জাতীয়

ভারত নদীকে ‘ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে: মনজুর আহমেদ

ভারত নদীকে ‘ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের চারপাশে ভারতের পঞ্চাশটির মত ড্যাম, ব্যারেজসহ হাইড্রোলিক অবকাঠামো রয়েছে। যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে নদীর ন্যায্য পানির হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছে। মূলত ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে নদীকে ব্যবহার করে ভারত।”

শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীর পূর্বপাড় কাশিনগর এলাকায় ‘নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা’ বিষয়ক সংগঠন তরীর আয়োজনে ‘নদী সম্মিলনে’ এসব কথা বলেন তিনি।

নদীর ব্যাপারে ভারতকে অবিশ্বস্ত বন্ধু উল্লেখ করে মনজুর আহমেদ বলেন, “ভারতকে নদীর ব্যাপারে বিশ্বাস করা যায় না। তাই বাংলাদেশকে পানির বিষয়ে ভারতের উপর নির্ভরশীল না হয়ে স্বনির্ভরশীল হতে হবে।”

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পঞ্চাশটিরও বেশি আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এসব নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে দুই দেশের চুক্তিতে ভারতের আগ্রহ খুবই কম। যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই ভারতের উপর নির্ভরশীল না হয়ে বর্ষাকালে পানি ধরে রাখতে ডেল্টা প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।”

নদী রক্ষার এই সম্মিলনে মনজুর আহমেদ বলেন, “ব্রহ্মপুত্রের পানি ভারত তার পশ্চিমাঞ্চলে ট্রান্সফার করতে চায়, যেটি বাংলাদেশের জন্য সমূহ বিপদ। ভারত থেকে যেসব নদীর শাখা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, তার মধ্যে ব্যাপক পরিমাণ পানি বঙ্গোপসাগরে জমে। বর্ষাকালে এক লাখ ৪০ হাজার কিউবিট মিটার পানি এসব নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়।

“তবে সেসব নদী থেকে গ্রীষ্মকালে মাত্র ৫ ভাগ পানি বাংলাদেশে আসে। সেখানে ভারতে পানি তো দেয়ই না, উল্টো গঙ্গার পানি তারা ব্যাপকভাবে নিয়ে যাচ্ছে। পানি যখন বেশি দরকার তখন কম দেয়, যখন কম দরকার তখন বেশি দিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে। সিলেট এবং ফেনীর বন্যা তার প্রমাণ।”

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দেশব্যাপী নদী দখল ও দূষণ বন্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা বাস্তবায়নের দাবি জানান নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান।

নদী সম্মিলনে তরীর আহ্বায়ক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে সাংবাদিক ও লেখক আমিন আল রশীদ, রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনির হোসেন এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কিউ এম সোহেল রানা বক্তব্য দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *