করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে যখন হাসপাতালগুলো চাপ নিতে পারছে না, তখন সাম্প্রতিক নানা অভিযানে মদ-মাদক উদ্ধারকে ‘নাটক’ বলেছেন বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
তিনি বলেছেন, এমন না যে এগুলো নতুন কিছু, কিন্তু সরকার ব্যর্থতা আড়াল করতে এখন এই অভিযান চালিয়ে মানুষের চোখ ফেরাতে চাইছে।
বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য টুকু একথা বলেন।
একদিন আগেই চিত্রনায়িকা পরীমনির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব। তার বাড়ি থেকে মদ-মাদক উদ্ধারের দৃশ্যও দেখা যায়।
এর তিন দিন আগে মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে আটকের সময়ও তার বাড়ি থেকে মদ-মাদক উদ্ধার করা হয়েছিল।
এসব ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে টুকু বলেন, “দেশে তো উনারা (সরকার) অনেক নাটক করছে। সেই নাটকগুলো দিয়ে আমাদের সাংবাদিকদের ব্যস্ত রাখছে, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ব্যস্ত আছে, সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ব্যস্ত আছে। কার বাড়িতে কতগুলো মদ বেরুলো, কার বাড়িতে কতগুলো ইয়াবা ট্যাবলেট বেরুলো।
“দেখে মনে হয় এই করোনার মধ্যে এই খবরটা পাইছে আরকি! এতদিন চোখে পড়ে নাই? এখন করোনা আসছে। মৃত্যুর সংখ্যার হার বেড়ে গেছে, করোনায় সংক্রমণ সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মরছে। এগুলোকে পাশ কাটানোর জন্য এখন মদের বোতল, ইয়াবা, কী সব নাম-টাম শুনি নাই কখনও এলএসডি-ফেলএসডি, এসব নিয়ে করছে। ছবি তুলে টেলিভিশনে দেখাচ্ছে।”
বিএনপির ‘করোনা পর্যবেক্ষণ সেল’র আহবায়ক টুকু দাবি করেন, মহামারী নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগ সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
“দেশের মানুষ যে আজকে হাসপাতালে জায়গা পাচ্ছে না, মফস্বল থেকে আজকে ঢাকা শহরে লোক পাঠাচ্ছে সেদিকে সরকারের নজর নাই। জেলা হাসপাতালগুলোতে জায়গা নাই, অক্সিজেন সিলিন্ডার নাই। এভাবে দেশ চলতেছে, দেশ চালাচ্ছে তারা।”
এই পরিস্থিতিতে বিএনপির পক্ষ থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “গত বছর জেলায় জেলায় আমরা মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছিয়েছি। প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষের ঘরে আমরা খাবার পৌঁছতে পেরেছিলাম।
“আমরা গর্ব করে বলতে পারি, আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে সব স্তরের কর্মীরা জেল-জুলুম-মামলা-মোকদ্দমা-নিপীড়ন-নির্যাতনের পরেও নিজের পকেট থেকে অর্থ দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, খাবার যোগাড় করে পৌঁছে দিয়েছে।”
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির উদ্যোগে কোভিড-১৯ হেল্প সেন্টারের উদ্বোধন উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুক্ত ছিলেন। তবে তিনি তার নির্বাচনী এলাকার নেতাদের শুভেচ্ছা দেওয়া ছাড়া কোনো বক্তব্য রাখেননি।
টুকু এই হেল্প সেন্টার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে বলেন, “ঠাকুরগাঁওয়ের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করব, আজকে যে হেল্প সেন্টার খোলা হয়েছে, এটা কিন্তু একদিনের জন্য নয়। যত দিন করোনা থাকবে ততদিন এই সেন্টার চালিয়ে নিতে হবে। আমরা কেন্দ্র থেকে ঔষধপত্র দিয়ে সহযোগিতা করছি, ভবিষ্যতেও করব। তবে আপনাদেরকেও উদ্যোগ নিয়ে সহযোগিতার মন নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।”
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেক পৌর মেয়র মির্জা ফয়সাল আমিনের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাংসদ জাহিদুর রহমান জাহিদ, স্থানীয় নেতা ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সুলতান উল ফেরদৌস চৌধুরী নম্র, মো. পয়গাম আলী, মো. জাফরুল্লাহ, অধ্যাপক আবদুল হামিদ, তারিখ আদনান, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, সাধারণ সম্পাদক লুতফুর রহমান মিঠু বক্তব্য রা্খেন।