অর্থনীতি

মহামারীর ধাক্কা সামলে বিদেশি অর্থছাড় বেড়েছে

মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের গতি বাড়াতে নেওয়া উদ্যোগে দাতাদেশ এবং সংস্থাগুলোর কাছ থেকে গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসের তুলনায় ঋণ এবং অনুদানের অর্থছাড় প্রায় ৫৮ শতাংশ বেড়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দাতাদেশ ও সংস্থা মিলে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৫৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের ঋণ ও অনুদান ছাড় করেছে।

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম আট মাস পর্যন্ত বৈদেশিক সহায়তার এই ছাড় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৭ দশমিক ৯ শতাংশ বা ২১৬ কোটি ৩৪ লাখ ডলার বেশি।

গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বিভিন্ন দাতাদেশ এবং সংস্থা মিলে মোট ৩৭৩ কোটি ৬২ লাখ ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ছাড় দিয়েছিল।

ফাইল ছবিফাইল ছবিইআরডি‘র এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) অনুবিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) পিয়ার মোহাম্মদের কাছে এর কারণ জানতে চাইলে উন্নয়ন প্রকল্পের গতি বাড়াতে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “গত দুই অর্থবছরে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

“এই কারণে এবার আমরা প্রকল্প বাস্তবায়নে জড়িত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে বাস্তবায়নের গতি কিভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করেছি।

“এসব বৈঠকে আমরা প্রকল্প পরিচালকদের সাথে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন বা অর্থছাড়ে কোনও সমস্যা হলে সাথে সাথে আমাদের জানানোর জন্য বলেছি।”

এসব কারণে এবার অর্থছাড়ে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা এডিবি’র অর্থায়নে চলমান বেশ কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে বৈঠকে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করেছি এবং অর্থছাড়ও বাড়ানো হয়েছে।

চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তা খাতে অর্থছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেন পিয়ার মোহাম্মদ।

২০২১-২২ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় বৈদেশিক সম্পদের খাত থেকে ৮৮ হাজার কোটি টাকা গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।

ফাইল ছবিফাইল ছবিতবে এ মাসের শুরুতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় তা সংশোধন করে ৭০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। সে হিসাবে এ অর্থবছরে ৮০০ কোটি ডলারের বেশি বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
দাতাদের কাছ থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে নতুন করে ২২ শতাংশ বেশি প্রতিশ্রুতি আদায় হয়েছে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দাতাদের কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ৪৮৪ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।

জুলাই থকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাওয় এই প্রতিশ্রুতি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৮৮ কোটি ২০ লাখ ডলার বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে ৩৯৬ কোটি ৩২ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায় হয়েছিল।

এদিকে চলতি অর্থব্ছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে পুঞ্জীভূত পাওনা থেকে দাতাদের মোট ১৩৩ কোটি ৫১ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার ৪১২ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরের একই সময়ে পরিশোধ করা হয় ১১৮ কোটি ৭৪ লাখ ডলার বা ১০ হাজার ৫৪ কোটি টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *