের লোগো ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী ব্যবহার করে এখন চলছিল তার মূল প্রতারণা।
এ ছাড়া সে নিজেকে কনসালট্যান্ট গ্রুপ লিমিটেড, এসএমই কনসালট্যান্ট লিমিটেড ও ইইএফ কনসালট্যান্ট লিমিটেড নামের তিনটি অবৈধ কম্পানির চেয়ারম্যান এবং সিইও দাবি করে। কিন্তু কম্পানিগুলোর কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নাম ভাঙিয়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার কনসালটেন্সির কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ করত এই প্রতারক।
অন্যদিকে এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), আয়করের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ব্যাংক থেকে লোন প্রসেসিং, বাংলাদেশ ট্রি প্লান্টেশন ফাউন্ডেশন নামে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে বৃক্ষরোপণের কথা বলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ আত্মসাত্ করে আসছিল।’
ইকবাল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদনসহ নানা ধরনের কনসালট্যান্সির নামেও বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানান। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে পাঁচ শ লোকের মৌখিক অভিযোগ এসেছে আমাদের কাছে। ধারণা করছি সে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমরা তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করব। রিমান্ডে নিলে জানা যাবে সে কত লোকের কাছ থেকে কী পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’