সাম্প্রতিক বজ্রপাতে প্রাণহানি বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের চার জেলায় ৭ হাজার ২০০ তালের চারা রোপণের উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
দলটির নেতারা বলছেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন থেকেই পর্যায়ক্রমে ঢাকার কেরানীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, পাবনা ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় তালের চারা রোপণ করবেন তারা।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বজ্রপাত প্রতিরোধে বড় গাছ দরকার, এর মধ্যে একটা হলো তাল গাছ। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ গাছগুলো যদি আমরা রোপণ করি, তাহলে ১০-১৫ বছর পর সুফল পাব। আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বজ্রপাতের প্রভাব কমাতে অন্য উঁচু গাছের সাথে এবার তাল গাছ যুক্ত করলাম।
তিনি জানান, আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দলের বন ও পরিবেশ উপ কমিটি দেশের কয়েকটি জেলা চিহ্নিত করেছে, যেখানে বজ্রপাত বেশি হয়। মানুষকে সচেতন করতে এবং উদ্বুদ্ধ করতে সেই জেলাগুলোতে আমরা তাল গাছ রোপণ করবো।
দেলোয়ার বলেন, আপাতত কেরানিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, পাবনা ও সিরাজগঞ্জে তারা তালের চারা রোপণ করবেন। পরে চারা পাওয়া সাপেক্ষে অন্য জেলাগুলোতে নজর দেবেন। প্রাথমিকভাবে চারা রোপণের পর সেগুলোর পরিচর্যার দায়িত্ব দেওয়া হবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের। পাশপাশি সাধারণ মানুষকেও সম্পৃক্ত করবো। এগুলো আমরা বিনামূল্যে মানুষকে বিতরণ করব। উদ্দেশ্য হলো মানুষকে সচেতন করা।
মুজিবর্ষ উপলক্ষে গত বছর এবং এ বছর মিলিয়ে সারাদেশে তিন কোটি গাছের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে তালের চারা সংগ্রহ করতে গিয়ে নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে জানিয়ে দেলোয়ার বলেন, তালের চারা পাওয়াটা কঠিন। কোনো নার্সারি বা বন বিভাগে কেউ এই চারা করে না। আঁটি পাওয়া যায়। আমরা পাঁচ থেকে সাত হাজার তালের চারা সংগ্রহ করেছি।
বজ্রপাত একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক প্রাণহানি বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে। সরকারি পর্যায়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে সারা দেশে বজ্রপাতে তিন হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে।
২০১১ সালের পর থেকে বজ্রপাতের পরিমাণও বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। বজ্রপাতে ২০১৫ সালে ৯৯ জন, ২০১৬ সালে ৩৫১ জন ও ২০১৭ সালে ২৬২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। ২০২১ সালের মে পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন চার শতাধিক।