আগামী নির্বাচনে আমাদের বিজয়কে অব্যাহত রাখতেই হবে। এছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। মনে রাখতে হবে-বিএনপি-জামায়াত জোট যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে আমাদের চোখ উপড়ে ফেলেছে, হাত-পা কেটেছে, ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ ও ধ্বংস করে দিয়েছিল। তারা আবার ক্ষমতায় এলে একদিনে ঢাকা শহরে এক লাখ মানুষকে হত্যা করবে। এটা বুকে ধারণ করে সাংগঠনিক শক্তি অর্জন করতে হবে এবং সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।
শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ইউনিট কমিটির পরিচিতি সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারব। আওয়ামী লীগই বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাবে। অপপ্রচার, চরিত্র হনন করে লাভ নেই। দেশে বিদেশে প্রপাগান্ডা করে লাভ নেই। আওয়ামী লীগের শেকড় বাংলাদেশের যত গভীরে, সেটা উপড়ে ফেলা যাবে না। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন দেশের গণতন্ত্র চরম হুমকিতে ছিল। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ছিল ঘরছাড়া। তাদের দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্য সব বিএনপি নেতারা লুট করে নিয়েছিল। ২৬ হাজার আওয়ামী লীগকর্মীকে তারা হত্যা করেছিল। তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারই রাজপথে থাকেন, আপনারাই হেফাজতকে মোকাবিলা করেন, বিএনপি-জামায়াতকে মোকাবিলা করেন। ষড়যন্ত্রকারীরা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে তাই আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। দরকার হলে রাস্তায় নামতে হবে।
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং আমাদের জাতীয় সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় সম্মেলনের আগে সব স্তরে শক্তিশালী কমিটি গঠন করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের দল ও নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করব।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ষড়যন্ত্র চলছে। সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে তা ব্যর্থ করে দিতে হবে। আমাদের বিজয়কে অব্যাহত রাখতেই হবে, এছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে-ওই তারেক রহমানরা লন্ডনে বসে আবার বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আপনাদের পথ চলতে হবে। তাই আমাদের প্রতিটি দিনকে একেকটা বছর মনে করে এখন থেকে কাজ করতে হবে।
নেতাকর্মীদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, আজকে এই যে এত আয়োজন, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি, সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয়, দলীয় কার্যালয়, এসব কিছু করার পরে টার্গেট কি? টার্গেট- ২০২৪ এর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যে জাতীয় নির্বাচন সেই নির্বাচনে ঢাকা উত্তরের আটটি আসনে শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তাকেই বিজয়ী করা। তাহলেই আমরা ক্ষমতায় যেতে পারব। আর যদি ক্ষমতায় যেতে না পারি তাহলে ক্ষমতায় কে আসবে? ভাবছেন কখনো? ক্ষমতায় আসবে বঙ্গবন্ধুর খুনি জিয়াউর রহমানের ছেলে তারেক রহমান। আপনাদের-আমাদের অবস্থা কি হবে ভেবে দেখেছেন? তারা একদিনে ঢাকা শহরে এক লাখ মানুষকে হত্যা করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখেন-আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। এসময় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা, থানা-ওয়ার্ডের নেতা এবং নবগঠিত ৮০২ ইউনিট আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান নবগঠিত ইউনিট নেতাদের শপথবাক্য পাঠ করান।