দেশের আইন ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যকে দায়িত্বহীন ও মিথ্যাচার আখ্যায়িত করে তাকে একহাত নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল সুনির্দিষ্ট আইন দ্বারা নির্ধারিত বিষয়ে লজ্জাহীনভাবে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন। চিরাচরিত অপরাজনীতির ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়েও তিনি ক্রমাগত সীমাহীন মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ারভুক্ত। এ বিষয়ে রাজনীতি করার কারও কোনো সুযোগ নেই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিবৃতিতে ফখরুলের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশবাসী জানে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ মানবিকতা ও উদারতা দেখিয়ে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে দেশের সর্বাধুনিক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের ইতিহাসে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর জন্য এমন মানবিকতার উদাহরণ বিরল। সেই উদারতাকে মির্জা ফখরুল শুধু অসম্মানই করেননি, গোটা বিষয় নিয়ে অত্যন্ত উসকানিমূলক মন্তব্যের মধ্যদিয়ে দেশের আইন, বিচার প্রক্রিয়া ও সংবিধান সম্পর্কে দায়িত্বহীন বক্তব্য দিয়েছেন। বিএনপি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য জল ঘোলা করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনার বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের বিষয়ে মির্জা ফখরুল সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন না এবং তার বিদেশ গমনে আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। শেখ হাসিনা সর্বদা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তার বিরুদ্ধে করা সব মামলার জামিন পাওয়ার পর এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তিনি বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করতে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতাবলে তার সাজা বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। বিদেশে যেতে হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাকে আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে। বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ারভুক্ত। এ বিষয়ে রাজনীতি করার কারও কোনো সুযোগ নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতি এবং প্রতিপক্ষকে হত্যা করার মতো নিকৃষ্ট মানসিকতা ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপির মতাদর্শ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না। বরং তিনি বারবার বিএনপির প্রতিহিংসা ও আক্রোশের রাজনীতির শিকার হয়েছেন। এরপরও সর্বোচ্চ নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে তিনি খালেদা জিয়াকে নিজ বাড়িতে অবস্থান ও উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন। এমন মানবিকতার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে দ্বিতীয় আরেকটি নেই।