আসন্ন জাতীয় রাজস্ব বাজেটে এমন করব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে সরকার ও ব্যবসায়ী—উভয়ই জিতবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট এমনভাবে প্রণয়ন করা হবে, যাতে বাজেট হবে ব্যবসা সহায়ক। করব্যবস্থায় কেউ যেন না ঠকে, সে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর ফলে সরকার দেশ পরিচালনা ও উন্নয়নের স্বার্থে প্রয়োজনীয় রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারবে এবং একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো রকম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইন্টার কন্টিনেন্টালে হোটেলে জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ বিষয়ে আয়োজিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪২তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
kalerkanthoএনবিআর ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এই সভার আয়োজন করে। সভায় এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সভাপতিত্ব করেন। এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
ব্যবসায়ীদের কর প্রদানের আহ্বান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কর দিতে হবে; আপনারা যদি কর না দেন, তাহলে পদ্মা সেতু বা বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না। আপনাদের দেশ ও নিজের স্বার্থে কর দিতে হবে। ’
শুল্ক-কর কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হয়—ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগের প্রেক্ষাপটে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ঘুষ দিচ্ছেন কেন? আপনাদের কাছে অনুরোধ, ঘুষ দেবেন না। ’ এ সময় হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘুষ দেওয়া যাবে না। যারা ঘুষ দেয়, তাদের জায়গা হবে জাহান্নামে। ’
অর্থমন্ত্রী জানান, গত ১৩ বছরে দেশে রাজস্ব আয় বেড়েছে আট গুণ। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে এনবিআরে রাজস্ব আয় দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকা। আর এক যুগের ব্যবধানে কর-জিডিপির অনুপাত ৯.১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০.৩ শতাংশ হয়েছে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের নজরদারি চান ব্যবসায়ীরা
দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টির শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। এ জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছে সংগঠনটি। পরামর্শক কমিটির সভার সূচনা বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর উদ্যোগ, কর ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনাসহ আগামী বাজেটে বাস্তবায়ন করতে একাধিক প্রস্তাব দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জসিম উদ্দিন বলেন, রোজা সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য সুলভে বর্ধিত নিত্যপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজারমূল্যের ভারসাম্য রক্ষা করার অনুরোধ জানাচ্ছি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।
এ ছাড়া ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার ন্যূনতম কর তিন লাখ থেকে বাড়িয়ে চার লাখ টাকা করা, কম্পানি কর ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭.৫০ শতাংশ করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে করছাড়ের প্রস্তাব করেন তিনি।