ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নিল বাংলাদেশ। সুপার এইটে তিন ম্যাচের মধ্যে টানা দুই ম্যাচে সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।
শনিবার ওয়েষ্ট ইন্ডিজের অ্যান্টিগার নর্থ সাউন্ডে আগে ব্যাট করে হার্দিক পান্ডিয়া, বিরাট কোহলি, ঋষভ পন্থ, শিবম দুবে ও রোহিত শর্মার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৯৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে ভারত।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে কুলদীপ যাদব, জসপ্রিত বুমরাহ ও আর্শদীপ সিংদের বোলিং তোপের মুখে পড়ে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি টাইগাররা। ৫০ রানের জয় পায় ভারত। এই জয়ে বাংলাদেশকে বিদায় করে সেমিফাইনালের পথে একধাপ এগিয়ে গেল ভারত।
এদিন টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমেই একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন ভারতীয় দুই তারকা ওপেনার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। রোহিতকে আউট করে ওপেনিং জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে দলীয় ৩৯ রানে সাজঘরে ফেরেন রোহিত। তার আগে মাত্র ১১ বলে তিনটি চার আর এক ছক্কায় করেন ২৩ রান।
রোহিত আউট হওয়ার পর ব্যাটিং তাণ্ডব অব্যাহত রাখেন সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তার লাগাম টেনে ধরেন তানজিম হাসান সাকিব।তানজিমের বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন বিরাট কোহলি। তিনি থেমেছেন ২৮ বলে এক চার আর তিন ছক্কায় ৩৭ রান করে।
চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান সূর্যকুমার যাদব। পরের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন এই তারকা ব্যাটসম্যান। তানজিমের শর্ট লেংথের বলে আউটসাইড-এজের পর ধরা পড়েছেন উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে। তার বিদায়ে ৮.৩ ওভারে দলীয় ৭৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় ভারত।
সূর্যকুমার যাদব আউট হওয়ার পর উইকেটে সেট হয়ে ব্যাটিং তাণ্ডব চালতে থাকেন ঋষভ পন্থ। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যাওয়া ভারতীয় এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানকে আউট করেন রিশাদ হোসেন। তার লেগস্পিন বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন পন্থ। তার বিদায়ে ১১.৪ ওভারে ১০৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ভারত।
এরপর হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৩৪ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়েন শিবম দুবে। ১৭.২ ওভারে দলীয় ১৬১ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে শিবম দুবেকে সাজঘরে ফেরান রিশাদ হোসেন। তার আগে ২৪ বলে তিন ছক্কায় ৩৪ রান করেন দুবে।
ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলে ২৭ বলে তিন ছক্কা আর চারটি বাউন্ডারির সাহায্যে অপরাজিত ৫০ রান করেন হার্দিক পান্ডিয়া। তার ফিফটিতে ভর করে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে ভারত।
বাংলাদেশ দলের হয়ে ৪ ওভারে ৩২ রানে ২ উইকেট নেন তরুণ তারকা পেসার তানজিম হাসান সাকিব। ৩ ওভারে ৪৩ রানে ২ উইকেট নেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। ৩ ওভারে ৩৭ রানে মাত্র ১ উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। ৪ ওভারে ২৮ রান খরচ করেন শেখ মাহেদি হাসান। ৪ ওভারে ৪৮ রান খরচ করে কোনো সাফল্য পাননি মোস্তাফিজুর রহমান। ২ ওভারে মাত্র ৮ রান খরচ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৪.৩ ওভারে দলীয় ৩৫ রানেই ফেরেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। তিনি ১০ বলে এক চার আর এক ছক্কায় ১৩ রান করে ফেরেন। তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ফের ৩১ রানের জুটি গড়ে ফেরেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। তিনি ৩১ বলে চার বাউন্ডারিতে ২৯ রান করে ফেরেন।
চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ বলে মাত্র ৪ রানে ফেরেন তাওহিদ হৃদয়। ১৩.২ ওভা ৩ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৯৮ রান। এরপর একের পর এক উইকেট পতনের কারণে শেষ ৪০ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৮ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।
শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে ছন্দ পতনের কারণে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি টাইগাররা। দলের হয়ে ৩২ বলে এক চার আর তিন ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। মাত্র ১০ বলে এক চার আর তিন ছক্কায় ২৪ রান করেন রিশাদ হোসেন। ৩১ বলে ২৯ রান করেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম।
ভারতের হয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রানে ৩ উইকেট নেন কুলদীপ যাদব। ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রানে ২ উইকেট নেন জসপ্রিত বুমরাহ। ৪ ওভারে ৩০ রানে ২ উইকেট নেন আর্শদীপ সিং। ৩ ওভারে ৩২ রানে এক উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়া।